পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

: Q মোহন অমনিবাস করিয়া জুলিয়া উঠিয়া তাহার চক্ষু অশ্রুসিক্ত করিয়া দিল। তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া চিন্তা করিলেন, এই সব বক্ষ-রক্ত অপেক্ষ প্রিয় বস্তুসমূহকে হারাইতে হইবে! এরূপ চিন্তা কুমারে পক্ষে অসম্ভব। তিনি দ্রুত হস্তে সিন্দুক তালা বন্ধ করিয়া কক্ষময় ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। তাহাকে দেখিয়া মনে হয়, যেন একটা জীবন্ত যক ধনরাজি আগুলিয়া অতৃপ্তিতে অস্থির হইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে! কিছু সময় এইরূপে ঘুরিয়া বেড়াইয়া কুমার ভূগর্ভস্থ কক্ষে সুবৃহৎ তালা-বন্ধ করিয়া উপরে উঠিয়া আসিলেন। সেদিন তাহার আহারে তৃপ্তি রহিল না। তিনি কোনো রকমে সামান্য কিছু আহার করিয়া ড্রইংরুমে পুলিস-সুপারের অপেক্ষায় বসিয়া রহিলেন। তিনি ভাবিতে লাগিলেন, আজ হইতে এক সপ্তাহ পরে শুক্রবার রাত্রিতে দসু মোহন র্তাহার বহু পবিত্র স্মৃতি-মণ্ডিত বহু পুরুষানুক্রমে সঞ্চিত অমূল্য ধনরাজি লুণ্ঠন করিবে। এই চিন্তা তাহাকে উন্মাদ করিয়া তুলিল। অপরাহু ৪টার সময় পুলিস সুপার মিঃ ব্রাইট আগমন করিলেন। তিনি ড্রইংরুমে প্রবেশ করিয়া বসিবার পূর্বেই কুমারের হাতে একখানি টেলিগ্রাফের ফরম্ দিয়া কহিলেন, “এই দেখুন, আমি যা বলেছিলাম, সত্য কিনা!” - কুমার নিত্যবিক্রম আগ্রহ সহকারে তারটি পাঠ করিয়া দেখিলেন, তাহাতে লেখা আছে “দসু মোহন বিশেষ পাহারাধীনে জেলে আবদ্ধ আছে—বাহিরে পত্র লিখিবার বা পাঠাইবা কোন অধিকার নাই।” - পুলিস-সুপারের হাস্যময় মুখের দিকে চাহিয়া কুমার কহিলেন, “তবে এই পত্র কে লিখেছে? এই হস্তাক্ষর কি দসু মোহনের নয়?” পুলিস-সুপার পুনরায় পত্ৰখানি পরীক্ষা করিয়া কহিলেন, “যদিও এই লেখা মোহনের বোলেই আমার মনে হচ্ছে, তা হলেও নকল করা চলে না কী? এমনও হতে পারে, অন্য কোন বদমাশ আপনাকে ভয় দেখাবার জন্য হস্তাক্ষর নকল কোরে পত্র দিয়েছে। যাই হোক, আমি পত্ৰখানা হস্তাক্ষর-বিশেষজ্ঞের নিকট পাঠিয়ে দেখি, সত্য এটা কি নকল! পুলিস-সুপার নানারূপে কুমারকে আশ্বাস দিয়া মোহনের পত্ৰখানি লইয়া চলিয়া গেলেন দসু মোহনের মত, তাহা হইলেও এ-পত্র তাহার দ্বারা লিখিত হয় নাই।” পুলিস-সুপারের যেটুকু সন্দেহ ছিল, তাহাও নিঃশেষে দুরইইয়া গেল। তিনি মান মুখে উপবিষ্ট কুমার নিত্যবিক্রমের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “আপনাকে কোন দুষ্ট লোক মিছামিছি ভয় দেখিয়েছে। সুতরাং এ বিষয় নিয়ে আর মাথা ঘামাবার প্রয়োজ নেই। কারণ দসু মোহন কারাগারে যেরূপ প্রহরী-বেষ্টিত হয়ে আছে, তা’র পক্ষে এ : জাদুকর হওয়া অসম্ভব ব্যাপার তো নিশ্চয়ই, উপরন্তু এই ব্যাপার নিয়ে কোন প্রতিরোধব্যবস্থা করা একেবারে বাতুলের কাজ হবে। আপনি নিশ্চিন্ত মনে নিদ্রা যান! কিছুই না, দেখবেন!” পুলিস-সুপারের অফিস হইতে নিরাশ হইয়া প্রত্যাবর্তন করিয়া কুমার নানা মনকে প্রবোধ দিতে লাগিলেন। তিনি ভাবিলেন, যে-লোক ইংরাজের সুরক্ষিত কারাগা:ে আছে, সে-লোকের পক্ষে এতটা পথ আসিয়া চুরি করিয়া যাওয়া অসম্ভব বলিয়াই বো