পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন ৷ > > 。 হয়। যে ব্যক্তি অদ্য পর্যন্ত সুরক্ষিত জেলে পাহারাধীনে আবদ্ধ রহিয়াছে, তাহার পক্ষে এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করা অসম্ভব নহে কী ? এইরূপ সম্ভব অসম্ভব চিন্তা করিয়াও কুমার মনের শান্তি ফিরিয়া পাইলেন না! চতুর্থ দিবসে তিনি যখন সংবাদ পত্র পাঠ করিতেছিলেন, তখন একটি সংবাদ দেখিয়া আনন্দে উত্তেজনায় লাফাইয়া উঠিলেন। । ‘ভুবনেশ্বর গেজেট’ পত্রিকায় নিম্নলিখিত সংবাদটি বাহির হইয়াছিলঃ– “সুপ্রসিদ্ধ চীফ ডিটেকটিভ মিঃ বেকার তিন সপ্তাহের ছুটি উপভোগ করিবার জন্য ভুবনেশ্বরে আসিয়াছেন। তিনি মৎস শিকারে উৎসাহী বলিয়া ভুবনেশ্বরের ঝিল ও হ্রদের আকর্ষণে আমাদের পুরাতন শহরকে সম্মানিত করিয়াছেন। আমরা তাহাকে সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করিতেছি। - মিঃ বেকার সুপ্রসিদ্ধ দসু মোহনকে রেঙ্গুনে গ্রেফতার করিয়া যে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন, তেমন সম্মান অনেকের পক্ষেই হিংসার বস্তু। তাহার অবসর আনন্দময় হউক, এই আমরা প্রার্থনা করিতেছি।” বৃদ্ধ কুমারের মুখ আলোকিত হইয়া উঠিল। তিনি সম্মুখের টেবিলের উপর চপেটাঘাত দিয়াছেন। জয় ভগবান! আর আমার মোহনের জন্য চিত্তা নাই।” কুমার সেদিন নিয়মিত সময়ের পূর্বেই আহার সমাধা করিয়া আপন মোটরে ভুবনেশ্বর অভিমুখে যাত্রা করিলেন। ভুবনেশ্বরে উপস্থিত হইয়া তিনি প্রথমে ভুবনেশ্বর গেজেট’ পত্রিকা আফিসে গমন করিয়া যে রিপোর্টার মিঃ বেকারের সংবাদ ছাপিয়াছিলেন, তাহার সহিত দেখা করিয়া মিঃ বেকারের ঠিকানা জানিতে চাহিলেন। রিপোর্টার কহিলেন, “মিঃ বেকারের কথা জিজ্ঞাসা করছেন? সোজা চলে যান। প্রথমেই যে “বুড়ী হ্রদ পাবেন, তা’র তীরে একটা গাছের তলায় খাকী হাফ প্যান্ট ও টুপি মাথায় বুড়ো বেকার মাছ ধরছেন।” কুমার সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, “আপনারা তার খবর পেলেন কি কোরে?” রিপোর্টার বিস্ময় প্রকাশ করিয়া কহিলেন, “আরে মশায়, কাগজের রিপোর্টারদের অসাধ্য কর্ম কিছু আছেন কী? কাল যখন ঐ হ্রদের ধার দিয়ে আসছিলুম, দেখি একজন সাহেব মাছ ধরছেন। আমি নিঃশব্দে তার পিছনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি, ছিপের বাটের ওপর পরিষ্কার অক্ষরে লেখা রয়েছে ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টর বেকার আর যায় কোথায়! আলাপ করতে চাইলুম, কিন্তু বুড়ো কম কথা বলেন, মশায় বললেন, আমি এখানে মাত্র তিন সপ্তাহের ছুটিতে অবসর-বিনোদনে এসেছি, এ সময় অফিস সংক্রান্ত কিংবা দসু্যু মোহন সংক্রান্ত কোন প্রশ্নে সময় নষ্ট করবার ইচ্ছা আমার নেই। আপনার পথ দেখুন আপনি। ভারী বদমেজাজী লোক মশায়। কুমার নিত্যবিক্রম ভাবিলেন, ‘র্তার মত বিখ্যাত লোক এইরূপ একটি কাগজের একজন নগণ্য রিপোর্টারের সঙ্গে আলাপ করলেই আশ্চর্যের বিষয় হতো। তিনি মৌখিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করিয়া রিপোর্টার-নির্দেশিত পথে মোটর চালাইবার আদেশ দিলেন এবং অল্প সময় পরে “বুড়ী হ্রদের ধারে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, সত্য সত্যই মিঃ বেকার একটা গাছের তলায় উপবেশন করিয়া ফাতনার দিকে চাহিয়া ছিপ ফেলিয়া বসিয়া আছেন। । • _ਤਾਰਾਂ