পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন > > a মনোমত কোরে অদল-বদল করিয়েছি। কিন্তু কোন সুড়ঙ্গ পথ আছে কি নেই, এমন কোন কথা বাড়ীর পূর্ব-মালিকও আমার নিকট বলেননি।” “তবেই একজন পুলিস-প্রহরীর ভিতরে থাকা একান্ত প্রয়োজন।” মিঃ বেকার একজন প্রহরীকে বলিলেন, “হুদা, তুমি থাকবে ভিতরে, কিন্তু খুব সাবধান। একদম ঘুমুতে পারবে না, সারাক্ষণ জেগে থেকে পাহারা দেবে—বুঝেছ?” প্রহরী ঘোৎ করিয়া উঠিল। মিঃ বেকার তাহাকে ভিতরে একটা টুলের উপর বসাইয়া পুনরায় কহিলেন, “খুব সাবধান! দসু মোহন যে সে ব্যক্তি নয়! যে কোন লোককে দেখবে, অমনি গুলি করবে। আর বঁাশী বাজিয়ে আমাকে জানাবে।” প্রহরী সেলাম করিয়া ঘাড় নাড়িয়া সম্মতি জানাইল। . মিঃ বেকার কুমার ও অন্য বৃষস্কন্ধ প্রহরীর সহিত বাহিরে আসিয়া লৌহদ্বারে চাবি লাগাইয়া দিলেন ও চাবি কুমারের হাতে অপর্ণ করিয়া দ্বিতীয় প্রহরীকেও পূর্বরূপ উপদেশ দিয়া দ্বারের বাহিরে বসাইয়া কহিলেন, “এইবার চলুন। আমাদের থাকবার উপযুক্ত স্থান পছন্দ করি।” মিঃ বেকার ড্রইংরুমের বাহিরে বড় ফটকের পাশ্বে একটি ছোট্ট ঘর দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ ঘরে কে থাকে?” - কুমার কহিলেন, “আমার প্রহরী থাকে। কিন্তু আজ তাদের আপনার আদেশ মত ছুটি দিয়েছি। তারা বাড়ীর পশ্চিম দিকের ভূত্য-মহলে আছে। মিঃ বেকার তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে কক্ষটি পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন, কক্ষের প্রায় অর্ধেক স্থান কতকগুলি অব্যবহৃত চেয়ারে পরিপূর্ণ। তিনি কয়েকটা চেয়ার দুই সারিতে সাজাইয়া মৃদু হাস্যমুখে কহিলেন, “আসুন, আপনি আজ এই শয্যায়ে শুয়ে পড়ুন। কিছু ভয় নেই আপনার। যদিও আমি জানি, কিছুই ঘটবে না, মাঝখান থেকে আপনার কতকগুলো টাকা জলে গেল!” কুমার সাহেব উত্তেজনা ও শঙ্কায় ক্লান্ত হইয়াছিলেন, তবু শয়ন না করিয়া চেয়ারের উপর সোজা ভাবে উপবেশন করিয়া কহিলেন, “দস্যকে বিশ্বাস নেই, মিঃ বেকার।” “না, নেই। বিশেষ কোরে দসু মোহনের মত অসাধারণ দসুকে।” মিঃ রেকর দ্বিতীয় সারিতে লম্বা হইয়া শয়ন করিয়া কহিলেন, “আমি এখন সময়ে সময়ে ভাবি, রেঙ্গুনে সে আমাকে নিজ ইচ্ছায় ধরা দিয়েছিল কি না! আপনি বসে রইলেন কেন? মিছে রাত জেগে কষ্ট পাবেন, শুয়ে পড়ুন।” (9 কুমার কহিলেন, “যুম আজ আর আমার কাছে আসবে না, মিঃ বেকার! তা’র চেয়ে সে চেষ্টা না কোরে, আমরা গল্প কোরে রাতটুকু কাটিয়ে দিই আসুন। তাতে লাভ ভিন্ন লোকসান হবে না।” “না, হবে না। কিন্তু আমি একটু ঘুমিয়ে নিই, সাহেব। আমার এই কাজে বৃদ্ধ দশা হ’ল! আমি বুঝি, কি ঘটবে, আর কি ঘটবে না! এক্ষেত্রে আপনাকে আমি এইটুকু আশ্বাস দিচ্ছি যে, কিছুই ঘটবে না!” মিঃ বেকার মৃদু হাস্য করিলেন। কুমার সাহেব নীরবে কান খাড়া করিয়া প্রহরীদের পাহারা দিবার ক্ষুদ্র ছিদ্রের মধ্য দিয়া বাড়ীর বাহিরে ঘন অন্ধকারের দিকে চাহিয়া রহিলেন।