পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ Հ8 মোহন অমনিবাস i বিশেষ বন্ধুত্ব হয়েছিল। আমার নিশ্চিত ধারণা আছে, যদি মোহন নিজেকে বাঁচিয়ে এই চুরি সম্বন্ধে কোন সংবাদ দিতে সক্ষম থাকে, তবে নিশ্চয়ই তা দিতে অস্বীকার করবে না। তা’ হ’লে এখান থেকে পুরী ছোটার অনাবশ্যক কষ্ট থেকেও আমি রেহাই পাবো। মিঃ বেকার কহিলেন। i o: | (بالا) সেদিন বেলা ১২টার সময় মিঃ বেকার প্রেসিডেন্সি জেলে দসু মোহনের সেলে উপস্থিত হইলেন। মোহন তাহার জেলের বিছানার উপর শয়ন করিয়াছিল; বেকার সাহেবকে দেখিয়া মাথা তুলিয়া বিস্মিত কণ্ঠে হাসিয়া কহিল, “এ-কী? এ যে কল্পনার অতীত ব্যাপার। প্রিয় বন্ধু বেকার যে এখানে ?” F - মিঃ বেকার হাস্য মুখে কহিলেন, “হা স্বয়ং।” মোহন হাস্য করিয়া কহিল, “আমি নিজের ইচ্ছায় এসে অনেক কিছুই প্রত্যাশা করি, কিন্তু আপনাকে আবাহন করতে পারবো, এর চেয়ে কল্পনাতীত ও আনন্দের বিষয় আর কিছুই নেই আমার।” “তুমি অত্যন্ত বিনয়ী।” মিঃ বেকার হাসিয়া কহিলেন। মোহন বাধা দিয়া কহিল, “না, না, বন্ধু না। আদৌ না। আপনাকে আমি বিশেষ শ্রদ্ধা করি, মিঃ বেকার!” “তোমার কথা শুনে আমার গর্ব হচ্ছে, মোহন।” মিঃ বেকার কহিলেন। মোহন মৃদু হাসিয়া কহিল, “আমি শত সহস্র বার বলেছি, আমাদের মিঃ বেকারের মত সুযোগ্য ডিটেকটিভ ভারতে আর দুটি নেই। ওঁর সঙ্গে তুলনা করতে পারা যায়, একমাত্র বিলাতের শার্লক হোমসকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মিঃ বেকার, আমি আপনাকে এই টুলটা ছাড়া কিছুই বসবার জন্য দিতে পারি না। একটু কষ্ট করে এটাতেই বসুন।” মিঃ বেকার মৃদু হাসিয়া টুলের উপর উপবেশন করিলেন। মোহন বলিতে লাগিল, “আমি জেলের ওয়ার্ডার আর প্রহরীদের গভীর মুখ দেখে বিতৃষ্ণায় ভরে উঠেছি। আজ কার মুখ দেখে উঠেছিলাম জানি না যে, আপনার মুখ দর্শনের সৌভাগ্য আমার হ’ল। আমি তো ঐ সব ছুচে স্পাইদের জ্বালায় উত্যক্ত হয়ে উঠেছি। তারা দিনে দশবার আমার ঘরে ডুকে চারদিক অনুসন্ধান করে, পকেট হাতড়ায়, বিছানা তুলে দেখে; সবাই-এর ভয়, যেন আমি পালাবার মতলব আটছি। আচ্ছা, আপনি বলতে পারেন, গভর্নমেন্ট আমার ওপর এতটা নেক-নজর রেখেছেন কেন ?” - মিঃ বেকার মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “গভর্নমেন্ট ঠিক কাজই করেছেন।” - মোহন মাথা নাড়িয়া কহিল, “না, না, ঠিক কাজ নয় এটা। আমাকে নিরালা, নিভৃত, জীবন যাপন করতে দেওয়াই আপনার গভর্নমেন্টের উচিত কাজ, মিঃ বেকার।” - মিঃ বেকার মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “পরের পয়সার ওপর নবাবী করতে দেওয়া, মোহন?” মোহন পুলকিত স্বরে কহিল, “ঠিক বলেছেন! পরের পয়সায় নবাবী করায় এত আনন্দ আছে, আর এত সহজ ব্যাপার যে কি বলবো! যাক ও সব কথা! আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে, আপনার তাড়া আছে। কিন্তু কি জন্য আপনার শুভাগমন হয়েছে মিঃ বেকার ?”