পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন Տ Հ (t মিঃ বেকার কহিলেন, “কুমার নিত্যবিক্রমের ঘটনা সম্বন্ধে জানতে এসেছি, মোহন!” মোহন ভুকুঞ্চিত করিয়া চিন্তা করিতে করিতে কহিল, “নিত্যবিক্ৰম! নিত্যবিক্রম! হাঁ । হয়েছে। বাঙালার এক স্বাধীন রাজ-বংশের পরাধীন শেষ প্রদীপ লৌহ সিন্দুকের মণিমুক্তা, গজদন্ত, ড্রইংরুম সেট, সোনা ও রৌপ্য নির্মিত ছোট আলমারী! হা হা মনে পড়েছে। এইসব তুচ্ছ জিনিস মনেও থাকে না ছাই! আমার মাথা এর চেয়ে বড় বড় জিনিস নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে।” মিঃ বেকার চক্ষু কপালে তুলিয়া কহিলেন, “তুচ্ছ জিনিস।” “তা ছাড়া আর কি বলবো, মিঃ বেকার? যাই হোক, আপনি যখন এই কেস নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন, তখন বলুন, আর কি জানতে চান আপনি?” মিঃ বেকার কহিলেন, “আমরা কতদূর অগ্রসর হয়েছি এই কেসে, বলবার কি প্রয়োজন আছে, মোহন ?” “না, না, আপনার কষ্ট করবার প্রয়োজন নেই। আজকার সংবাদপত্রে আমি সব পাঠ করেছি। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, কেসের কিনারা আপনারা কিছুই আজ পর্যন্ত করতে পারেন নি।” মৃদু হাসিয়া মোহন কহিল। মিঃ বেকার কহিলেন, “আর সেই জন্যই তোমার ওপর নির্ভর কোরে আমি এখানে এসেছি, মোহন!” “আমি আপনার অনুগত ভৃত্য।” মোহন সবিনয়ে কহিল। “প্রথমেই জানতে চাই, এই ব্যাপার কি তোমার দ্বারাই সংঘটিত হয়েছে, মোহন ?” মিঃ বেকার প্রশ্ন করিলেন। “গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত।” হাসিতে হাসিতে মোহন কহিল। মিঃ বেকার সবিস্ময়ে কহিলে, “রেজেস্ত্রী চিঠি থেকে টেলিগ্রাম পর্যন্ত ?” “হ ও-সব আপনার অনুগত ভৃত্যের দ্বারাই প্রেরিত হয়েছিল। ভাল কথা মনে পড়েছে, রসিদগুলো বোধহয় এখানেই কোথাও আছে।” বলিয়া মোহন তাহার বিছানার তলদেশ হইতে দুইখানি পোস্ট অফিসের রসিদ বাহির করিয়া মিঃ বেকারের হাতে দিল। মিঃ বেকার বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া কহিলেন, “এ কী ব্যাপার? আমার ধারণা ছিল, তোমাকে প্রত্যেক ঘন্টায় সার্চ কোরে দেখা হয়। একটু সন্দেহ হলেই তোমারঘর তন্ন তন্ন করে সার্চ করা হয়। তবে এ-সব কি কোরে সম্ভব হয়েছে, মোহন ? স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, তুমি সংবাদপত্র পড়ো, রেজিস্ত্রী পত্র পাঠাও, এসব কি করে হয়, মোহন?” মোহন কপালে করাঘাত করিয়া ব্যঙ্গ স্বরে কহিল, “হায় অদৃষ্ট আপনার অনুচরেরা আমার জামার সেলাই খুলে দেখে, জুতোর সোল খুলে দেখে—আমি কিছু লুকিয়ে রেখেছি কি না! কিন্তু ওরা এমন নিবোধ, একবারও ভাবে না যে, মোহন এত কাচা ছেলে নয় যে ঐসব পুরানো পদ্ধতি অবলম্বন কোরে এখানে বাস করছে?” মিঃ বেকার সবিস্ময়ে কহিলেন, “কি অদ্ভুত লোক তুমি, মোহন? এখন তোমার গল্প । বলো শুনি।” মোহন গভীর মুখে কহিল, “ধীরে বন্ধু, ধীরে। আমি আমার সব গোপন কথা বোলে ফেলি, আর আপনি আমার সব পথ বন্ধ কোরে দেবেন, তা কি আমার কাছে প্রত্যাশা করেন আপনি ?” ~ , \ –