পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ Հbr মোহন অমনিবাস আপনার জন্যই কুমারের অধিকাংশ সম্পদ লুষ্ঠিত হয়েছে। আপনার কর্তব্য হবে আপনাকে গ্রেফতার করা। তা হলে আমার পক্ষে সেটা খুব আনন্দদায়ক প্রতিহিংসা নেওয়া হবে! মিঃ বেকার গ্রেফতার করছেন মিঃ বেকারকে।” মোহন অট্টাহাস্যে ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিল। সে হাসির যেন আর বিরাম নাই, অন্ত নাই। মিঃ বেকার ক্ষুদ্ধ মনে দাঁত দিয়া ঠোট কামড়াইতে লাগিলেন। তিনি ভাবিয়া পাইলেন না, মোহনের ইহাতে হাসিবার কি আছে। এমন সময়ে একজন ওয়ার্ডার ও একটি লোক মোহনের মধ্যাহ্নে ভোজনের আহার্য লইয়া উপস্থিত হইল। বিশেষ অনুগ্রহ করিয়া জেলের কর্তৃপক্ষগণ মোহনের জন্য বাহির হইতে খাবার দেওয়ার অনুমতি দিয়াছিলেন। লোকটি টেবিলের উপর পাত্রগুলি রাখিয়া ওয়ার্ডারের সহিত বাহির হইয়া গেল। মোহন আহারে বসিয়া দু-এক গ্রাস আহার করিয়া কহিল, “অধৈর্য হবেন না, মিঃ বেকার। আপনাকে পুরী যাবার কষ্ট আর পেতে হবে না। আমি আপনাকে এমন একটা সংবাদ দিচ্ছি, যা শুনে আপনার চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। মোহনের বিরুদ্ধে যে কেস কুমার করেছিলেন, তা তিনি তুলে নিচ্ছেন।” মিঃ বেকার বিস্ময়ে চিৎকার করিয়া কহিলেন, “কী?” মোহন শাস্ত কষ্ঠে কহিল, “মকদ্দমা তুলে নেওয়া হচ্ছে।” মিঃ বেকার বিদ্রুপ হাস্যে কহিলেন, “বাজে বোকো না। আমাকে এইমাত্র চীফ চিঠি পাঠিয়েছেন।” মোহন কহিল, “তা’তে কি হ’ল ? আপনার চীফ কি মোহনের ব্যাপার সম্বন্ধে মোহন অপেক্ষা বেশী খবর রাখেন? তবে শুনুন, আপনাকে খুলেই বলি। কিন্তু আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন, মিঃ বেকার। হা, সেই জাল মিঃ বেকার অর্থাৎ আমার সহচর সেখানে কুমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব পাতিয়ে বসেছেন। ফলে কুমার তার সিন্দুকের মধ্যস্থিত বহু শতাব্দীর, বর্তমানে অকেজো মূল্যহীন স্মৃতি-সম্পদগুলির জন্য বেকারের মধ্যে দিয়ে মোহনের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছিলেন। তিনি পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ দিতে প্রস্তুত হয়েছেন। ঐ জিনিসগুলি ফেরত দেওয়া হ’লেই তিনি মোহনের নামে মকদ্দমা তুলে নিতেও স্বীকৃত হয়েছেন। সুতরাং চুরির কোন কথাই ওঠে না। ফলে পুলিসকেও হতাশ হতে হবে।” মিঃ বেকার শুধু বিস্ময়ে চাহিয়া কহিলেন, “কিন্তু এ সব খবর তোমার কাছে এলো কি কোরে?” @ “আমি যে টেলিগ্রামের প্রতীক্ষা করছিলাম, এইমাত্র তাইপেয়েছি।” মোহন হাসিতে হাসিতে কহিল। o “তুমি এইমাত্র টেলিগ্রাম পেয়েছ?” মিঃ বেকার সবিস্ময়ে প্রশ্ন করিলেন। “প্রিয় বন্ধু, এই মুহুর্তে। আচ্ছা আপনার সম্মুখেই আমি পড়ছি—কিন্তু আপনি যদি অনুমতি দেন।” মোহন কহিল। মিঃ বেকার অসন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, “তুমি আমার সঙ্গে বিদ্রুপ করছ, মোহন।” “না বন্ধু, না।” মোহন মৃদু হাস্যে কহিল, “আচ্ছা এক কাজ করুন। আমার জন্য ঐ যে সিদ্ধ ডিমটা দিয়েছে, ওর মাথাটা খুব আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলুন দেখি। তা’ হ’লেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, মোহন গুরুতর বিষয় নিয়ে মিথ্যে দম্ভ করে না বা ঠাট্টাবিদ্রুপও করে না।”