পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 8 মোহন অমনিবাস “তবে এ সময়ে বাড়ী এলে যে, সুদা?” মাধুরী তাহার প্রিয় সম্ভাষণে সুদর্শনের চিত্ত , বেদনায় ভরাইয়া দিল। * } সুদৰ্শন প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়া কহিল, “তুমি মত দিলে কেন, মাধু ?” | মাধুরীর মুখে বিস্ময় মূর্ত হইয়া উঠিল। সে ধীরে স্বরে কহিল, “আমি মত দিলাম কেন, সুদা? আমার মতামতের অপেক্ষায় বুঝি সব কিছু থাকে ?” সুদৰ্শন ধীরে ধীরে কহিল, “না, আমার প্রাণ থাকতে কিছুতে হতে দেবো না, মাধু। মাধুরী বাধা দিয়া কহিল, “চুপ করো, চুপ করো তুমি। আমার বাবা কত সুখী হয়েছেন দেখছ না? তার ঋণ সব পরিশোধ হয়ে যাবে, তার মুখে হাসি ফুটবে, তিনি সুখী হবেন, এর চেয়ে আমার আর কি কাম্য থাকতে পারে, তুমিই বলো সুদা! আমার সুখ, আমার শান্তি কি কখনও হবে, আমার বাবা যদি তাতে সুখী না হন। আমি অনেক ভেবেছি, আর এখন ভাবনা হয় না। আমি এখন দিন গুনছি, সুদা!” সুদৰ্শনের মুখ ব্যথায় কালো হইয়া উঠিল। সে প্রগাঢ় স্বরে ডাকিল, “মাধু!” সুদৰ্শন কহিল, “আমি জীবন থাকতে তোমাকে অন্যের হাতে ছেড়ে দেবো না।” “কেন মিছামিছি একটা তুচ্ছ নারীর জন্য তোমার অমূল্য জীবন নষ্ট করবে, সুদা ? তুমি কি নীলরতন সরকারকে চেনো না? শুনি তো, সে জীবনে বহু খুন করেছে, সে কি আর একটা করতে লজ্জিত হবে, সুদা? ছিঃ ছিঃ! অমন চিন্তা তুমি যদি করো, তবে সত্যি বলছি, আমি আত্মহত্যা করবো।” সুদৰ্শন সহসা বলিয়া ফেলিল, “এমন পাত্রে পড়ার চেয়ে আত্মহত্যা করলেও সুখ আছে, শান্তি আছে, মাধু!” মাধুরী আয়ত চক্ষু দুটি তুলিয়া ক্ষণকাল সুদর্শনের মুখের উপর একাগ্র দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল; পরে ধীরে ধীরে কহিল, “হয়তো তাই করতুম, কিন্তু আমার বাবা বিপদে পড়বেন, পাপিষ্ঠ আমার বাবাকে অকথ্য যন্ত্রণা দেবে, তাই আমি মরবো না, সুদা। আমি যখন শুনলাম যে, আদালতের হাকিমও আমার এই বিবাহ বন্ধ করতে অক্ষম, তখনু আমি মন স্থির করেছি, সুদা!” a So সুদৰ্শন চক্ষু তুলিয়া চাহিল। & * “সুদা, তুমি আর এখানে এসো না। তোমাকে দেখলে আমি দুর্বল হয়ে পড়ি। আমি দুটি হাত জোড় কোরে তোমার কাছে ভিক্ষা চাইছি, আমাকে কথা দাও যে, আর তুমি ; আমার সামনে আসবে না! আমি সহ্য করবো, আমি ভুলবো, আমি বাবার ইচ্ছা পূর্ণ করবো। মিছে তুমি জমিদারের কোপে পড়ে বিপদগ্রস্ত হবে—তুমি কলকাতা যাও। বলো আমার কথা রাখবে, সুদা।” সুদৰ্শন গম্ভীর মুখে কহিল, “না।” “না?” মাধুরী ব্যথাভরা চোখে চাহিল, কহিল, “কিন্তু না কেন, সুদা ? তোমার শক্তি কতটুকু ? তুমি কি শোন নি, পুলিস পর্যন্ত জমিদারকে সাহায্য করবে?” মাধুরী আর্তস্বরে কহিল। সুদৰ্শন নীরবে চিন্তা করিতেছিল। সে একবার চারিদিকে সতর্ক দৃষ্টি বুলাইয়া লইয়া