পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| মোহন অমনিবাস טייסי כי প্রহরী স্তম্ভিত দৃষ্টিতে কিছু সময় চাহিয়া রহিল। সে মোহনের আপাদমস্তক চক্ষু বুলাইয়া পরীক্ষা করিল এবং একটিও কথা না বলিয়া ফটকের ঘণ্টা বাজাইল। সঙ্গে সঙ্গে লৌহ-ফটক উন্মুক্ত হইয়া গেল। মোহন ভিতরে প্রবেশ করিল এবং বরাবর জেল অফিসে উপস্থিত হইল। কয়েক মিনিট পরে জেলের সুপার কৃত্রিম ক্রোধে চিৎকার করিতে করিতে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “এ সব চালাকি, মোহন ?” - মোহন মৃদু হাসিয়া কহিল, “থামুন স্যার, ওসব মিথ্যে রাগ আমার কাছে দেখাতে না আপনাকে। আমি সব জানি। বেশ সুন্দর ফাদ পেতেছিলেন যা হোক। আপনাদের বুদ্ধি আছে, তা আমায় স্বীকার করতেই হবে। প্রথমতঃ আদালত থেকে আমাকে এক আনা; দ্বিতীয়তঃ পথের মাঝে গাড়ী ফেলে গোলমাল সৃষ্টি করা, এ সব কি আমার দৃষ্টি এড়াতে পারে ভাবেন? তারপর কুড়িজন ডিটেকটিভ যে আমার পিছনের পাগলা কুকুরের মত, কেউ বা হেঁটে কেউ বা সাইকেলে মোটরে ধাওয়া করছিল, তাও কি আমি দেখিনি ভাবেন? তারা ভেবেছিল, আমি এমনি নিবোধ যে পালাতে চেষ্টা করবো আর তারা গুলি চালিয়ে আমার দফা রফা কোরে দেব। বাঃ গভর্নমেন্টের এইসব উচ্চ বেতনের কর্মচারীদের কি সুন্দর বুদ্ধি।” - সুপার অতি কষ্টে হাস্য সম্বরণ করিয়া গম্ভীর মুখে চাহিয়া রহিলেন। মোহন পুনরায় কহিল, “শুনুন স্যার, আপনার শিকারী কুকুরদের বোলে দেবেন, এমন কোরে যেন আমাকে তারা আর বিরক্ত না করে। আমি যখন পালাবার ইচ্ছে করবো, তখন কারও সাহায্য আমার প্রয়োজন হবে না।” (>s) দুই দিবস পরে মাদ্রাজের ও কলিকাতার সমস্ত সংবাদপত্রে দসু্য মোহনের পলায়ন কাহিনী সবিস্তারে প্রকাশিত হইতে লাগিল! মোহনের নারী-বন্ধুর পত্র সিগারের ভিতর দিয়া প্রেরিত হওয়ার কাহিনী, তাহার পর আদালত হইতে তাহাকে একাকী লইয়া আসা, পথে ঘোড়া ও গাড়ী পড়িয়া পথ রোধ, মোহনের হোটেলে চা খাওয়া, অবশেষে জেলে ফেরত আসার কাহিনী সবিস্তারে দিনের পর দিন প্রকাশিত হইতে লাগিল। ৫০%। মোহনের সহকারীদের দ্বারা জেলের ভ্যানের দ্বার কাটিয়া রাখা ইত্যাদি ঘটনা পাঠ নূতন করিয়া দাগ কাটিতে লাগিল। XX ইহার ফল এই হইল যে, অদূর ভবিষ্যতে মোহন যে জেল হইতে পলায়ন করিবে, সে বিষয়ে কাহারও বিন্দুমাত্র সন্দেহ রহিল না। মোহনের তথাকথিত পলায়নের পরদিন আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ লিঙ্গম যখন জিজ্ঞাসা করিলেন, “মোহন, তোমার গত কল্যকার কাজের কৈফিয়ত আমাকে দাও।” তখন মোহন দীপ্ত মুখে বলিয়াছিল, “দেখুন স্যার, গতকল্যকার অভিনয়ে আমার ভবিষ্যৎ পলায়নের রিহার্সাল দেওয়া হ’ল, এইভাবেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন।” - ম্যাজিষ্ট্রেট বলিলেন, “আমি তোমার কথা এক বর্ণও বুঝতে পারলুম না।” |