পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጏ 8 8 মোহন অমনিবাস ঢুলু ঢুলু চক্ষে বিচারকের দিকে চাহিয়া বলিল, সে অনেকক্ষণ ঘুমাইতে পায় নাই, আজ যেন তাহাকে শীঘ্র শীঘ্ৰ জেলে পাঠাইয়া দেওয়া হয়, এই তাহার সনিবন্ধ অনুরোধ। আদালত গৃহের জনতা উচ্চ হাস্য-ধ্বনিতে ভাঙ্গিয়া পড়িল এবং বিচারক শুনানী অন্য দিনের জন্য স্থগিত রাখিয়া আদালত বন্ধ করিয়া দিলেন। জনতা দসু মোহনের জয়ধ্বনি করিতে করিতে বাহির হইয়া পড়িল। (SS) দসু মোহনের প্রত্যাশিত পলায়ন-কাহিনীতে সারা ভারতবর্ষে উচ্চ প্রশংসা-কলরব উখিত হইল। সংবাদপত্রসমূহে এই অত্যাশ্চর্য কাহিনী অবলম্বন করিয়া সত্য, অর্ধসত্য, কল্পিত লোমহর্ষণকারী বিবরণসমূহ প্রকাশিত হইতে লাগিল। সর্ব সময়ে সর্ব স্থানে, সর্ব লোকের মুখে দসু মোহনের অলৌকিক অপরূপ কাহিনী নানা শাখা-প্রশাখায় পল্পবিত হইয়া বৃহৎ মহীরুহে পরিণত হইল। জনসাধারণ যখন দস্য মোহনের বীরত্ব কাহিনীর স্বপ্নে মশগুল, তখন মাদ্রাজের জেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিস কর্তৃপক্ষ তাহদের সমস্ত শক্তি লইয়া এই অভিনব ব্যাপারের সমাধানে বাপাইয়া পড়িলেন। অনসুন্ধানে প্রকাশ পাইল, দুই মাস আগে নীলকলম দে নামে একটা লোককে পুলিস কোর্টের পাঁচ আইন ভঙ্গ করার জন্য আট আনা জরিমানা করা হইয়াছিল। লোকটা প্রথম দিনে জরিমানা না দিয়া একরাত্রি পুলিস হাজতে বাস করে। কিন্তু পরদিন অপরাহুে জরিমানা প্রদান করায় বেলা দুই ঘটিকার সময় তাহাকে ছাড়িয়া দেওয়া হয়। এই বিবরণী পুলিস অফিসের রেকর্ড হইতে পাওয়া গেল। আরও প্রকাশ পাইল যে, ঐদিন বেলা দুই ঘটিকার অব্যবহিত পরেই মোহনকে শেষবারের মত পরীক্ষা করিয়া জেল-ভ্যানে করিয়া পুলিস অফিস হইতে আনয়ন করা হয় এবং সেই অবধি সে নিম্ন সেলে স্থানান্তরিত হইয়াছে। কিন্তু ইহা কি সম্ভব যে, উক্ত দিনে পুলিস অফিসে যে ওয়ার্ডাররা মোহনের সহিত গমন করিয়াছিল, তাহারা নীলকমলের সহিত মোহনের সাদৃশ্যের জন্য এই নিদারুণ ভুল করিয়াছে? তাহারা কি প্রতারিত হইয়াছে? ইহাও কি সম্ভব হইতে পারে ওয়ার্ডারগণের দীর্ঘ বৎসরের আনুগত্যে এরূপ ভুল কখনও সম্ভব হইতে পারে কি? এইসব চিন্তা কর্তৃপক্ষের মন আলোড়িত করিয়া তুলিল। (് কর্তৃপক্ষ নানা পথে অনুসন্ধান করিতে লাগিল। মোহনের ভীষণ শত্রু মিঃ বেকার দিবারাত্র নানা সমস্যার ভিতর দিয়া অগ্রসর হইতে লাগিলেন তিনি হিন্দু পত্রিকার সম্পাদকের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া একজন লোক যে তাহাকে একখানি কার্ড দিয়া গিয়াছিল, সেই কার্ডটি দেখিতে চাহিলেন। সম্পাদক মহাশয় মিঃ বেকারকে সমাদরে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইয়া টেবিলের ড্রয়ার মিঃ বেকার দেখিলেন, কার্ডে লেখা আছে—“মোহন সর্বদা তাহার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করে।” মিঃ বেকারের মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি অস্পট কণ্ঠে কহিলেন, “আমি স্বীকার করছি, তা’ করে।” সম্পাদক মহাশয় কহিলেন, “কি কুক্ষণেই আপনাদের পরামর্শে দসু মোহনের নামে