পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ֆ BՏ) মোহন অমনিবাস নিশ্চয়ই জানতে পেরেছিল, হয়তো আপনি.ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে চাহিয়া মিঃ বেকার বলিতে লাগিলেন, “হয়তো আপনি কোন বিরক্তিকর মুহুর্তে এমন কথা মোহনের সাক্ষাতে আপনাদের নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের বলেছিলেন যে, আগামী শনিবার দিন জেরা শেষ কোরে সোমবার রিপোর্ট দাখিল করবেন! হয়তো তা’ শুনে শুক্রবার দিন নীলকমলকে দিয়ে এমন একটা তুচ্ছ অপরাধ সংগঠন করায়, যা’র দরুন সামান্য কিছু জরিমানা হতে পারে।” মিঃ বেকার একটু দম লইয়া বলিতে লাগিলেন, “এখানে লক্ষ্য করিবার বিষয় যে, নীলকমলের আট আনা জরিমানা হয়। জরিমানা দেবার অর্থ তার কাছে থাকা সত্ত্বেও সে শেষ পর্যন্ত হাজত বাস বেছে নেয় এবং পরদিন অপরাহ্লে জরিমানা প্রদান কোরে সে মুক্তি গ্রহণ করে। এইসব আলোচনা কালে আমি মোহনের তীক্ষুদূরদৃষ্টি দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। ওর কাজের এইটুকু বিশেষত্ব এই যে, যদি ওর আয়োজন মতো কোন কিছু একটা কেউ না করে, তবে সব কিছু পণ্ড হয়ে যাবে। আর প্রত্যেকটি পার্ট প্রত্যেকে ঠিকভাবে অভিনয় করলে ঠিক ঘড়ির মত কাটায় কাটায় সফলতা নিয়ে আসবে।” কমিশনারের মুখ দিয়া সহসা বাহির হইল, “এমন একটা লোক যদি সৎপথে চলতো, তাহলে জগতের অনেক উপকার হতো। এখন নীলকমলকে নিয়ে কি করা যায় বলুন, মিঃ বেকার?” মিঃ বেকার কহিলেন, “নীলকমলের অতীত ইতিহাস যেটুকু পাওয়া গেছে, তাতে আমরা শুধু এইটুকু জানতে পারি যে, ও বাঙলার বর্ধমান জেলার একটা গণ্ডগ্রামের লোক। অল্প বয়সে আত্মীয় স্বজন-হারা হয়ে ভবঘুরে জীবন যাপন কোরে ভারতের নানাস্থানে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন কোরে ঘুরে বেড়িয়েছে। গত তিন বৎসরের মধ্যে নীলকমল যে কোথায় ছিল, কি কোরে জীবিকা অর্জন করেছে, কিছুই জানা যায়নি।” মিঃ লিঙ্গম কহিলেন, “স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, সে মোহনের আশ্রয় পেয়েছিল। আর তা যদি সত্য হয়, তবে নীলকমল যে মোহনের একজন সহকারী, তাতে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ থাকে না।” - মিঃ বেকার কহিলেন, “তা আনুমানিক সত্য। কিন্তু অনুমানের উপর নির্ভর কোরে আমরা তাকে সাজাও দিতে পারি না বা অনির্দিষ্টকাল জেলের মধ্যে আটক রাখতে পারি না। পারি কি, স্যার?” co’ কমিশনার চিন্তিত মুখে কহিলেন, “না, পারি না। কিন্তু আমাদের সমস্যা অমীমাংসিত রয়েই যায়। অসম্ভব ক্ষমতাশালী দস মোহন এমন কোন কিছু রেখে যায়নি, যা অনুসরণ কোরে আমরা তার সন্ধান করতে পারি।” No. মিঃ বেকারের মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি কহিলেন, “মোহনের বিশেষত্ব এইটুকু, স্যার। আর একমাত্র ঐ কারণেই তাকে খুঁজে বা’র করবার প্রচেষ্টা আমি ছেড়ে দিয়েছি।” - ম্যাজিষ্ট্রেট লিঙ্গম সবিস্ময়ে কহিলেন, “ছেড়ে দিয়েছেন ?” মিঃ বেকার কহিলেন, “তা ছাড়া সময় বাঁচবার পস্থা আমার জানা নেই। হিন্দুর সম্পাদককে দেওয়া কার্ডখানার তারিখ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে, মোহন মাত্র চারদিন পূর্বেও এই শহরে ছিল। একমাত্র ভগবানই বলতে পারেন, এখনও সে এই মাদ্রাজ শহরে আছে কি না। খুব সম্ভবতঃ আছে। কিন্তু কোথায় আছে, কি বেশে আছে, তা’ অনুমান করা