পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন E নেই, পরের গাড়ী পাঁচ মিনিট পরে—তাতে আসুন।” বলিয়া চিৎকার করিয়া উঠিল ও বাস ছাড়িয়া দিল। সম্মুখের একটা চায়ের দোকান। নীলকমল দু এক মিনিট একটা বাস ইনস্পেক্টরের সঙ্গে কথা কহিয়া চা’ এর দোকানে প্রবেশ করিল। মিঃ বেকার উক্ত বাস ইনস্পেক্টারের নিকট গিয়া বিনা ভূমিকায় আপন পরিচয় বস্তুটি দেখাইলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, “ও লোকটা কি জিজ্ঞাসা করলো ?” বাস ইনস্পেক্টর কহিল, “জর্জ টাউনের বাস কমিনিট পরে ছাড়বে এবং এক কাপ চা খাবার সময় আছে কি না, জানতে চাইলো।” “ধন্যবাদ!” বলিয়া মিঃ বেকার তাঁহার সহকারী দুইজনকে নিকটে আসিতে আহ্বান করিলেন এবং বলিলেন, “শীঘ্ৰ দুখান ট্যাক্সি ভাড়া করো। আমার সঙ্গে তোমাদের মধ্যে একজন একটা ট্যাক্সিতে, আর একজন অন্য ট্যাক্সিতে এর পিছু ধাওয়া করতে হবে। যাও, শীগ্‌গীর বন্দোবস্ত করো।” যথা আদেশ বন্দোবস্ত হইল। কিন্তু দশ মিনিট অতিবাহিত হইয়া গেল, তবু নীলকমল ফিরিল না দেখিয়া মিঃ বেকার সন্দিহান হইয়া চা-এর দোকানে প্রবেশ করিলেন; দেখিলেন, নীলকমল নাই এবং দোকানের অন্যদিকেও একটা দরজা আছে—দেখিয়া তিনি ক্রোধে বিস্ময়ে আত্মহারা হইলেন ও দ্রুতপদে অন্য দ্বার দিয়া বাহির হইয়া চারিদিকে চাহিতে লাগিলেন। কিন্তু নীলকমলকে দেখিতে পাইলেন না। তাহার নিজের উপর অত্যন্ত রাগ হইল। এমন সময়ে দেখিলেন, নীলকমল একটি দ্বিতল বাসের উপর চড়িয়া উত্তর মুখে যাইতেছে। মিঃ বেকার উধ্বশ্বাসে ছুটিয়া ধাবমান বাসে লাফাইয়া উঠিলেন এবং দ্বিতলে উঠিয়া নীলকমলের পিছনের আসনে উপবেশন করিলেন। তখন তাহার মনে হইতে লাগিল, দুই হাতে টানিয়া হতভাগার মাথা ছিড়িয়া ফেলেন। তিনি তাহার সহকারী দুইজন হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িলেন। যাহা হউক, তিনি যে অবশেষে নীলকমলকে পাইয়াছেন, ইহাতেই তিনি সন্তুষ্ট হইয়া নীরবে পশ্চাতে বসিয়া রহিলেন। বাস নানা স্থানে বধিয়া নানা আরোহীকে নামাইয়া এবং নূতন আরোহীকে তুলিয়া ছুটিতেছিল। মিঃ বেকার দেখিলেন, নীলকমল তাহার অভ্যাস মতো ঢুলিতেছে। তাহার মস্তক নিদ্রার আমেজে বুকের উপর ক্ষণে ক্ষণে নামিয়া পড়িতেছিল। এমন একটা নিবোধ নীরেট হতভাগ্যও যে বুদ্ধির-দৌড়ে তাহাকে প্রায় পরাভূত করিতে সক্ষম হইয়াছিল এবং খেলা না আকস্মিক ঘটনা—মিঃ বেকার ভাবিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। নীলকমলের মুখবিবর অর্ধ উন্মুক্ত, তাহার মুখে বোকামির সকল চিহ্ন বিদ্যমান, এমন একটা লোক কি কখনো দসু মোহনের সহকারী হইতে পারে? না, ইহা কখনও সম্ভব হইতে পারে না। তাছাড়া এই গোবেচারা লোকটা যে তাহাকে বুদ্ধির খেলায় পরাভূত করিবে, ইহাও সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য ব্যাপার। সেরেফ দৈব নীলকমলের প্রতি প্রসন্ন হইয়া এইরূপ পরিস্থিতি সম্ভব করিয়াছে। রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে আসিয়া নীলকমল বাস হইতে অবতরণ করিল। বলা বাহুল্য, মিঃ বেকারও তাহার পিছু পিছু অবতরণ করিলেন। কিন্তু জর্জটাউন যাইবে বলিয়া