পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እ Œ C মোহন অমনিবাস এখানে নীলকমল নামিল কেন, এই চিন্তায় মিঃ বেকারের মন বিস্ময়ে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। যাহা হউক তিনি অতি সাবধানে তাহার পিছু লইলেন। নীলকমল ধীরে ধীরে চলিতে লাগিল। সে অবিরত এক রাস্তা হইতে অপর রাস্তায় দক্ষিণ হইতে বামে—এলোমেলো ভাবে চলিতে চলিতে অগ্রসর হইতে লাগিল। মাঝে মাঝে সে মুখ তুলিয়া কাহাকে যেন অনুসন্ধান করিতে লাগিল। তবে কি সে কাহাকেও প্রত্যাশা করিতেছে ? সফলতা নিকটবতী ভাবিয়া মিঃ বেকারের মন উৎফুল্ল হইয়া উঠিল। তিনি দ্বিগুণ উৎসাহে নীলকমলকে অনুধাবন করিতে লাগিলেন। এমনি করিয়া পথ চলিয়া প্রায় এক ঘণ্টা অতিবাহিত হইয়া গেল। অবশেষে নীলকমল সমুদ্রের ধারে উপস্থিত হইল এবং শ্রান্ত ও ক্লাস্ত কলেবরে একটা বেঞ্চির উপর উপবেশন করিল। \ মিঃ বেকার নীলকমলের অদূরে একটা গাছের আড়ালে দণ্ডায়মান থাকিয়া তাহাকে লক্ষ্য করিতে লাগিলেন। দেখিতে দেখিতে অর্ধ ঘণ্টা উত্তীর্ণ হইয়া গেল। নীলকমল উঠিবার নামমাত্র করিল না। মিঃ বেকার চারিদিকে চাহিয়া দেখিলেন, সে সময়ে সমুদ্রের ধার একেবারে জনমানব শূন্য। তিনি অধৈর্য হইয়া উঠিলেন এবং নীলকমলের সহিত আলাপ করিবার উদ্দেশ্যে তাহার পাশ্বে গিয়া উপবেশন করিলেন। মিঃ বেকার তাহার হাতে ছড়ি দিয়া বালুর উপর দাগ কাটিতে কাটিতে সমুদ্রের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “চমৎকার দৃশ্য।” নীলকমল কোন উত্তর দিল না—নীরবে রহিল। সহসা নীলকমল উচ্চ হাস্য বেগে ফাটিয়া পড়িতে লাগিল। শিশুরা যেমন অকারণে হাসিতে হাসিতে লুটাইয়া পড়ে, সেইরূপ লাগিল—যেন সে হাস্যপ্রবাহ কখনও থামিবে না। অন্তহীন হাস্যধারা অবিরাম উচ্চ কল্লোলে প্রবাহিত হইতে লাগিল। মিঃ বেকার চকিত হইয়া উঠিলেন। তাহার কর্ণে এই হাস্যধারা অপরিচিত নহে। তীব্র উত্তেজনায় তাহার মাথার চুল খাড়া হইয়া উঠিল। তিনি দুই হাতের সমস্ত শক্তি দিয়া তীক্ষ দৃষ্টিতে চাহিয়া দেখিতে লাগিলেন। সহসা তিনি বিস্ময়ে হতবাক হইলেন। তিনি দেখিলেন, তিনি যাহাকে দেখিতেছেন, সে নীলকমল নহে, আদালতে দৃষ্ট সেই নির্বোধ, নিরেট লোকটা নহে, তিনি দেখিতেছেন দস্যু মোহনকে! - তিনি সবিস্ময়ে দেখিলেন যে-চক্ষু কোটরগত বলিয়া পূর্বে বোধ হইয়াছিল, এখন আর তাহা নাই, দসু মোহনের হাস্যময় উজ্জ্বল চোখ দুটি চাহিয়া রহিয়াছে। যে মুখের চামড়া লাল ও বিবর্ণ বোধ হইয়াছিল, সেই মুখ অত্যাশ্চর্য জাদু মহিমায় পরিবর্তিত হইয়া দসু্যু মোহনের যৌবন-সুলভ কান্তিভরা সুন্দর মুখ প্রকাশিত হইয়াছে। মুখে এতটুকু পার্থক্য নাই। তিনি সহসা ক্রোধে জুলিয়া উঠিয়া চিৎকার করিয়া উঠিলেন, “দসু মোহন! দসু মোহন।” মিঃ বেকার সুতীব্র ক্রোধে ফাটিয়া পড়িয়া মোহনের উপর লাফাইয়া পড়িয়া তাহার গলা চাপিয়া ধরিলেন। তাঁহার বয়স পঞ্চাশ বৎসর হইলেও শক্তি-সামর্থ্যে তিনি দস্য