পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন 2 of Y মোহনের অপেক্ষা দশ গুণ বেশী শক্তিমান। তিনি চকিতে ভাবিলেন, দসু মোহনকে গ্রেফতার করিতে পারিলে তিনি কিরূপ অসামান্য সুৰ্যশে আমোদিত হইবেন। কিন্তু তাঁহাদের ধস্তাধস্তি শীঘ্রই শেষ হইয়া গেল। দসু মোহন মিঃ বেকারের এই সবেগ আক্রমণে এতটুকু বিচলিত না হইয়া স্থিরভাবে বসিয়া রহিল। সহসা মিঃ বেকার একটা তীব্র আর্তনাদ করিয়া উঠিলেন; তাহার দক্ষিণ হস্ত অবশ হইয়া ঝুলিতে লাগিল। “আপনি যদি কলকাতায় আমার কাছে জিউ-জিৎ সু শেখবার সুযোগ পেতেন, তাহলে আপনি জানতেন, আমার এই সামান্য কৌশলকে জাপানী ভাষায় কি বলে। জাপানীরা এই কৌশলকে বলে, উদি-সি-ঘি’। এক মুহুর্ত বেশী যদি আমি এই কৌশলকে আপনার হাতের ওপর চালাতুম, তাহলে এতক্ষণে আপনার হাতটা ভেঙে যেতো, মিঃ বেকার এবং তা’ হ’লেই আপনার উপযুক্ত শাস্তি হতো। কি আশ্চর্য আপনার মত । একজন পুরাতন বন্ধু—যাকে আমি ভক্তি করি, সম্মান দিই, যার সম্মুখে আমি নিজের ছদ্মবেশ খুলতে সাহস পাই, তার এমন ব্যবহার! সত্যই দুঃখের বিষয় বেকার।” মোহন সহসা বিস্মিত কষ্ঠে কহিল, “এ-কী, এ-কী ব্যাপার, বন্ধু বেকার?” মিঃ বেকার নীরবে বসিয়াছিলেন। তাহার সারা মন আলোড়িত করিয়া এই চিন্তা উদিত হইতেছিল যে, তাহার সাক্ষ্যেই দস্য মোহন এমনভাবে মুক্তি পাইয়াছে। একমাত্র তাঁহারই ভুলের সুযোগে তাহাকেই প্রতারিত করিয়া মোহন কৃতকার্য হইয়াছে। এই পলায়নের কাহিনী র্তাহার সকল সুনাম নষ্ট করিবে।হয়তো তাহার এতদিনের চাকরিও র্তাহাকে হরাইতে হইবে। মিঃ বেকরের দুই চক্ষু উথলিয়া অশ্রুধারা গণ্ড বহিয়া ঝরিয়া পড়িতে লাগিল। মিঃ বেকারের দিকে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া মোহন কহিল, “মাই গড়! আপনি যদি এই ব্যাপারকে এমন দৃষ্টিতে দেখবেন বুঝতে পারতাম, তাহলে আমি আপনার সঙ্গে কথাই বলতাম না। তাছাড়া নীলকমলকে সাজা দেবার কোন সঙ্গত কারণই তো আপনাদের ছিল না, মিঃ বেকার!” তাহলে আদালতে তুমিই নীলকমল, আর এখানে তুমিই মোহন? দু’জনেই এক লোক?” মিঃ বেকার জিজ্ঞাসা করিলেন। “হা আমি, আমি। আর কেউ নয়—সেখানেও আমি, এখানেও আমি।” মোহন মৃদু হাসিয়া কহিল। gó” মিঃ বেকার সবিস্ময়ে কহিলেন, “তাও কি সম্ভব?” ফেঁ বিচারক কি বলেছিলেন শোনেন নি ? যে কোন লোক যদি বছর দশ বারো ধোরে নানা বিদ্যায় সুশিক্ষিত হতে পারে, তবে তার পক্ষে কোন কিছু সাধন করা এতটুকু অসম্ভব ব্যাপার নয়। “কিন্তু তোমার চোখ, তোমার মুখ ?” সবিস্ময়ে মিঃ বেকার জিজ্ঞাসা করিলেন। “আপনি কেন ভুলে যাচ্ছেন যে, দু’বছর আমি বৈজ্ঞানিক স্যার ঘোষের ল্যাবরেটরীতে যে শিক্ষানবিশী করেছিলাম, সে শুধু ছেলেখেলার জন্য নয়। যে লোক একদিন জগদ্বিখ্যাত নাম অর্জন করবে, তা’র পক্ষে নিজের চেহারা একটু বদল করা কিছুমাত্র আশ্চর্যের বিষয় নয়, মিঃ বেকার। আমাদের ভারতবর্ষে এমন সব গাছ-গাছড়া আছে, আমাদের শ্রেষ্ঠ আয়ুৰ্বেদিক গ্রন্থ বেদের এক অংশে যেসব অত্যাশ্চর্য অব্যর্থ সুপরীক্ষিত নির্দেশ আছে, তা