পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা እ Œ Š হবে, সে-বিশ্বাস আমি আদৌ করি না। যখন মেল এলাহাবাদে পৌছাবে, তখন পুলিস নিশ্চয়ই তাকে ধরতে সক্ষম হবে।” মহিলাটি অবজ্ঞাসূচক একটা ধ্বনি কোরে বললেন, “তাকে? পুলিস ধরবে? কখনও ' না আপনি দেখবেন, সে নিশ্চয়ই যেমন কোরে হোক পালিয়ে যাবেই যাবে। যে লোক মাদ্রাজের মত সুরক্ষিত জেল থেকে দন্তপূর্ণ ঘোষণা কোরে পুলিসকে তোফা ফাকি দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যেতে পারে, তাকে ধরবে এই দেশের পুলিস। আপনি পাগল হলেন দেখছি!” মহিলাটির মুখে এই প্রথম মৃদু হাসি খেলে গেল। আমি হাসতে হাসতে বললুম, “আপনার কথাই যদি সত্যি হয়, তবে আমি ইচ্ছা করছি, যেন মোহনের যাত্রা নিরাপদ হয়।” - মহিলাটি বিস্ফারিত দৃষ্টিতে চেয়ে বললেন, “কিন্তু ভেবে দেখুন, এই সময়ের মধ্যে সে কত কি অনিষ্ট আমাদের করতে পারে।” আমি বিস্মিত হয়ে বললুম, “কী অনিষ্ট সে করবে?” মহিলাটি বললেন, “তা আমি কি করে বলবো ? কিন্তু মোহনের কাছে সর্বপ্রকার কুকর্মের জন্য সবাইর প্রস্তুত থাকাই উচিত। নয় কী?” মহিলাটি যে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়েছিলেন, তা তার প্রতি কথায় প্রকাশ পাচ্ছিল। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, আমরা তখন যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলুম, তাতে তেমন মনোভাব ব্যতীত অন্য কিছু একজন মহিলার নিকট হতে প্রত্যাশা করাই যায় না। আমি ৩াকে সাস্তুনা দেবার জন্য বললুম, “অনেক সময় যে অসম্ভবও সম্ভব হয়, তা’আমি জানি। কিন্তু আপনি এই ভেবে ক্ষান্ত হোন যে, দসু মোহন এই ট্রেনে ভ্রমণ করছে যদি সত্যই হয়, তা হলে সে যে প্রথমে নিজেকে রক্ষা না কোরে অন্য কারও কিছু অনিষ্ট করবে, এ আমার বিশ্বাস হয় না। কারণ সে যদি বুঝতে পেরে থাকে, তাকে ধরবার জন্য মোগলসরাই থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত প্রত্যেক স্টেশনে পুলিস অপেক্ষা করছে, তখন সে নিজেকে গোপন রাখবার জন্যই বিশেষ চেষ্টা করবে, কাউকে লুণ্ঠন কোরে তার নিরাপত্তার ল্যাঘাত জন্মাবে না। সুতরাং আপনি নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকুন।” § -. কিন্তু আমার সান্তনা-বাক্যে মহিলাটি শান্ত হলেন না। যা হোক, তিনি আর বেশী কথা মা বলে নীরব হলেন খুব সম্ভবতঃ এই ভেবে যে পাছে আমি তাকে বাচাল বলি বা কষ্টকর সহযাত্রী ভাবি। তিনি নীরবে বাইরের দিকে চেয়ে বসে রইলেন। আমি সংবাদপত্রে মনোনিবেশ করলুম। সেদিনের কাগজে দসু মোহনের বিচারের প্রহসন-কাহিনী সবিস্তারে ছাপা হয়েছিল। কিন্তু সব খবরই পুরাতন কথা, ইতিপূর্বে কাগজে আলোচিত হয়েছিল, সেজন্য বিচারের বিস্তারিত কাহিনী আমার মনোযোগ আকর্ষণ করল না। গত রাত্রে আমার সু-নিদ্রা হয়নি। আমার চোখ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে এল। মেল তখন উল্কা বেগে ছুটে চলেছে। আমার চক্ষুর পাতা ভারী হয়ে মাথা দুলে দুলে পড়তে লাগল। সহসা মহিলাটি ভয়ার্ত স্বরে বললেন, “সর্বনাশ! আপনি ঘুমোবেন না-কী?” মহিলাটি আমার হাত থেকে সংবাদপত্রটি কেড়ে নিলেন এবং আমার দিকে শঙ্কিত তীব্র দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন। ہنچی۔