পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ծ Նo মোহন অমনিবাস আমি বললুম, “নিশ্চয়ই না। ঘুমাবার আমার কোন ইচ্ছেই নেই। আপনি ভয় পাবেন न । মহিলাটি বললেন, “আপনার পক্ষে ঘুমানো দুঃসাহসের কাজ হবে, মনে রাখুন।” “অত্যন্ত দুঃসাহসের কাজ হবে।” আমি বিনা দ্বিধায় স্বীকার করলুম। s কিন্তু সব বুঝি বৃথা হয়। ঘুমকে তাড়াবার জন্য আমি বিস্ফারিত দৃষ্টিতে মেলের গতির সঙ্গে মিলিয়ে যাওয়া নানা রকমের প্রাকৃতিক দৃশ্যের দিকে চেয়ে চেয়ে না-ঘুমাবার চেষ্টা করলুম। কখনও বা আকাশের বুকে ভেসে যাওয়া খণ্ড খণ্ড মেঘের দিকে চেয়ে রইলুম। কখনও বা কক্ষমধ্যে একদৃষ্টে আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা উত্তেজিত মহিলাটির মুখের দিকে চেয়ে মৃদু হাস্য কোরে বোঝাতে চেষ্টা করলুম যে আমি ঘুমাচ্ছি না! কিন্তু অতি শীঘ্রই আমার সকল প্রচেষ্টা নিঃশেষে বিলীন হয়ে গেল। আমার চোখের ওপর দেখতে দেখতে প্রাকৃতিক দৃশ্য, আকাশ, মেঘ, উত্তেজিত মহিলা, এমন কি মুদিত চক্ষু অথবা নিদ্রিত আগন্তুকের টুপি-ঢাকা মুখটি পর্যন্ত কোথায় যে অন্তহিত হয়ে গেল, বুঝতেই পারলুম না। আমি গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়লুম। স্বপ্নে দেখলুম, দসু মোহন আমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে যে মোহন, তা বড় বড় অক্ষরে তার বুকের ওপর লেখা হয়েছে। আরও দেখলুম, রাশি রাশি মনিমুক্তাপূর্ণ থলির পর থলি তার সর্বাঙ্গে ঝুলছে! সে দেখতে দেখতে ওপরে উঠতে লাগল। উঠতে উঠতে একেবারে স্বর্গের দ্বারদেশে উপস্থিত হ’ল এবং সেখান থেকে মণি-মুক্তা-পূর্ণ থলিগুলির মুখ খুলে দিতেই জলস্রোতের মত মণি-মুক্তা ভারতের দরিদ্র গ্রামগুলির উপর সবেগে ঝরে পড়তে লাগল। দেখতে দেখতে মোহনের এই ছবি আমার চক্ষুর সম্মুখ থেকে অস্তহিত হয়ে গেল। পরিবর্তে দেখলুম, মোহন ধীরে ধীরে স্বৰ্গদ্বার হতে নেমে এসে আমার সম্মুখে দাঁড়াল। ধীরে ধীরে আমার দিকে সে এগিয়ে আসতে লাগল, সে ক্রমশ বড়ো হতে লাগল। ক্রমে এক বৃহৎ আকৃতি দানবে পরিণত হ’ল এবং সহসা সে আমার বক্ষের উপর সবেগে লাফিয়ে পড়ল। இ. বক্ষের উপর একটা তীব্র বেদন অনুভূত হ’ল। একটা সুতীব্র নারী-কষ্ঠের আর্তধ্বনি— তারপরেই আমি জাগরিত হয়ে উঠলুম। দেখলুম, আমার আগন্তুক সহযাত্রী আমার বক্ষের উপর একটা হাঁটু গেড়ে বসে দুহাতে আমার কষ্ঠ চেপে ধরেছে। আমি খুব অস্পষ্ট দৃষ্টিতে এসব দেখলুম। কারণ আমার দুটি চক্ষুতেই রক্ত জমে উঠেছে। আরও দেখলুম, মহিলাটি কামরার এক কোণে দাঁড়িয়ে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চেয়ে হাতে হাত ঘষণ করছেন। আমার ভয় হ’ল, তিনি এখনই বুঝি মূৰ্ছা যাবেন। আমি বিন্দুমাত্রও বাধা দেবার চেষ্টা করলুম না। কারণ দসু আমাকে এমন বেকায়দায় ফেলে ধরেছিল যে, আমার ইচ্ছা থাকলেও শক্তি ছিল না। আমার বক্ষ যাতনার তীব্র পেষণে পীড়িত হচ্ছিল, আমার গলায় ঘড়ঘড় শব্দ হচ্ছিল, আমর দৃঢ় বিশ্বাস হ’ল, মাত্র আর একটা মিনিট, তারপরেই আমার সব শেষ হয়ে যাবে। আগন্তুক লোকটি বোধ হয় তা বুঝতে পারলো। কারণ তখনি সে তার পেষণ কিছু কমিয়ে দিলে এবং আমাকে একেবারে ছেড়ে না দিয়ে পকেট থেকে একটা শক্ত দড়ি বার