পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৬০

মোহন ও রমা እጬ ) কোরে মুহুর্ত-মধ্যে আমার দুই হাত পিছ-মোড়া কোরে বেঁধে ফেললে। আমার পা বাধলে, আমার সর্বাঙ্গ দড়ি দিয়ে জড়িয়ে শক্ত গেরো দিয়ে আমাকে সম্পূর্ণ অসহায়ভাবে ফেলে রাখলে । আমি বিস্মিত হলুম দেখে যে, লোকটা এই কাজ এমন সহজে এবং অবলীলাক্রমে সাধন করলে যে, তাকে একজন পাকা ব্যবসায়ী বোলেই মনে ধারণা জন্মে। এরকম ভাবে একজনকে আক্রমণ করা এবং চক্ষুর নিমেষে তাকে এমন সুন্দরভাবে বেঁধে অসহায় করা একমাত্র দসু্যরাজদের পক্ষেই সম্ভব;সাধারণ চোরের সে কাজ নয়, তা’ আমি ৬ালরূপেই বুঝতে পারলুম। - আক্রমণকারী দসু্য একটা কথা পর্যন্ত বললে না—শাস্ত, ধীর, স্থির ভাবে আমাকে সীটের সঙ্গে মড়ার মত বেঁধে ফেললে। আর আমি.ভারতের ধনীর, পুলিসের নিদ্রাহরণকারী ওয়াবহ দসু মোহন একজন অন্য দসু্যু দ্বারা এমনভাবে পরাজিত হয়ে নিশ্চেষ্ট অবস্থায় বসে থাকতে বাধ্য হলুম। সত্যই, এমন ঘটনা হাস্যজনক। কিন্তু অবস্থায় গুরুত্ব অনুভব করেও সত্য বলতে কী, এই দুর্বিপাকটুকু আমি উপভোগ করলুম। কারণ অদৃষ্টের পরিহাস যে এতখানি নিদারুণ হতে পারে, তা আমার ধারণা ছিল না। দসু্য মোহন একটা অতি সাধারণ, শিক্ষা-নবীস চোরের মত এমন সহজে আয়ত্ত হ’ল, এর চেয়ে নিষ্ঠুর ভবিতব্য আর কি হতে পারে? দসু্য আমার পকেট-বুক ও মানি-ব্যাগ বার করে নিল। দসু মোহনের উপর প্রকৃতি আজ প্রতিশোধ গ্রহণ করলেন। যে মোহন অন্যের পকেট-ভার কত শত বার লাঘব করেছে, সেই মোহনের পকেট-ভার অন্য দসু্যু আজ লাঘব করলে! এই কথা ভেবে আমার মুখে চকিতে মৃদু হাসি খেলে গেল। এর অপেক্ষা বিস্ময়কর ঘটনা আমার জীবনে আর কোনদিন ঘটেনি। আমাকে লুণ্ঠন কোরে দসু মহিলাটির দিকে চাইল। দেখলে, মহিলাটির পার্স সিটের ওপর পোড়ে রয়েছে। সে খুশি মনে পাসটা তুলে নিয়ে খুলে ফেললে এবং ভিতর থেকে মুক্তার হার একটা, কয়েক গাছ সোনার চুড়ি, একজোড়া ব্রেসলেট, একজোড়া হীরের দুল ও কিছু টাকা বার কোরে দেখলো এবং পকেটে ভরল। ఫ్రో মহিলাটির দিকে দস্যু পুনরায় চাইতেই তিনি তার হাতের আঙটি দুটি কাঁপতে কাপতে খুলে ফেলে দসুর দিকে ছুড়ে দিলেন এবং সহসা মূৰ্ছিত হয়ে মেঝের ওপর পড়ে গোলেন। - (9 দসু আঙটি দুটি প্রসন্ন মনে কুড়িয়ে নিল এবং মহিলার দিকে আর না চেয়ে তার মুছায় কিছুমাত্র ভূক্ষেপ না কোরে পকেট থেকে সিগারেট ও দেশলাই বার কোরে, একটা সিগারেট ধরিয়ে খুশি মনে ধূমপানে রত হ’ল এবং কত টাকা সর্বসাকল্যে তার হস্তগত হ’ল, পত্যেকটি জিনিস পুনরায় পরীক্ষা কোরে একটা কাগজে হিসাব করতে ব্যস্ত হয়ে উঠল। কিন্তু আমার মন অত্যন্ত দমে গেল। আমার পকেটে যে দশ হাজার টাকার নোট ছিল ৩ার জন্য নয়, আমার পকেট-বুকে যে সব দামী তথ্য ছিল, সেই পকেট-বুক দস্যুর কবলে আওয়ায় সকল শান্তি নিমেষে অন্তহিত হয়ে গেল। কিন্তু যদিও আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, অল্প সময় পরে ঐ টাকা এবং পকেট বুক আমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবো, মোহন (১ম)-১১ - -