পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা סיטא כי রয়েছেন, তা হলেও যে-মুহুর্তে দসু্য দ্বার খুলে নামবার চেষ্টা করবে, সেই মুহুর্তে তিনি যে গগনভেদী চিৎকার কোরে পুলিস ডাকবেন, সে-বিষয়ে আমার কোন সন্দেহই ছিল । না। আর একমাত্র এই কারণেই দস্যুর নিশ্চিন্ত নীরবতা আমার বিস্ময় উৎপাদন করছিল। আমি ভেবে পেলাম না, কেন দস্যু মহিলাটিকে আমার মত বদ্ধ অবস্থায় ফেলে রাখছে না? তা’ হ’লে তার পলায়নের পথ নিরাপদ হতে এবং এই দ্বিপ্রহরের রোমান্স অস্তরের অন্তরে পূর্ণভাবে অনুভব ও উপভোগ দুইই করতে সক্ষম হতো। কিন্তু এ বুদ্ধি তার মাথায় কেন যে প্রবেশ করছে না, ভেবে সত্যিই আমি বড় বিস্মিত হয়ে উঠলুম। পরের স্টেশন এলাহাবাদ। দসু-সহযাত্রী এখনও বসে বসে ধূমপান করছে। তার দৃষ্টি বাইরের দিকে নিবদ্ধ। বাইরে অবিশ্রান্ত বরষা ধারা ঝর ঝর কোর ঝরে পড়ছিল। সহসা দসু আমার টাইম-টেবলটা নিয়ে ট্রেনের সময় পড়তে লাগল। মহিলাটির খুব সম্ভবতঃ বরাবর মূৰ্ছিত হয়ে অথবা মূৰ্ছার ভান করে সময় কাটাবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু লোকটার সিগারেটের ধোয়ার কাশি থেকে অব্যাহতি না পাওয়ার দরুণ ওঁাকে নীরবে অতি নিরীহ ও শান্ত শিষ্টভাবে বসে সময় কাটাতে হচ্ছিল। আমি অত্যন্ত শারীরিক যাতনার মধ্যে বসে মনে মনে নানা প্ল্যান ভাবছিলুম এবং চিন্তা করছিলুম। * এমন সময় মেল প্রয়াগ স্টেশন অতিক্রম করল এবং উন্মাদ গতিতে পরবর্তী এলাহাবাদ স্টেশন অভিমুখে ছুটতে লাগল। সেই মুহুর্তে লোকটা উঠে দাঁড়ালো এবং আমাদের দিকে অগ্রসর হতেই মহিলাটি প্রাণঘাতী চিৎকার করে সত্য সত্য আবার মূৰ্ছিত হয়ে পড়লেন। লোকটার উদ্দেশ্যে কী? আমি সবিস্ময়ে তার দিকে চাইলুম। সে একটা জানলা তুলে মুখ বাড়িয়ে দেখলে, তখনও মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। র্তার মুখে বিরক্তির চিহ্ন ফুটে উঠল। তার কাছে ছাতা কিম্বা ওয়াটার প্রাফ কিছুই ছিল না। সে মহিলাটির ছাতা র্যাক থেকে তুলে নিলে এবং আমার ওভারকেটটা গায়ে চড়িয়ে দিলে! 登ー。 তারপর সে পায়ের প্যান্টলুন একটু ওপর দিকে টেনে তুলে গাড়ীর দরজা খুলে এক পা সিড়ির ওপর নামিয়ে দাঁড়ালো। @* যে-বেগে মেল ছুটছে, এই অবস্থায় কেউ যদি ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে, তবে তার পড়তে পারেন। লোকটা কি উন্মাদ না-কী? সে যে জীবন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চলেছে! সত্য কথা বলতে কী, আমার একবার ইচ্ছা হ’ল তাকে বাধা দিতে। তাকে নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা করবার আমি আর কোন পথই মুক্ত দেখলুম না। লোকটা আর এক ধাপ নেমে দাঁড়াল। ট্রেন উল্কা বেগে উন্মাদ গতিতে ছুটছে। লোকটা একবার আমাদের দিকে ফিরে তাকালো। সে যেখানে বসেছিল, সেদিকে একবার চাইলো। উদ্দেশ্য, দেখা যে কিছু ফেলে যাচ্ছে কি-না ! আমি ভাবলুম, যে-লোক যমালয়ের পথে চলেছে, সে-ও দেখছে, সে কিছু ফেলে