পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ֆ Ն8 মোহন অমনিবাস। গেল কি-না ! কিন্তু আমার বিস্ময় বৃদ্ধি হ’ল। সহসা ট্রেনের গতি কমে গেল। গতি কমতে কমতে অতি ধীর গতিতে উপস্থিত হ’ল। যেন দস্যুটার সঙ্গে মেলের ড্রাইভার ষড়যন্ত্র করেছে। ট্রেনের গতি অস্বাভাবিকরূপে কমে যাওয়ায় লোকটা ঝুপ কোরে নীচে লাফিয়ে পড়ল ও দ্রুতবেগে বিপরীত মুখে অদৃশ্য হয়ে গেল। যাবার পূর্বে দ্বার বন্ধ কোরে দিয়ে গেল। আমি জানালা দিয়ে অতি কষ্টে মুখ বাড়িয়ে দেখলুম, ট্রেনের লাইন রিপেয়ার হচ্ছে, সে কারণে প্রত্যেক ট্রেনের গতি এখানে কমাতে হয়। লোকটা নিশ্চয়ই তা পূর্ব হতে জ্ঞান ছিল, তাই এমন নিশ্চিন্ত মনে সিগারেট টানতে সক্ষম হয়েছিল। - ট্রেনের গতি পুনরায় ধীরে ধীরে বর্ধিত হতে লাগল। আমি মহিলাটির দিকে চেয়ে দেখলুম, তার মূৰ্ছাও অপনোদন হয়েছে। তিনি বিস্মিত মুখে আমার দিকে চেয়ে রয়েছেন। আমার দৃষ্টির সঙ্গে তার দৃষ্টি মিলতেই তিনি চিৎকার কোরে বিলাপ করতে লাগলেন। তাঁর প্রধানতম দুঃখ এই যে, তার শখের গহনাগুলি দসু্য অপহরণ কোরে নিয়েছে। তিনি বিলাপ করতে আমার মুখের দিকে চেয়ে বোধ হয় আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন এবং উঠে এসে আমার মুখের ভিতর থেকে রুমালটা টেনে বার কোরে আমার নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের কাজ সহজ কোরে দিলেন। তিনি আমার বন্ধন মুক্ত করতে চেষ্টা করতে আমি তাকে নিষেধ কোরে বললুম, “না, না অমন কাজও করবেন না। পুলিসকে আমি দেখাতে চাই, স্ক্রাউনড্রেল আমাকে কি অবস্থায় বেঁধে রেখে লুণ্ঠন করতে সক্ষম হয়েছে।” মেয়েটি এইবার বললেন, “বিপদজ্ঞাপক শিকল ধরে টানব কী?” আমার এত দুঃখেও হাসি পেল। আমি বললাম, “সামান্য দেরি কোরে ফেলেছেন। যখন আমাকে দস্য আক্রমণ করেছিল, সেই সময়ে আপনি যদি শিকল ধরে টানতেন, তা’ হ'লে এতখানি বিপদ আপনারও ঘটত না, আমারও না।” মহিলাটি আড়ষ্ট হয়ে বললেন, “ওরে বাপরে! তাহলে সে আমাকে খুন করে ফেলতে। মশাই, আমি কি আপনাকে পূর্বেই সাবধান করিনি যে, দসু মোহন এই গাড় ভ্রমণ করছে? আমি তাকে দেখেই চিনেছিলাম। কারণ তার ছবি আমি এতৃ অসংখ্য সংবাদপত্রে দেখেছি যে ভুল হবার যো ছিল না। দেখুন অদৃষ্ট, আমি তাকৈ চিনলুম, সে কি-না আমার গহনা-পত্র নিয়েই চম্পট দিল!” ക് আমি বললুম, “ভয় করবেন না, পুলিস তাকে নিশ্চয়ই গ্রেফ মেয়েটি মুখ বিকৃত কোরে বললেন, “ দসু মোহনকে তারা ধরবে? সে-কথা স্বপ্নেও ভাববেন না।” আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, “মোহনকে ধরা আর না ধরা সবই আপনার ওপর নির্ভর করছে। আপনাকে এক কাজ করতে হবে। যদি পারেন, তবে আপনার প্রিয় গহনাগুলো উদ্ধারের পথ হ’লেও হতে পারে। পারবেন ?” মহিলাটি জজের স্ত্রী, তার আপন বুদ্ধিমত্তা ও কর্মকুশলতা সম্বন্ধে গর্বের আর নেই। তিনি মুখ তুলে বললেন, “কি করতে হবে, বলুন ?” আমি বললাম, “ট্রেন যখন এলাহাবাদ স্টেশনে উপস্থিত হবে, আপনি জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে চিৎকার করে পুলিস ডাকতে আরম্ভ করবেন। আপনার চিৎকার শুনে পুলিস তার করতে সক্ষম হবে"