পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা ՏՆՏ উপায় ছিল না। আমার সন্দেহ হ’ল, আমার কথা শুনে, বিচারের সূক্ষ্ম শক্তি দেখে পুলিসকমিশনারের মন নানা সন্দেহে পূর্ণ হয়ে গেছে। তিনি বারংবার আমার মুখের দিকে চাইতে পাগলেন। কিন্তু আমার যে ফটােগ্রাফ সংবাদপত্রে দিনের পর দিন প্রকাশিত হচ্ছে, সেই প্রতিকৃতির সঙ্গে আমার বর্তমান ছদ্ম-প্রতিকৃতির আকাশ পাতাল প্রভেদ ছিল। তাহলেও অদৃষ্টের কথা বলা যায় না। আমার মন সন্দেহে ও দুর্ভাবনায় পূর্ণ হয়ে গেল। আমি ৬াবলুম, অবশেষে আমার ভাগ্য পরিবর্তিত হতে চলেছে কি না। কিন্তু জীবনে অনেকের কোন না কোন সময়ে এমন মুহুর্ত আসে, সে সময়ে বিন্দুমাত্র সাহসের ও বুদ্ধির বৈকল্য ঘটলে আর রক্ষা থাকে না। আমার সকল শক্তি, সকল উৎসাহ সবলে একত্র কোরে হাসতে হাসতে বললুম, “কথা কি জানেন, মানুষ যখন তার মহামূল্য দলিলে ভরা পকেটবই হারায় বা দশ হাজার টাকা লোকসান করে, তখন তার বুদ্ধি ও কল্পনাশক্তি আপনা হতেই বৃদ্ধি পায় এবং সব জিনিস ফিরিয়ে পাবার জন্য এমন কোন উপায় নেই, যা সে গভীরভাবে চিন্তা করে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনি যদি আপনার দুজন ডিটেকটিভ অফিসারকে আমার সঙ্গে দেন, তাহলে আমি নিশ্চিত কথা দিচ্ছি যে মোহনকে গ্রেফতার কোরে আপনার সম্মুখে এনে হাজির করবো।” এমন সময়ে আমার মহিলা-বন্ধুটি আগ্রহভরে বললেন, “আপনি মিঃ হালদারের অনুরোধ পূর্ণ করুন, মিঃ কমিশনার। উনি আমার স্বামীর বিশেষ বন্ধু। আমি বলছি, আপনি যদি ওঁর পরামর্শ মত সাহায্য করেন, তাহলে দসুও ধরা পড়ে, আর আমার গয়নাগুলোও ফেরত পাই।” আমার দয়াময়ী বন্ধুর অনুরোধ আমার ইচ্ছা সফল করলে। কারণ একজন উচ্চ পদাধিকারকের স্ত্র যে-ব্যক্তি সম্বন্ধে এমন উচ্চ ধারণা ঘোষণা করছেন, তার পরিচয় সম্বন্ধে কোন সন্দেহই আর থাকতে পারে না। সুতরাং কমিশনারের সকল আপত্তি ও দ্বিধার ভাব নিঃশেষে লয় পেয়ে গেল। তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, বললেন, “আমাকে বিশ্বাস করুন মিঃ হালদার, আপনি যদি দসু মোহনকে গ্রেফতার করতে পারেন, তাহলে আমার চেয়ে বেশী সুখী কেউ হবে না।” & কমিশনার আমাকে মোটর পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন এবং দুজন ডিটেকটিভ অফিসা আমার শোফার মোটরে স্টার্ট দিল। ইঞ্জিন ক্ষীণ শব্দে চিৎকার করে উঠল এবং কয়েক মুহুর্ত পরে আমরা স্টেশন থেকে বার হলুম। আমি আর একবার রক্ষা পেলাম। তখন আমার মন গর্বে ও আনন্দে পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। আমি আবার স্বাধীন। আমি আবার মুক্ত বাতাসে, মুক্ত আলোক-ধারায় স্নান করবার অবসর পেয়েছি। আমি মোটরের গতি তীব্রতর কোরে তুলুলম। মোটরের এঞ্জিন গভীর অস্ফুট শব্দ কোরে তার কর্মক্ষমতা সম্বন্ধে আমাকে নিঃসন্দেহ কোরে তুলতে লাগল। আমার এখন একটি কাজ বাকী। গভর্নমেন্টের এই দুজন বিশ্বস্ত ভৃত্যের সহায়তায় আমার পকেট-বুক উদ্ধার করতে হবে। তারপর? তারপর আমি আমার পথে চলে যাবো। এই দুজন