পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা > * > কমিশনারকে বোঝাতে যদি অত্যধিক সময় না লাগত, মাত্র দুমিনিট পূর্বে এখানে যদি উপস্থিত হতে পারতাম, তা হলে এই মনস্তাপ ভোগ করতে হত না। যা হোক, একজন ডিটেকটিভ বললেন, “এখান থেকে পরবর্তী স্টেশন, যেখানে । লোক্যাল থামবে, দশ মাইল পথ এবং আমরা যদি পনেরো মিনিটে এই পথটুকু অতিক্রম করতে পারি, তবে লোক্যালের সঙ্গে পরবর্তী স্টেশনে দেখা হতে পারে।” আমি উৎফুল্ল হয়ে বললুম, “উত্তম। আপনারা গাড়ীতে উঠুন, আমি দেখছি, দসু্যমোহন এবার কেমন কোরে হাত-ছাড়া হয়।” ঘণ্টায় ৬০ মাইল বেগে মোটর ছেড়ে দিলাম। কিন্তু উল্কাবেগে যাবার সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। কারণ ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তায় গো-যান ও মহিষ-যানের ধাক্কা বাঁচিয়ে ৬০ মাইল বেগে গতি বজায় রাখা একরূপ অসম্ভব বললেও অত্যুক্তিকর হয় না। পথিমধ্যে একটা মহিষযানের ধাক্কা অতি কষ্টে সম্বরণ করলুম। আমার মনের মধ্যে যে আকুলতা ও অনুভূতির সংমিশ্রণ দেখা দিয়েছিল, সেরূপ অবস্থায় কোন কিছু গুছিয়ে চিন্তা করা অসাধ্য ছিল। ". f ইহা অত্যন্ত ক্লান্তিকর দৌড়। ইহার পূর্বে এরূপ গতিতে কখনও আমার বিশ্বস্ত মোটরকে ছুটতে হয়নি। আমার মনে হতে লাগল, যেন মোটর আমার মনোগত অভিপ্রায় প্রাঞ্জলভাবে অনুভব করেছিল এবং সেই জন্যই সহসা গতি বৃদ্ধিতে বা কমে যাওয়ায় এঞ্জিন বা গিয়ার বা অন্য কিছু গোলযোগই আরম্ভ করলে না। মোটর যেন আমার অটুট একাগ্রতা উপলব্ধি করেছিল—সে যেন দসার সঙ্গে আমার ভীষণ শত্রুতার বিষয় সম্যকরূপে বুঝতে পেরেছিল, যেন সে বলবার প্রয়াস পাচ্ছিল, দসু্যু-মোহন স্কাউনড্রেল, বদমাশ, মানবতার শক্রতাকে গ্রেফতার করতেই হবে। আমি কি তাকে ধরতে পারবো না? অথবা সে আবার আইনকে ফাকি দেবে? একজন ডিটেকটিভ পিছন হতে পথ-নির্দেশ করছিল, “রাইট, লেফট বরাবর সোজা।” আমরা হু হু শব্দে অগ্রসর হতে লাগলুম। মাইলের পাথরচিহ্ন চক্ষের সম্মুখে আসতে না আসতে আবার অন্য মাইলের চিহ্ন অতিক্রম করতে লাগলাম। তারা যেন পিছন দিকে উড়ে যেতে লাগল। of সহসা একটা রাস্তার মোড় ঘুরেই প্রয়াগ-লোক্যালকে দেখতে পেলাম। মাত্র আধমইল পরে স্টেশন। এই পথটুকু ট্রেনের ও মোটরের মধ্যে প্রতিদ্বস্থিত শুরু হ’ল। মাত্র কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যে আমরা স্টেশনে উপস্থিত হলুম। ९ মোটর থামতে না থামতে আমরা তিনজনে লাফিয়ে মোটর থেকে বার হলুম এবং লাফাতে লাফাতে প্ল্যাটফরমে উপস্থিত হতেই ট্রেন এসে থেমে দাঁড়াল। আমরা শীঘ্র দ্বিতীয় শ্রেণীর কামরার নিকট উপস্থিত হয়ে দ্বার খুলে দাঁড়ালুম। কয়েকজন আরোহী নেমে এল। কিন্তু আমাদের চোর কামরার মধ্যে নেই। দ্বিতীয় শ্রেণীর মাত্র একখানি কামরা ঐ ট্রেনে ছিল। আমরা অভিনিবেশ সহকারে পরীক্ষা করলুম, কিন্তু সেই দসু্যু? সে নেই! “সর্বনাশ!” আমি চিৎকার করে উঠলুম, “সে নিশ্চয়ই আমাকে মোটরে দেখে চিনতে পেরেছিল! আমরা যখন ট্রেনের পাশাপাশি ছুটছিলাম, তখন সে নিশ্চয়ই আমাদের চিনতে