পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা Y ጫ ጬ রেলের কামরায় দেখে আমার মনে সন্দেহ জাগিয়েছিল যে, কোথায় এ-মুখ দেখেছি? কিন্তু স্মরণ করতে পারিনি কোথাও দেখেছিলুম বোলে। এদিকে সময় বয়ে যাচ্ছে। আমি দুই শত টাকার নোট একটা খামের মধ্যে বন্ধ কোরে আমার নামছাপা কার্ডে নিম্নলিখিত কথাগুলি লিখে রেখে দিলাম ঃ– “দসু মোহন তার দুজন প্রিয় সহকারী ডিটেকটিভকে এই সামান্য অর্থ গ্রহণ করবার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে অসংখ্য ধন্যবাদের সহিত রেখে গেল।” খাম ও কার্ডখানি এমন একস্থানে রেখেদিলুম যে তাদের এখানে আসবামাত্র যেন নজরে পড়ে। আমার দয়ালু বন্ধু মহিলাটির ব্যাগও সেখানে রেখেদিলুম। কিন্তু স্বীকার করতে আমার লজ্জা নেই যে, মূল্যবান জিনিসগুলি—যেগুলি আমি নেবার উপযুক্ত ভাবলুম, সেগুলি ব্যাগ থেকে বার কোরে নিলুম। কিন্তু নেবো না কেন? মহিলাটির স্বামী যে চাকরি করেন, তিনি আমার শত্রুর মধ্যে গণ্য। সুতরাং শক্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবার লোভ সম্ভরণ করা আমার পক্ষে একান্ত দুরূহ ব্যাপার। তারপর যখন সব কিছু রাখা হ’ল ও যা নেবার নেওয়া হ’ল, তখন আমি লোকটার দিকে চেয়ে দেখলুম যে তার জ্ঞান ফিরে আসছে। সে ধীরে ধীরে নড়াচড়া আরম্ভ করেছে। এখন আমার কর্তব্য কী? আমি তাকে পুলিসের হাত থেকে বাঁচাতে পারি না, বা তেমন লোককে বিশ্বাস করতেও পারি না। সুতরাং তার অদৃষ্টের ওপর ফেলে রেখে তার রিভলভার পকেটে ভরে নিলুম এবং আমার রিভলভার আকাশের দিকে তাক কোরে দুবার ফাঁকা ফায়ার করলুম। ওই শব্দ শুনেই যে ডিটেকটিভ দু'জন ছুটে আসবে, সে-বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ ছিল না। ইতিমধ্যে যদি দসুটা পালাতে সক্ষম হয় তো পালাবে, নয়তো ওর অদৃষ্টে যা আছে তা ভাববার আমার কোন প্রয়োজন ছিল না, সুযোগও ছিল না। আমি জঙ্গলের বিপরীত দিকে প্রাণপণে ছুটতে লাগলুম। বিশ মিনিট পরে আমি আমার মোটরের নিকট উপস্থিত হলুম এবং শোফারকে মির্জাপুর অভিমুখে দ্রুত চালাতে আদেশ দিলুম। ര് মোটর ছুটতে শুরু করল, আমি ভাবতে লাগলুম, এখন কি করা যায়? এ সময়ে এলাহাবাদে রমার আত্মীয়ের বাড়ী যাওয়ায় অত্যন্ত বিপদ আছে তা ছাড়া সংবাদপত্রে এইসব ব্যাপার নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা শুরু হবে! পথে-ঘাটে আমার চেহারার মত লোকের জন্য পুলিসের নজর প্রখর হয়ে উঠবে—সেইরূপ সম্ভাবনায় আমি কি শান্ত মনে সুস্থ চিত্তে রমার সঙ্গে দেখা করতে পারি, না আলাপ করতে পারি? দেখছি, আমার অদৃষ্ট আমাকে শান্তিতে, রমার সান্নিধ্যে পরম শান্তিতে বাস করতে দেবে না। ঘটনাচক্রে রমা যে-আত্মীয়ের বাড়ীতে এলাহাবাদে এসেছে, আমি তার বন্ধু। অবশ্য অন্য নামে, পরিচয়ে। তবুও আমার মন এক্ষেত্রে এলাহাবাদ যাওয়া সমীচীন বিবেচনা করল না। এক সময় শোফার বললে, “মির্জাপুরে এসেছি, হুজুর। কোথায় যাবো?” টেলিগ্রাফ অফিসে উপস্থিত হয়ে আমার বন্ধু ও রমার আত্মীয়কে তার পাঠিয়ে দিলুম। -്-l.