পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

➢ % &ኃ মোহন অমনিবাস লিখলুম—“পথিমধ্যে বিশেষ গুরুতর কাজে আটকে পড়েছি। এক্ষেত্রে নিমন্ত্রণ রক্ষা আমার পক্ষে সম্ভব হ’ল না। ক্ষমা করবেন।” পরদিন সন্ধ্যার সময় কলকাতায় ফিরে এলাম। তার পরদিন প্রভাতে সংবাদপত্রে যে সংবাদটুকু বার হয়েছে, তার সারমর্ম এই ৪— প্রয়াগের নিকট দসু মোহন কয়েকটি নরহত্যাকারী ভীষণ দসু্য রামদীন চোবেকে নানা ঘটনার ভিতর দিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। ঐ দসু্য মানব-সমাজের শত্রু। বহুদিন পুলিসকে ফাকি দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। জাস্টিস মিত্রের পত্নীর ব্যাগ উদ্ধার করতেও মোহন সক্ষম হয়েছে ও মাননীয় মহিলাকে প্রত্যপণ করেছে। দসু মোহন—তার সহকারীরূপে যে দুজন ভিটেকটিভ কাজ করেছিল, তাদের উদার হস্তে পুরস্কৃত করেছে। দসু মোহন বলেই এরূপ ভীষণ দসু গ্রেফতার হ’ল, নচেৎ কিছুতেই হত না। (S) ইংরাজ রাজত্বের দেড়শত বৎসর পরেও বাঙলায় এখনও অতীতের স্বাধীন বাঙালী রাজবংশের কয়েকটি পরিবার অস্তাচলগামী তপনের মত ক্ষীণ রশ্মি বিকীর্ণ করিয়াও অস্তিত্ব বজায় রাখিয়াছিলেন। বর্তমান আখ্যায়িকায় আমরা এমন একটি পরিবারের বিষয় জানাইতেছি। - কথিত আছে, বাঙলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এক জমিদার বংশের বর্তমান অধীশ্বর কুমার নরনারায়ণ রায়ের পূর্বপুরুষগণ স্বাধীন রাজারূপে দেশ শাসন করিতেন। সে সময়ে তাহাদের সমৃদ্ধি সম্পদ স্বাধীন নরপতির সমতুল্য থাকিলেও বর্তমানের বংশধর নরনারায়ণের নিকট অতীতের সুখ স্বপ্নের মত। তিনি স্বপ্ন-দিনের উত্তরাধিকার সূত্রে মাত্র একজোড়া হীরক-বলয় লাভ করিয়াছিলেন। হইয়াছিল। কথিত আছে, এই বলয়-যুগল স্বাধীন নরপতির প্রিয়তমা মহিষীর জন্য বহু লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রস্তুত হইয়াছিল। তারপর দেড়শত বৎসর অতীত হইয়াছে, সে স্বাধীন দিনের সকল স্মৃতি রূঢ় কালের কবলে সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছে, কিন্তু কি এক অত্যাশ্চর্য শক্তির বলে এই বলয় যুগল এখনও কুমার নরনারায়ণের দখলে রহিয়াছে;তাহা যে এক অমীমাংসিত সমস্যা,তাহাতে সন্দেহ না থাকিলেও সমস্যা সমাধানের ভর আমরা গ্রহণ করিব না। o অভাবই থাকেনা; কিন্তু যে পবিত্র বস্তু একদিন স্বাধীন নরপতির প্রিয়তমা মহিষীর অঙ্গ অভাবে জর্জরিত হইয়া মৃত্যুবরণ করবেন, তাহাও সহ্য হইবে, তবুও এই পবিত্র বস্তু দুইটিকে হস্তান্তরিত করবেন না। সুতরাং অনুমান করিতে আদৌ বেগ পাইতে হয় না যে, এইরূপ মনোবৃত্তির অধীন হইয়াই একমাত্র অতীত স্মৃতিমণ্ডিত মহামূল্য বস্তু দুইটি নিজেদের অক্তিত্ব ও স্থায়িত্ব বজায় রাখিতে সক্ষম হইয়াছে। হীরক-বলয়ের খ্যাতি কুমার নরনারায়ণের অনেকখানি দুঃখ ও অভাব লাঘব করিয়াছিল। তিনি মহামূল্য বস্তু দুইটি গৃহে রাখিতে সাহস পান নাই, বেঙ্গল ব্যাঙ্কের একটি আয়রণ