পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা >ዓፄ সেফ ভাড়া লইয়া ব্যাঙ্কের দায়িত্বে গচ্ছিত রাখিয়াছিলেন এবং ক্রিয়াকলাপে বা বিবাহে, শুভকর্মে অথবা ভোজ ইত্যাদি কোন সমারোহ কার্য উপস্থিত হইলে তিনি অতি সাবধানে বলয় দুইটি ব্যাঙ্কের হেপাজত হইতে লইয়া গিয়া প্রিয়তমা পত্নী বীণার বাহু দুইটি অলস্কৃত করিতেন। জনপ্রবাদ আছে—সত্য কি মিথ্যা বলা কঠিন যে, হীরক-বলয় দুটির অনেকগুলি আসল হীরক উত্তরাধিকারীদের অভাবের সময়ে হস্তান্তর হইয়া অপেক্ষাকৃত কম দামী পাথরে শূন্যস্থান পূরণ করা হইয়াছে। এই কাহিনী সত্য বলিয়া ধরিয়া লইলে কয়েক শত হীরকখণ্ডের মধ্যে কয়েকটি হীরকনকল হইলেও বর্তমানে বস্তু দুটি যে মহামূল্য,তাহাতেও কাহারও সন্দেহ ছিল না এবং বলয় দুটি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত থাকার দরুণ কুমার নরনারায়ণের অর্থাভাব ছিল না,কারণ ব্যাঙ্কে টাকা না থাকিলেও এই বলয় দুটির জন্য ব্যাঙ্ক হইতে ধার পাওয়া তাহার পক্ষে সহজসাধ্য ব্যাপার হইয়াছিল। ঐতিহাসিক বলয় দুটির খ্যাতি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হইয়াছিল। কোন বিশেষ কর্যোপলক্ষে যখন জমিদার-গৃহিণী বীণা এই অলঙ্কার দুটি ধারণ করিত, তখন তাহা দেখিবার জন্য অনিমন্ত্রিত বহু অভিজাত মহিলাও স্বেচ্ছায় জমিদার বাড়ীতে আগমন করিয়া এই বিখ্যাত জিনিসটি দেখিয়া যাইতেন। শ্রীমতী বীণা পরমাসুন্দরী, অসামান্যা মেয়ে। কুমার নরনারায়ণ পত্নীকে প্রাণাপেক্ষা ভালবাসিতেন। একদিন কুমার নরনারায়ণ সংবাদ পাইলেন যে, হাইকোর্টের মহামান্য চীফ জাস্টিসের পত্নী লেভী হোর কোন কার্য ব্যপদেশে পুরী গিয়াছিলেন, মোটরে করিয়া ফিরিবার পথে জমিদার বাড়ী হইয়া ইতিহাস বিখ্যাত হীরক বলয় দুটি পরিদর্শন করিয়া যাইবেন। কুমার লেভী হোরের অনুরোধ-পত্রের কথা পত্নীকে জানাইলেন। বীণা কহিল, “কবে তিনি আসবেন?” কুমার কহিলেন, “বুধবার। আজ সোমবার। তবে আমাকে আসছে কালই ব্যাঙ্ক থেকে এনে রাখতে হবে।” “বেশ, তাই ভালো।” বীণা সম্মতি জানাইল। త్రి পরদিন আহারাদির পর বেলা ১২টার ট্রেনে কুমার নরনারায়ণ দুইজন শরীর-রক্ষী পইয়া কলিকাতায় গমন করিলেন এবং বেঙ্গল ব্যাঙ্ক হইতে যথারীতি কাগজ-পত্ৰ সহি করিয়া মহামূল্য বলয় দুটি লইয়া আপন প্রাসাদে ফিরিয়া আসিলেন। পরদিন অপরাহুে মাননীয় লেডী হোর জমিদার বাড়ীতে পদার্পণ করিলেন। কুমার নরনারায়ণ এই মাননীয়া অতিথির আগমন উপলক্ষে কয়েকজন বিশিষ্ট আত্মীয়া নারীকে নিমন্ত্রণ করিয়া ভোজের আয়োজন করিয়াছিলেন। সন্ধ্যার পর নিমন্ত্রিতগণ হাজির হইলেন। অপরূপা সুন্দরী শ্রীমতী বীণার কুসুম-কোমল বাহুলতায় হীরক-বলয় দুটি উজ্জ্বল বিদ্যুৎলোকে যে অপূর্ব আভা বিকীর্ণ করিতে লাগিল, তাহা দেখিয়া লেভী হোর বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া পড়িলেন। তিনি বীণাকে আপন পাশ্বে বসাইয়া অভিনিবেশ সহকারে হীরক কঙ্কণ দুটি পরীক্ষা করিলেন। তাহার চোখে-মুখে সশ্রদ্ধ বিস্ময় ফুটিয়া উঠিল। নিমন্ত্রিত মহিলারাও পূর্বে বহুবার দেখিয়া থাকিলেও পুনরায় ঐতিহাসিক বস্তু দুইটির মোহন (১ম)-১২ షో