পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা Y ዓ S (5) প্রভাতে শয্যা ত্যাগ করিয়া কুমার অশ্বারোহণে নিয়মিত প্রাতভ্ৰমনে গমন করিলেন এবং সাতটার সময় প্রত্যাবর্তন করিয়া স্ত্রীর উদ্দেশে শয়ন-কক্ষে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন, বীণা প্রাতভোজনের আয়োজন শেষ করিয়া তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছে। জলযোগ শেষ করিয়া কুমার কহিলেন, “আজ ৯টার ট্রেনেই কলকাতায় গিয়ে ব্যাঙ্কে বালা দুটো রেখে আসি, বীণা। অমন মহামূল্য জিনিস এখানে রাখা আদৌ নিরাপদ নয়। যখনই ওটা বাড়ীতে থাকে, তখনি আমি সর্বসময়ে উদ্বেগে ভয়ে থাকি। কারণ ওর লোভে দসু্যরা করতে পারে না এমন কাজ নেই।” +. বীণা সম্মতি জানাইয়া কহিল, “তাই ভাল। কলকাতা থেকেই কাজ আগে সেরে এসো।” । কলিকাতায় যাইবার জন্য দুইজন দারোয়ান প্রস্তুত হইবার আদেশ পাঠাইয়া দিয়া কুমার স্বয়ং প্রস্তুত হইয়া লইলেন। যাত্রা করিবার পূর্ব-মুহুর্তে পাশ্বের পক্ষে গমন করিয়া ড্রয়ার টানিয়া উপরের কাগজ-পত্র সরাইয়া দেখিলেন, হীরক-বলয় নাই। হীরক-বলয় নাই! কুমারের মাথার ভিতর সহসা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হইল। তিনি দ্রুতপদে পাশ্ব-কক্ষে আসিয়া ব্যগ্রস্বরে কহিলেন, “বীণা, তুমি কি বালা দুটো পরেছ?” বীণা ভূ-কুঞ্চিত করিয়া কহিল, “না। কেন, কি হয়েছে?” বীণার স্বরে শঙ্কা ফুটিয়া উঠিল। কুমার অস্পষ্ট জড়িত কণ্ঠে কহিলেন, “এ্যা, তুমি পরোনি ? তবে কি হ’ল ?” বলিতে বলিতে তিনি পুনরায় পাশ্বের কক্ষে প্রবেশ করিলেন। বীণা ভয়চকিত উদ্বিগ্ন মুখে স্বামীর নিকট ছুটিয়া গিয়া উভয়ে একত্রে অনুসন্ধান করিতে লাগিল। উদ্বেগে কাপিতে কঁাপিতে বীণা ড্রয়ার মধ্যস্থ দ্রব্য টানিয়া বাহির করিল, কিন্তু বলয় নাই; কহিল, “ এই ড্রয়ারেই রেখেছিল তো? না, অন্য ড্রয়ারে ?” বলিতে বলিতে বীণা টেবিলের অন্য ড্রয়ারগুলি টানিয়া জিনিস-পত্র মেঝের উপর বাহির করিয়া ফেলিতে লাগিল। & কুমার বিষগ্ন কষ্ঠে কহিলেন, “না, না বীণা, তুমি পণ্ডশ্রম করছ। অন্য ড্রয়ার রাখিনি আমি ওপরের ড্রয়ারেই রেখেছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি ওপরের টাতেই বীণা অন্য ড্রয়ারগুলি কম্পিত হস্তে খুজিতে খুজিতে কহিল, “তোমার মনে নেই।” কুমার প্রতিবাদ করিয়া কহিলেন, “না, না, না, বীণা। আমি অন্য কোথাও রাখিনি। আমি ওপরের টাতেই রেখেছিলাম।” কুমার একটা মোমবাতি জ্বালাইলেন। কারণ কক্ষটি গুপ্ত-কক্ষ বলিয়া একটি ছোট জানালা ভিন্ন আলোক প্রবেশ করিবার পথ ছিল না। সেই জানালাও দিন-রাত্রি বন্ধ থাকে। বাতি জ্বালিয়া তাহারা সারা কক্ষটি তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। কক্ষের প্রত্যেকটি স্থান অনুসন্ধান করিয়া যখন হীরক-বলয় দুইটি পাইলেন না, তখন হতাশ স্বরে ঘোষণা করিলেন, “হীরক-বলয়, ঐতিহাসিক বস্তু, অতীতের স্বাধীনতার একমাত্র নিদর্শন,