পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)bro মোহন অমনিবাস এই নাই’ যে কতখানি নাই, এ যে কিরূপ ভয়ঙ্কর বর্ণনাতীত দুর্ঘটনা, তাহা তাহাদের মত অনুভব করা কাহারও পক্ষে সম্ভব ছিল না। কুমার ক্ষণকাল মাথায় হাত দিয়া চিন্তা করিলেন, পরে টেলিফোনে কলিকাতার পুলিসকমিশনারকে ঘটনা অবগত করাইয়া একজন শ্রেষ্ঠ ডিটেকটিভকে পাঠাইতে অনুরোধ জনাইলেন। কুমারের সহিত কমিশনারের পরিচয়.এই অপহৃত হীরক বলয়’ দর্শনের অজুহাতে পূর্ব হইতে ছিল। তিনি অবিলম্বে আই-বির দুইজন অতি দক্ষ কর্মচারীকে কুমারের নিকট প্রেরণ করিলেন। বেলা দশটার সময় ডিটেকটিভ মিঃ হ্যারিস ও মিঃ ঘোষ কুমারের প্রাসাদে উপস্থিত হইলেন। তৎক্ষণাৎ গুপ্ত-কক্ষে গমন করিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা করিয়া মিঃ হ্যারিস প্রথম প্রশ্ন করিলেন, “কুমার, আপনি কি দৃঢ় বিশ্বাস করেন যে, রাত্রিতে আপনার শয়ন কক্ষের ভিতর দিয়ে কোন লোক এই গুপ্ত-কক্ষে প্রবেশ করেনি?” “দৃঢ় বিশ্বাস করি।” কুমার কহিলেন, “আমার ঘুম অত্যন্ত পাতলা, সামান্য শব্দে ভেঙ্গে যায়। তাছাড়া আমার শয়ন-কক্ষের দ্বার অগলবদ্ধ ছিল এবং আমি স্বয়ং সকালে খিল খুলে প্রাতভ্ৰমণে বার হয়েছিলাম।” মিঃ হ্যারিস কহিলেন, “এই গুপ্ত-কক্ষে আসবার আর কি অন্য কোনও পথ নেই?” কুমার কহিলেন, “না, নেই।” “কোন জানালা নেই?” কুমার কহিলেন, “হা, আছে। ঐ লৌহ-সিন্দুকের পিছনে একটা ছোট জানালা আছে।” “আমরা দেখতে চাই।” বলিয়া মিঃ হ্যারিস ও ঘোষ উভয়ে লৌহ-সিন্দুকের নিকট গিয়া দেখিলেন, জানালা এত ক্ষুদ্র যে কোন মানুষের পক্ষে প্রবেশ করা অসাধ্য ব্যাপার। তা ছাড়া লৌহ-সিন্দুকটিও আড়াআড়ি ভাবে জানালার সম্মুখে রাখার দরুণ জানালা খোলা ও বন্ধ করিবার উপায় ছিল না। কুমার কহিলেন, “প্রথমতঃ জানালার ভিতর দিয়ে কোন মানুষের আসা সম্ভব নয়, দ্বিতীয়তঃ লৌহ-সিন্দুকের পাশ দিয়ে যেটুকু ফাক আছে, তাতে সিন্দুককে সরিয়ে পথ করতে হলে ভীষণ শব্দ না হয়েই পারে না। সুতরাং এ-পথে চোরের আগমন হয়েছিল, কোনমতেই কল্পনা করা যায় না, বিশ্বাস করা দূরের কথা।” ১৮ মিঃ হ্যারিস কহিলেন, “এই জানালার ভিতর দিয়ে কি দেখা যায়, কুমার?” “আপনার এই তলায় উপরে আর কোন তলা আছে?” কুমার কহিলেন, “আমার প্রাসাদ তিনতলা। উপরে একটা তলা আছে। আমার শয়ন কক্ষের নিম্নে যে উঠান আছে, তার পূর্বদিকে চাকরদের মহল। উঠানের চারদিক লৌহ জাল দিয়ে ঘেরা। সুতরাং এই কক্ষ থেকে চুরি যে কি কোরে সম্ভব হ’ল, তা আমার কল্পনার অতীত।” - দুইজন ডিটেকটিভ। উভয়ে মিলিয়া জানালার নিকট হইতে লৌহ-সিন্দুকটাকে একটু টানিয়া আনিলেন। দেখিলেন, জানালার খিল আঁটা রহিয়াছে। সুতরাং জানালা দিয়া কোন লোক যে প্রবেশ করে নাই, তাহাতে আর কোনও সন্দেহ রহিল না।