পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉brミ মোহন অমনিবাস মিঃ হ্যরিসের প্রশ্নে হীরক-বলয় অপহৃত হইয়াছে অবগত হইয়া মিসেস গুপ্ত অত্যন্ত ব্যথিত হইয়া কহিল, “আমি যে নিজের হাতে রাণীদির চুল বেঁধে দিয়ে হাতে হীরক-বলয় পরিয়ে দিয়েছিলাম। সর্বনাশ! কে এমন বিপদের কথা স্বপ্নেও ভেবেছিল ?” মিঃ হ্যারিস যখন মিসেস গুপ্তাকে বিশুদ্ধ ইংরাজীতে কথা কহিতে শুনিলেন, তখন তিনি একটু সতর্ক হইয়া প্রশ্ন করিলেন, “আপনার কি কোন ধারণা হয় না, চুরি কি কোরে সম্ভব হ’ল? এমন তো হতে পারে, চোর আপনার ঘরের ভিতর দিয়েই গিয়ে চুরি করতে সক্ষম হয়েছে।” আমাকে হত্যা না কোরে?” মীরা চিন্তা করিতে পারিল না যে, পুলিশ তাহাকেই সন্দেহ করিয়া প্রশ্ন করিতেছে। সে পুনরায় কহিল, “তা ছাড়া আমি কখনও বাড়ীর বাইরে যাইনি, এক মুহুর্তের জন্যও গত রাত্রে ঘর-ছাড়া হইনি।” বলিতে বলিতে সে রন্ধন কক্ষের জানালা খুলিয়া দিয়া কহিল, “এদিকে দেখুন। এখান থেকে দূরত্ব অন্ততঃ ৬ হাত হবে। কোন মানুষের সাধ্য আছে, এতখানি লাফিয়ে যেতে পারে?” মিঃ হ্যারিস গম্ভীর মুখে কহিলেন, “আপনাকে কে বললে যে, আমরা এ-পথে চোর গেছে বোলে সন্দেহ করছি ?” মীরা সবিস্ময়ে কহিল, “কেন ? হীরক-বলয় কী গুপ্ত-কক্ষে ছিল না?” “আপনি কার কাছে শুনলেন?” মিঃ হ্যারিস প্রশ্ন করিলেন। মীরা কহিল, “কেন, আমি কি জানি না, যখনই হীরক-বলয় ব্যাঙ্ক থেকে প্রাসাদে আনা হয়, তখনি তা গুপ্ত-কক্ষেই থাকে। রানীদি আমাকে বহুবার সে কথা বলেছেন।” মিঃ হ্যারিস দেখিলেন, মিসেস গুপ্তার বয়স ২২ বৎসরের বেশি হইবে না। তাহা হইলেও দারিদ্র্যে, দুর্ভাবনায়, স্বামীর অনাদরে তরুণী বালিকার মুখে ছাপ পড়িয়াছে। তিনি আরও বুঝিলেন, তাহার প্রভুর বিপদে যে বিস্ময় ও শঙ্কার চিহ্ন শিক্ষিতা নারীর মুখে ফুটিয়া উঠিয়াছে, তাহা কোন মতেই কৃত্রিম নহে। মীরা বুঝিল, বিপদের মেঘ তাহার মাথার উপর ঘনাইয়া আসিতেছে। সে সস্তানকে ক্রোড়ের নিকট টানিয়া লইল। বালক মাতাকে জড়াইয়া ধরিয়া স্নেহভূরে চুম্বন করিল। “আশা করি, আপনারা ঐ দুঃখিনী নারীকে নিশ্চয়ই সন্দেহ করেননি? আমি বলছি, আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস মীরার উপর আছে। ওর জন্য আমি স্বয়ং জামিন রইলুম। আপনারা অন্যত্র এ চুরির সম্বন্ধে অনুসন্ধান করুন।” মিঃ হ্যারিস কহিলেন, “আমিও আপনার সঙ্গে একমত কুমার। কারণ মিসেস গুপ্তার মুখে যে ভাবটি ফুটে উঠেছিল, তেমন ভাব ফুটিয়ে তোলা অতি বড়ো পাকা চোরের পক্ষেও সম্ভব নয়। আমার প্রথমে যে সন্দেহ হয়েছিল, বর্তমানে তার কিছুই নেই।” চলিতে লাগিল। সুবৃহৎ প্রাসাদের সর্বস্থান তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করা হইল, কিন্তু চোরের কিম্বা হীরক-বলয়ের কোন সন্ধানই পাওয়া গেল না। জানালার ভিতর দিয়া চুরি হওয়া অসম্ভব ব্যাপার বলিয়া প্রতিপন্ন হইল। কারণ জানালা ভিতর হইতে খিল দেওয়া