পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ brՎ, মোহন অমনিবাস ধরিয়া তপন এমন সব অদ্ভুত রহস্যময় চুরির কাহিনী বিবৃত করিয়া সকলকে স্তম্ভিত করিয়াছিল যে, তাহার অস্বাভাবিক তীক্ষবুদ্ধিমত্তায় কাহারও কোন সন্দেহ ছিল না। সুতরাং এমন এক উপযুক্ত বিষয়ে তাহার কোন অভিমত নাই শুনিয়া সকলেই বারবার প্রতিবাদ করিতে ও অনুরোধ জানাইতে লাগিলেন। অবশেষে তপন মৃদু হাস্যে কহিল, “আমি স্বীকার করছি, আমি কখন কখন এমন সব বিষয়ে জলের মত পরিষ্কার করেছি, যে-সব বিষয়ে খুব বড় ডিটেকটিভও হার মেনে গেছেন। কিন্তু একমাত্র এই কারণের জন্য আমি নিজেকে সর্ব বিষয়ে পণ্ডিত বোলে জাহির করতে পারি নে। কারণ আমি জানি, আমার ক্ষমতা কত সীমাবদ্ধ । তা’ ছাড়া আমি হীরক-বলয় সম্বন্ধে কোন কিছুই জানি না।” তপনের কথা শুনিয়া সকলেই কুমারের মুখের উপর চাহিলেন। কিন্তু কুমারের এই অপ্রীতিকর বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করিবার বিন্দুমাত্রও ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি নিস্তার পাইলেন না। অতীতে হীরক-বলয় অপহরণের কাহিনী ধীরে ধীরে তিনি সবিস্তারে বর্ণনা করিলেন। তপন মন দিয়া শ্রবণ করিল। চিন্তা করিল, দুই একটা প্রশ্ন করিয়া দুই একটা বিষয় পরিষ্কার করিয়া লইল। পরে নিম্নস্বরে কহিল,“অদ্ভুত ঘটনা! প্রথমে আমার মনে হয়েছিল যে, এই সমস্যার সমাধান করা আমার শক্তিতে কুলোবে না। কিন্তু এখন দেখছি, আমার পক্ষে, সমাধান সম্ভবও হতে পারে।” o তপনের কথা শুনিয়া অতিথিগণ সব আপন আপন চেয়ার তপনের নিকট যতদূর সম্ভব টানিয়া লইয়া উপবেশন করিলেন এবং সকলে রুদ্ধ নিঃশ্বাসে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। কুমারের মুখে মৃদু অবিশ্বাস-হাস্য খেলিয়া গেল। তিনি কিছু বলিলেন না, নীরবে চাহিয়া রহিলেন। তপন বলিতে আরম্ভ করিল, “সাধারণতঃ কোন চুরির কিনারা করতে হলে প্রথমেই দেখতে হয় কি উপায়ে কোন পথে চুরি করা হয়েছে অথবা কিভাবে সংঘটিত হওয়া সম্ভবপর ছিল। কিন্তু বর্তমান ক্ষেত্রে যেরূপ সরলভাবে এই চুরি সংঘটিত হয়েছে, এর চেয়ে সহজভাবে কোন চুরি সংঘটিত হয়েছে বোলে আমার জানা নেই। হয় শয়ন-কক্ষের দ্বার দিয়ে, নয় জানালার ভিতর দিয়ে চোর যে প্রবেশ করেছিল সে-বিষয়ে কারও কোন সন্দেহই থাকতে পারে না। কিন্তু ভিতর থেকে অর্গলবদ্ধ দ্বার বার থেকে খোলা একরূপ অসম্ভব বললেও অত্যুক্তি করা হয় না। সুতরাং চোর জানালার ভিতর দিয়ে প্রবেশ করেছিল।” কুমার বাধা দিয়া কহিলেন, “কিন্তু জানালায় খিল দেওয়া ছিল এবং চুরির পরদিন ঠিক সেই অবস্থাতেই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল।” - তপন কুমারের কথায় কান না দিয়া বলিতে লাগিল, “জানালা দিয়ে প্রবেশ করতে হ’লে একমাত্র সহজ উপায় ছিল যে একটা সিড়ি রান্না-ঘরের জানালা দিয়ে গুপ্তকক্ষের জানালার কানিসে লাগিয়ে দেওয়া। তা’ হ’লেই...” কুমার পুনরায় বাধা দিয়া কহিলেন, “আমি বলছি, জানালার খিল বন্ধ ছিল, তপন।”