পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা ՏեrԳ এইবার তপনকে কুমারের প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য হইতে হইল। সে অতি শান্ত এবং নিরীহ স্বরে কহিল, “আমার কোনও সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু কজা-আঁটা সাশী কি জানালায় ছিল না ?” কুমার সবিস্ময়ে কহিলেন, “তুমি কি কোরে তা জানলে ?” তপন মৃদু হাসিয়া কহিল, “তা” জানবার জন্য কারুকে জ্যোতিষ-শাস্ত্র অধ্যয়ন করতে হয় না। কারণ যে সময়ের ব্যাপার এটি, সে-সময়ে প্রত্যেক বাড়ীর জানালাতেই কজাআঁটা সাশী দেওয়ার প্রচলন ছিল। আর তা’ না হ’লে এই চুরি কখনও ঘটতে পারতো না।” কুমার কহিলেন, “তা সত্য। কিন্তু জানালার সঙ্গে সাশী ও বন্ধ ছিল। পুলিস এ বিষয়ে আমাদের কোন প্রশ্নই করেনি।” তপন কহিল, “সেই ভুলই করেছে। নইলে আপনারা যদি এই দিক দিয়ে পরীক্ষা করতেন, তা হলে দেখতেন, বাইরে থেকে জানালা খোলা কত সহজ ব্যাপার।” কুমার কহিলেন, “কিরূপে?” - তপন কহিল, “মনে করুন, একটা লোহার তারে একটা লোহার রিং লাগিয়ে ভিতরে চালিয়ে দিলেই জানালা খোলা একান্ত সহজ হয়ে দাঁড়ায়।” কুমার সবিস্ময়ে কহিলেন, “সতি ?” তপন কহিল, “হা। তারপরে একরকম কেমিক্যাল গুড়া পাউডার আছে, সাশীর bারধারে যা লাগিয়ে দিয়ে চাপ দিলেই সাশীর কাচ খুলে যায়। তখন আর কি বাকী থাকে পলুন?” কুমার চিৎকার করিয়া কহিলেন, “চমৎকার! চমৎকার! কিন্তু বৎস, একটা জিনিসেই গলদ রয়ে যাচ্ছে। যদি কোন কেমিক্যাল দিয়ে জানালার সাশীর ওপর ঘষা হয়ে থাকতো, ৩া’ হ’লে আমাদের নজর নিশ্চয়ই এড়াতো না ?” তপন সুনিশ্চিত স্বরে কহিল, “নিশ্চয়ই আছে?” “ও কথা বলছ কি কোরে তপন? আমরা দেখলাম না, যা –কুমার নীরব হইলেন। তপন মৃদু হাস্য করিয়া কহিল, “কোন জিনিস দেখতে হ’লে ভাল কোরে চাইতে হয়। নিশ্চয়ই গুড়ার দাগ সাশীতে লেগে আছে। নইলে সাশীর কাচ খোলা একরূপ অসম্ভব ব্যাপার। তাছাড়া পুনরায় সাশী লাগাবার সময়ে যে আঠা ব্যবহার করা হয়েছিল, তারও [ণ কোন চিহ্ন নেই, বলতে চান?” |్యలో কুমার বিস্ময়ে হতবাক হইয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন এবং কয়েক-মুহুর্ত একদৃষ্টে তপনের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া কহিলেন, গুপ্তকক্ষের কোন কিছু পরিবর্তন সেদিন থেকে আর ০য়নি। পূর্বে যেমন অবস্থায় ছিল, আজও ঠিক সেই অবস্থাতেই আছে। ঐ দুর্ঘটনা ঘটবার পর থেকে আমি কিম্বা আমার স্ত্রী গুপ্ত-কক্ষে আর প্রবেশ করিনি। তপন মৃদু হাসিয়া কহিল,“তবে আপনি সহজেই সন্দেহ ভঞ্জন করতে পারেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, আমার অনুমান রূঢ় সত্য বলে প্রমাণিত হবে।” কুমার অভিভূত স্বরে কহিলেন, “তুমি যে-পথে চিন্তা করছ, পুলিস সে ধার দিয়েও খায়নি। তুমি কিছুই দেখোনি, জানো না অথচ আমাদের সমস্ত ধারণা বিপর্যস্ত কোরে Mচ্ছ—এমন আশ্চর্য ব্যাপার আমি জীবনে দেখিনি তপন!”