পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ brեr মোহন অমনিবাস তপন মৃদু হাসিয়া কহিল, “আমি শুধু যা ঘটা সম্ভব, তাই অনুমান করেছি! এর মধ্যে এমন কিছু দুরূহ প্রশ্ন নেই, যার জন্য আপনি এরূপ বিস্মিত হতে পারেন। অবশ্য যদি আমার ধারণা ভুল মনে করেন, তবে তা আপনাকে প্রমাণ কোরে দেখাতে হবে।” “নিশ্চয়ই প্রমাণ করবো! এক মিনিটের মধ্যেই তুমি বুঝতে পারবে, তোমার সমস্ত হিসাব ভুলের ওপর ভিত্তি করেছে।” বলিয়া কুমার দ্রুতপদে প্রাসাদের অভ্যন্তরে চলিয়া গেলেন। কেহই কোন প্রশ্ন করিলেন না। সকলেই নীরবে অভিভূত হইয়া বসিয়া রহিলেন। রমার দৃষ্টি পলকহীন হইয়া তপনের মুখের উপর ন্যস্ত ছিল। রমার মুখে একটা শঙ্কার ভাব পরিস্ফুট হইয়া উঠিতেছিল। তপন বুঝিয়াছিল যে রমার মনের ভিতর ঝড় উঠিয়াছে। সে অশান্ত হইয়া পড়িতেছে। যে সন্দেহ তরুণীর মনে দেখা দিয়াছে, তাহা যে বেশিক্ষণ আর শুধু সন্দেহ রহিবে না—এ-সত্যও তপনের নিকট অজ্ঞাত ছিল না। সে তাহাকে সান্থনা দিবার অভিপ্রায়ে তাহার মুখের দিকে একবার চাহিয়া শান্ত ও মৃদু হাস্য করিল। তপন রমাকে বুঝাইতে চাহিল, যদি বুঝিয়া থাক, চিনিয়া থাক, তবে নীরবে বসিয়া থাকো। অবশেষে কুমার ফিরিয়া আসিলেন। তাঁহার চোখে-মুখে উত্তেজনা ফুটিয়া উঠিয়াছে। তিনি এরূপ উত্তেজিত হইয়াছিলেন যে স্থির হইয়া দাড়াইতে পারিতেছিলেন না! তিনি অতি কষ্টে নিজেকে সংযত করিয়া কম্পিত স্বরে কহিলেন, “তপনের অনুমান অক্ষরে অক্ষরে সত্য। আমি যা’ কল্পনা করতেও পারিনি...” বীণা এতক্ষণ অধীর আগ্রহে স্বামীর প্রত্যাবর্তন প্রতীক্ষা করিতেছিল। সে কহিল, “উনি যা বলেছেন, তা সত্য ? সাশীতে দাগ আছে ? কুমার উত্তেজিত কষ্ঠে কহিলেন, “সত্য সত্য, হুবহু সত্য।” বলিয়া কুমার তপনের নিকট আসিয়া তাহার একখানি হাত চাপিয়া ধরিয়া পুনরায় বলিলেন, “তপন, তোমাকে আমি থামতে দেবো না। এখন পর্যন্ত যতদূর বলেছ, সত্য হয়েছে! কিন্তু এইটুকুই সব কথা নয়। তোমার ধারণা মতো কি সত্যই ঘটেছিল, আমাকে সব খুলে বলো তুমি।” তপন ধীরে ধীরে আপনার হাতটি মুক্ত করিয়া লইয়া কহিল, “তারপর যে লোক এই চুরি করেছিল, সে আপনাদের অবর্তমানে একটা সিড়ি এনে রান্নাঘরে লুকিয়ে রেখেছিল। তারপর রাত্রে জানালার ভিতর দিয়ে আপনাকে হীরক-বলয় গুপ্ত-কক্ষে রাখতে দেখবার পরে সিড়ি লাগিয়ে জানালার নিকট উপস্থিত হয়। তারপর ঐভাবে জানালা খুলে ফেলে।” কুমার বাধা দিয়া কহিলেন, “কিন্তু জানালার খিল ঐ সাশীটার কাছ থেকে অনেক দূরে ছিল। কোন মানুষের হাত বাড়িয়ে তা খোলা একরূপ অসম্ভব ব্যাপার। তবে সে কি ক’রে কোরেছিল ?” তপন কহিল, “যদি তা হয়, তবে সে সাশীর ফাক দিয়েই প্রবেশ করেছিল। ঘটেও যে ছিল তাই, আমার কোন সন্দেহ নেই।” কুমার চিৎকার করিয়া বলিলেন, “অসম্ভব। জগতে এমন কোন সরু লোক নেই, যে ঐ সাশীর কাচের অল্প-পরিসর স্থান দিয়ে প্রবেশ করতে পারে!” o তপন নির্লিপ্ত স্বরে কহিল, “তবে চোর কোন মানুষ নয়।” ! “তার মানে?” কুমার কহিলেন। o