পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা めbrぬ “কোন শিশু প্রবেশ করেছিল।” তপন নির্বিকার স্বরে উত্তর দিল। কহিল, “আপনার আশ্রিতা মীরা গুপ্তার একটি ছেলে ছিল—বলছিলেন না ?” “হা, ছিল। তার ছেলের নাম—” কুমার জবাব দিলেন! “আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে সেই ছেলেই এই কাজ করেছিল।” তপন দৃঢ়স্বরে কহিল। কুমার অভিভূত হইয়া পড়িলেন,কহিলেন, কিন্তু তার প্রমাণ কী? একটা সাত বছরের শিশু—সে যে এতখানি চিন্তা-যুক্তি কোরে আগে থেকে একটা সিড়ি পর্যন্ত সংগ্রহ কোরে রাখবে, আর এমন সুকৌশলে জানালা খুলে চুরি করবে, তোমার অকাট্য যুক্তি এবং প্রমাণেও বিশ্বাস করতে প্রবৃত্তি হয় না তপন।” : তপন কিছুমাত্র সন্দেহের ভাব প্রকাশ না করিয়া কহিল, “হয়তো এমনও হয়ে থাকবে যে তার মা’র রান্নাঘরের ওপর থেকে জিনিসপত্র নামাবার জন্য একটা ছোট সিড়ি ছিল । আর রান্নাঘরেই হুক জাতীয় কোন পদার্থ ছিল। সে সেই সব সংগ্রহ কোরে এই কাজ করেছে।” কুমার চিন্তিত মুখে কহিলেন, “মিসেস গুপ্ত চলে যাবার পর থেকে তার শোবার ঘর ও রান্নাঘর অন্য কোন লোকই ব্যবহার করেনি। সে-ঘর দুটো চাবি-বন্ধ করাই আছে। আচ্ছা আমি দেখছি, এ-কথাও তোমার সত্য কি না, তপন ?” কুমার পুনরায় বাহির হইয়া গেলেন। কিন্তু কক্ষ মধ্যস্থ কাহারও সন্দেহ রহিল না যে, এক্ষেত্রেও তপনবাবুর কথা সত্য বলিয়া প্রমাণিত হইবে। সকলের বিস্ময়ের আর অবধি ছিল না। কারণ তপন যেভাবে বিবরণ বলিতেছিল, তাহা যে অনুমানের উপর নির্ভর করিয়া কিছু বলা নহে, তাহা যে-কোন সত্য ঘটনার বিবৃতি দেওয়ার সমতুল্য সে-বিষয়ে কাহারও মনে দ্বিধাভাব এতটুকুও ছিল না। কুমার ফিরিয়া আসিলেন,তিনি শ্রান্ত ও ক্লান্ত দেহ-মনে একটা চেয়ারের উপর অবশভাবে বসিয়া পড়িয়া কহিলেন, "চুরি যে মীরার ছেলের কাজ, আর আমার কোন সন্দেহ নেই। রান্নাঘরে ছোট একটা সিড়িও আছে। একটা কেন দু’টো হুকও আছে তাতে।” বীণা অধীর উত্তেজনায় কহিল, “আপনি বলছেন, ছেলের কাজ? কিন্তু আমি বলছি, এ কাজ তার মায়ের-ই। মীরাই সব কু-কাজের মূল। সে তার ছেলেকে দিয়েই এ-কাজ করিয়েছিল। আপনিও কি তাই বলেন না?” പ് তপন দৃঢ়স্বরে কহিল, “না। তার মা এসব বিষয়ে কিছুই অবগত ছিল না।” বীণা অবিশ্বাস্য-হাস্যে কহিল, “ও আপনার কোন কাজের কথা নয়। মা ও ছেলে একঘরে এক বিছানায় থাকতো, ছেলে এমন একটা বৃহৎ চুরি করলে, আর মা তার কিছুই জানলে না, এ-কথা কেউ বিশ্বাস করতে পারে কি? আপনিই বলুন না, সম্ভব হয় কী?” তপন কহিল, “অবশ্য তারা একঘরে শয়ন করতো, তা সত্য। কিন্তু রান্নাঘর থেকে এই কাণ্ড ঘটেছিল। তখন তার মা অন্য ঘরে নিদ্রিত ছিল।” কুমার নীরবে চিন্তা করিতেছিল;কহিলেন, “তারপর? বালা দুটোর কি হ’ল ? তবে পুলিস অনুসন্ধান করেও ছেলের জিনিস-পত্রের মধ্যে পায়নি কেন?” তপন মৃদু হাসিয়া কহিল, “কারণ ছেলেটি বাইরে যাওয়া-আসা করতো। যে সময়ে পুলিস নিয়ে আপনি তাদের ঘরে গিয়েছিলেন, সে সময়ে ছেলেটি প্রাতঃকালে স্কুল থেকে