পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ծ Է, Օ মোহন অমনিবাস ফিরে এসেছিল। তাছাড়া পুলিস যখন তার নির্দোষী মা’র বিরুদ্ধে কোন প্রমাণই পেল না, তখন তারা যদি ছেলেটার বইয়ের ডেস্ক খুঁজতো, তা হলে তার পড়বার বইয়ের মধ্যে হীরক-বলয় দেখতে পেতো।” কুমার কহিলেন, “উত্তম। কিন্তু মীরা যে প্রতি বছর দু'হাজার কোরে টাকা কোন স্থান থেকে পেতো, তা কি তার অপরাধের চূড়ান্ত প্রমাণ নয়? একমাত্র ঐ কারণেই প্রমাণ করা যায় না যে, এই সব ষড়যন্ত্রের মধ্যে সে তার পুত্রের সঙ্গে সমান ভাবে জড়িত ছিল?” তপন মৃদু হাসিয়া কহিল, “তিনি যদি দোষী হতেন, তা’ হ’লে কি আপনার স্ত্রী টাকা পাঠিয়েছেন ভেবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পত্র লিখতেন? আর এককথা, পুলিস ছেলের মা'র ওপরেই দৃষ্টি রেখেছিল, কিন্তু ছেলের উপর রাখেনি। সুতরাং অতি বুদ্ধিমান ছেলেটির কলকাতায় যাওয়া-আসায় কোন বাধা ছিল না। আর সে প্রতি বৎসর খুব সস্তা দামে অর্থাৎ দু'হাজার টাকার মত হীরা একজন অসৎ ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রয় করতো এই শর্তে যে, ব্যবসায়ী সেই টাকা একটা মিথ্যে নামে তার মা’র ঠিকানায় পাঠিয়ে দেবে। ব্যবসায়ীও করতে বাধ্য হতো, কারণ সে দশ হাজার টাকার জিনিস দুহাজার টাকায় হস্তগত করছিল—এই লোভে। প্রথম চার বৎসর এই একই ভাবে কাজ হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চম বৎসরে ছেলেটির মা অসুখে পড়েন; তার যাতে ভালভাবে চিকিৎসা ও পথ্যের তপনের কথা শুনিয়া কক্ষ মধ্যস্থিত সমস্ত ব্যক্তির মন একটা সন্দেহে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। কারণ তপনকে কেহই চিনিত না। এমনকি কুমার পর্যন্ত তপনের অস্তিত্ব পূর্বে জ্ঞাত ছিলেন না। তপনের বিবরণে আনুমানিক ইতিহাসেরও উর্ধ্বেও যে নিষ্ঠুর সত্য কাহিনী ফুটিয়া উঠিতেছিল, তাহার শঙ্কিত পরিস্থিতির মধ্যে পড়িয়া প্রত্যেকেই অস্বস্তির ভারে ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিলেন। কুমার একদৃষ্টে তপনের দিকে চাহিয়াছিলেন,তাহার মন যাহা ভাবিতেছিল, মুখে তাহা প্রকাশ করিতে কুষ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছিল। যাহা হউক, তিনি প্রশংসা আমার অসংখ্য ধন্যবাদ তুমি গ্রহণ করো, তপন।” ই তপন কঠিন স্বরে কহিল, “না, না, না। এ আমার আদীে অনুমান হয় । আমি বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি কোরে সত্যকে ছেকেবার করছি মাত্র। আমি মানস-নেত্রে সত্য ঘটনা, যা এক্ষেত্রে ঘটা একান্ত সম্ভব, তারই ছবি দেখতে পেয়ে আপনাদের কাছে প্রকাশ করছি মাত্র।” - “আমাদের বুঝিয়ে বলো, তপন।” কুমার অনুরোধ করিলেন। “আপনি ঘটনার যে বিবরণ দিয়েছেন, তার ওপর ভিত্তি কোরেই আমি সত্যটুকু ছেকে বার করছি। আমি মানস-নেত্রে দেখলুম, ছেলেটির মা তার একমাত্র সস্তানকে নিয়ে একটি গণ্ডগ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিলেন। দুর্নামে, দুশ্চিন্তায় মার শরীর ভেঙ্গে পড়ল। ছেলেটি তখন দু’একটি করে হীরা বিক্রি কোরে তার মা’র জীবন-যাত্রা অনেক পরিমাণে সরল কোরে দিল। ক্রমশঃ তার মা মৃত্যুমুখে এগিয়ে চলতে লাগলেন। ছেলেটির এ জগতে আর দ্বিতীয় আত্মীয় ছিল না; সে তার সাধ্যাতীত ভাবে মা'র চিকিৎসা ও পথ্যের আয়োজন