পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ֆ Տ Հ মোহন অমনিবাস হীরক-বলয় চুরি করতে পারে এবং ধরা পড়বার কোন প্রমাণই রাখে না—এমন কাজ যে শিশু-বয়সে করতে, আর কাজ আরম্ভ করবার মুখে এমন বিরাট সাফল্য অর্জন করতে পারে, সে কি কখনও এ-পথ ত্যাগ করতে পারে, কুমার ?” - কাহারও মুখে একটাও কথা বাহির হইল না। তপন বলিতে লাগিল, “সেই ছেলে যদি মানুষ হয়ে তার জন্মগত প্রতিভাকে শিক্ষা, অধ্যয়ন, সাধনার মধ্য দিয়ে মহোজ্জ্বল কোরে তোলে,তার মা'র ওপর ধনীর অত্যাচার, নির্মম, নিষ্ঠুর ব্যবহারের প্রতিশোধ নিয়ে আজ ফিরে এসে থাকে, তবে সে অন্যায় করেছে, কুমার?” তপন উঠিয়া দাঁড়াইল। তাহার দৃষ্টি রমার মুখের উপর পড়িল। মুখ রক্তশূন্য বিবর্ণ। তপন এক মুহুর্ত ভাবিল। পরে বীণার দিকে চাহিয়া কহিল, “কিন্তু সে আর আপনাদের ওপর প্রতিশোধ নেবে না। আপনাদের বর্তমান দুঃসময়ে সত্যই সে দুঃখিত।” বীণা ভীত ও চমকিত হইয়া উঠিল। তপন বলিতে লাগিল, “দেখছি, আপনি ভয় পেয়েছেন। আমার বিদ্যুপটুকুও আপনারা বুঝতে পারলেন না? আশ্চর্য!” বীণা রূঢ়স্বরে কহিল, “না মশায়, না, আমি ভয় পাইনি। আমি জানতে চাই, সে মেয়েটা—মীরার ছেলে কি এখনও চুরি কোরেই নিজের ভরণ-পোষণ করছে?” তপন বিস্মিত হইয়া চাহিল! তারপর শান্ত স্বরে কহিল, “আমার বিশ্বাস সে তাই করছে। সে যে নিরুৎসাহ হয়ে ও-পথ ছেড়ে দেয়নি, এতেই ও-পথে কী গভীর নিষ্ঠা, তার পরিচয় দিচ্ছে।” বীণা কহিল, “তার মানে ?” “আপনারা বিশেষ রূপেই জানেন, আপনার হীরক-বলয়ের কয়েকটা হীরা ছাড়া বাকি সবগুলোই ঝুটা পাথর। আসল হীরাগুলো বিক্রি করেছে। বাকিগুলো মূল্যহীন।” তপন মৃদুহাস্যে কহিল। বীণা কহিল, “যে ঐতিহাসিক বলয় একদিন স্বাধীন মহারানীর হাত অলস্কৃত করেছিল, তার মূল্য যাচাই হীরার দামে নয়, নামে। মীরার চোর সন্তান তাই তার ঐতিহাসিক মূল্য বুঝতে পারেনি p" - a So তপন কহিল, “সে ঠিকই বুঝেছিল। আরও বুঝেছিল, ও-জিনিসটা বিজ্ঞাপন হিসাবে আপনারা ব্যবহার করতেন। তাতে এই সুবিধা ছিল যে, বাজারে ধার পাওয়া আদৌ অসম্ভব হতো না।” (y কুমার ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিলেন। বীণা ইঙ্গিতে র্তাহাকে নীরব থাকিতে বলিয়া কহিলেন, “আমি ভাবছি, সেই চোরটার যদি কিছুমাত্র চক্ষুলজ্জা থাকতো, তাহলে সে এমন কোরে গর্ব কোরে বেড়াতো না! কারণ প্রত্যেক জিনিসের মূল্য আঁক কষে পাওয়া যায় না। স্মৃতির মূল্য তাই অমূল্য। আমার একটি অনুরোধ আপনার কাছে। রাখবেন?” তপন কহিল, "বলুন?” বীণা কহিল, “যদি কোন দিন আপনার মীরার ছেলের সঙ্গে দেখা হয়, তবে তাকে বলবেন যে, তার যেটুকু প্রয়োজন হীরক-বলয়ের সঙ্গে ছিল, তা শেষ হয়েছে। বুটা পাথর বিক্রি হবে না;সুতরাং সে যদি আমাদের বালা দুটি ফেরত দেয়, তবে তার কাছে আমরা