পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা - Տ Տ Գ “মৃত্যু! মৃত্যু হয়েছে।” মোহন অস্ফুট কণ্ঠে কয়েকবার উচ্চারণ করিল। উপর জমিয়া গিয়া কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করিয়াছে। মোহন উঠিয়া কক্ষের আলো জ্বালিয়া দিল। এইবার সে দেখিল যে, কক্ষের মধ্যে wকটা ভীষণ ধস্তাধস্তি হইয়াছে। বিছানা বিপর্যস্ত হইয়া গিয়াছে। বিছানার চাদর ও লেপ টুকরা টুকরা হইয়া ছিড়িয়া গিয়াছে। মেঝের উপর যে ঘড়িটি পড়িয়াছিল, তাহার ছোট কাটা এগারোটার ঘরে, বড় কাটা দুই-এর ঘরে থাকিয়া বন্ধ হইয়া গিয়াছে। অদূরে একখানা চেয়ার উলটাইয়া রহিয়াছে। রক্ত, শুধু রক্ত, চারিদিকে রক্তের বন্যা বহিয়া গিয়াছে। “হীরক-কষ্ঠি গেছে না আছে?” মোহন নিজেকে প্রশ্ন করিল। দ্রুতহস্তে মোহন টেবিলের ড্রয়ার খুলিয়া ফেলিল এবং ততোধিক দ্রুতহস্তে টুকরা ঞ্জিনিস পত্রগুলির ভিতর হইতে ভেলভেট বাক্স টানিয়া বাহির করিল। কম্পিত হস্তে খুলিয়া দেখিল, হীরক-কঠি’ নাই। “শয়তান।” মোহন ক্রোধে গজিয়া উঠিল। তাহার পর অস্ফুট কষ্ঠে কহিল, “মোহন। তুমি একটু আগে তোমার অদৃষ্ট অতি সুপ্রসন্ন ভেবে গর্বে আত্মহারা হয়েছিলে; এখন তোমার সে-গর্ব কোথায় রইল ? তোমাকে বাহবা দিতে পারলাম না, মোহন। এখন যত শীঘ্ৰ পারো পালাও। জমিদার-পত্নী নিহত, হীরক কঠি অপহৃত, যদি বাঁচতে চাও তো চম্পট দাও।” তাহা হইলেও মোহন যাইবার কোন লক্ষণ প্রকাশ করিল না। পালাইবে? মোহন ? অন্য কেহ হইলে এতক্ষণ তাহাই করিত। কিন্তু মোহন ? অসম্ভব! মোহন ভাবিল, তাড়াতাড়ি পলাইয়া যাওয়া অপেক্ষা আরও কিছু বেশি করণীয় তাহার নাই কী? একে একে ভাবিয়া দেখা যাক, এক্ষেত্রে মোহন, তুমি নিরপরাধী। আচ্ছা, তুমি যদি পুলিস কমিশনার হতে, আর এ বিষয়ে অনুসন্ধানের ভার নিয়ে এখানে আসতে, তা’ হলেও মোহনের পক্ষে এইটুকু উত্তেজনায় কাতর হওয়া উচিত হয় কী? মোহন একটি চেয়ারে উপবেশন করিল এবং দুই হাত দিয়া তাহার তপ্ত মস্তক চাপিয়া পরিল। (2° . কয়েক বৎসরের মধ্যে এরূপ অভিনব হত্যা-কাহিনী পুলিসের গোচরে আসে নাই। পুলিস অনুসন্ধানে অবগত হইল গত রাত্রে এই বিলাত-ফেরত ধনীম এক বন্ধুর সঙ্গে বায়স্কোপ দেখিতে গিয়াছিলেন। এই মহিলাটি কুবের-সম এক ধনবানের স্ত্রী ছিলেন কয়েক বার ইউরোপ ভ্রমণ করিয়া আসিয়াছিলেন। যে হীরার কষ্ঠির জন্য র্তাহার জীবন দিতে হইল, সে হীরার কষ্ঠি সম্রাটের জুয়েলার গণের দ্বারা নির্মাণ করাইয়াছিলেন। বহুমূল্য পক্ষ টাকা মূল্যের বস্তু কেন তিনি এরূপভাবে নিজের নিকট রাখিয়া মৃত্যুমুখে পতিত হইলেন, তাহার সদুত্তর পুলিস আবিষ্কার করিতে সক্ষম হইল না। মহিলাটি পূর্বে অত্যন্ত অপরিমিত ভাবে খরচ করিতে অভ্যস্ত ছিলেন। তাহার সন্তানাদি ছিল না। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি পার্ক স্ত্রীটের প্রাসাদে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করিয়া বাস করিতেছিলেন। একটি পুরাতন ভৃত্য, একজন পাচিকা ও একজন পরিচারিককে লইয়া তিনি বাস করিতেন। --