পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ Է ե- মোহন অমনিবাস স্বামীর মৃত্যুর পর মহিলাটি দেখিলেন, স্বামী অপরিমিত ব্যয় করিয়া বিশেষ কিছুই তবে রানীর মত জীবন যাপন করিয়া যাইতে পারিবেন। : তাহার অসংখ্য বন্ধু-বান্ধবেরা তাঁহাকে সারাদিন ও শয়ন করিতে যাইবার পূর্ব-মুহুর্ত পর্যন্ত প্রতিদিন হীরক-কষ্ঠি পরিয়া থাকিতে দেখিতেন। র্তাহারা কিছু বলিলে একমাত্র এই উত্তর তিনি দিতেন, “একদিন যে অতি সুখের দিনে, সম্পদের দিনে আমার সহচরী হয়েছিল, তাকে কি আমার বর্তমান অস্বাচ্ছল্যের দিনে ত্যাগ করতে পারি?” তিনি কঠি বিক্রয় করিবার চিন্তা মনেও স্থান দিতেন না। “যতদিন আমি বঁচিব, ততদিন আমি এটা চোখের আড়াল করবো না।” এই কথা তিনি বলিতেন। - এই সমস্ত ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হইতেছিল। হত্যা-কাণ্ডের দুই দিবস পরে সংবাদপত্রে নিম্নলিখিত সংবাদ প্রকাশিত হইল ঃ– “আমরা অবগত হইলাম, জমিদার-পত্নীর ভৃত্য হরিচরণকে পুলিস হত্যাপরাধে গ্রেফতার করিয়াছে। তাহার বিরুদ্ধে প্রচুর প্রমাণ পুলিসের হস্তগত হইয়াছে। হরিচরণের কক্ষে তাহার বিছানার নিম্নে একটি রক্তাক্ত সার্ট পাওয়া গিয়াছে। প্রমাণিত হইয়াছে যে উক্ত জামা ভূত্য হরিচরণের। ঘটনার রাত্রে সে উহা পরিধান করিয়াছিল। অনুসন্ধানে ইহাও প্রকাশিত হইয়াছে যে, রাত্রের আহারের পর হরিচরণ কোন গুপ্ত স্থানে লুক্কায়িত থাকিয়া জমিদার-পত্নীকে হীরক-কষ্ঠি রাখিতে দেখিয়াছিল। অবশ্য আমরা বলিতে বাধ্য হইতেছি যে, উপরোক্ত ব্যাপারের কোন প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। পুলিসের অনুমান মাত্র সম্বল। কিন্তু একটা বিষয়ে হরিচরণ কোন কৈফিয়ত দিতে পারে নাই। পরদিন প্রাতঃকালে সাতটার সময় হরিচরণ সিগারেট ক্রয় করিতে বাহিরে গিয়াছিল। ইহা সিগারেটওয়ালা ও বাড়ীর অফিসার-ইন-চার্জের সাক্ষ্যে প্রমাণিত হইয়াছে। কিন্তু জমিদার-পত্নীর পাচিক ও পরিচারিকা—যাহারা বিশ বৎসর ধরিয়া বিশ্বস্তভাবে চাকরি করিতেছে, তাহারা বলিয়াছে যে, প্রভু-পত্নীর আদেশানুসারে তাহদের ফ্রাটের দ্বার সময় দ্বার খুলিবার হুকুম দিলে তবে কাহারও বহিরে যাওয়া সঞ্জর হইত এবং আরও বলিয়াছে যে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন প্রাতে দ্বার আটটা অবধি চাবি-বন্ধ ছিল। পরে তাহারা হত্যাকাণ্ডের কথা জানিতে পারিয়া হৈ হৈ করিতে থাকে ও দ্বার মুক্ত করে। । ইহাও জানা গিয়াছে যে ফ্ল্যাটের উত্তর দিকে ভৃত্যদের জন্য কয়েকটি কক্ষ নির্দিষ্ট ছিল। তাহারা সেইখানেই বাস করিত। পুলিস বলিতেছে যে, পাচিকা ও পরিচারিকার বিবৃতি সন্দেহের অতীত। তবে কী হরিচরণের নিকট ডুপ্লিকেট চাবি ছিল? এই সমস্যা সমাধানের উপর সমস্ত নির্ভর করিতেছে।” পুলিসের অনুসন্ধানে প্রকাশ পাইল, হরিচরণ একজন পুরাতন পাপী। ইতিপূর্বে কয়েকবার জেল খাটিয়াছে। হরিচরণের পক্ষে কাহাকেও হত্যা করা এতটুকু অসম্ভব কার্য নহে। তাহা হইলেও তাহার বিরুদ্ধে এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেল না, যাহাতে তাহাকে হত্যাকারী বলিয়া অভিযুক্ত করা যাইতে পারে।