পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা Ֆ ծՖ জমিদার-পত্নীর উত্তরাধিকারিণী এক ভ্রাতুষ্পপুত্র তাহার জবানবন্দিতে কহিলেন, “জমিদার পত্নীর মৃত্যুর এক মাস পূর্বে তিনি তাহাকে একখানি পত্রে জানাইয়াছিলেন যে, তিনি কোথায় তাহার বহুমূল্য হীরক-কষ্ঠি লুকাইয়া রাখেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, পরদিন সেই পত্ৰখানি চুরি যায়! কেচুরি করে, কিরূপেই বা সে তাহার সন্ধান পাইল, তাহা আজ পর্যন্ত রহস্যময় রহিয়াছে।” বাড়ীর অফিসার-ইন-চার্জ ও র্তাহার পত্নী সাক্ষ্যে বলিলেন যে, ঘটনার রাত্রে তিনটার সময় একজন লোক ডাঃ ঘোষের নিকট যাইবার জন্য প্রবেশ করে। ডাক্তার সাক্ষ্যে বলেন যে, কোন ব্যক্তিই তাহার নিকট উক্ত সময়ে যান নাই। তাহা হইলে সে লোকটা কে? একজন সহকারী? - হত্যাকারীর সহচর কেহ আছে বলিয়া সংবাদপত্র ও জনসাধারণের দৃঢ় বিশ্বাস হইল। চীফ ইনস্পেক্টর মিঃ বেকারও তাহা অনুমোদন করিলেন। তিনি বিচারকারী ম্যাজিষ্ট্রেটকে বলিলেন, “দসু মোহনও এই হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট আছে।” ম্যাজিষ্ট্রেট বিদ্রুপ করিয়া কহিলেন, “দসু মোহন আপনার মনে বাস করছে। তাই আপনি সকল সময় তাকে দেখতে পান।” “আমি তাকে সকল কাজেই দেখতে পাই, কারণ সে সকল কাজেই থাকে বোলে।” মিঃ বেকার ধীরে ধীরে কহিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট কহিলেন, “বরং বলুন, যে কেস আপনার নিকট শক্ত বোলে অনুমিত হয়, সেই সব কেসেই আপনি মোহনকে সন্দেহ করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বন্ধ ঘড়ির সময় দেখে হত্যাকাণ্ড যে রাত্রি ১১-১০ মিনিটে সাধিত হয়েছে, তা প্রমাণিত হয়েছে। আর বাড়ীর অফিসার-ইন-চার্জ রাত্রি তিনটার সময় কোন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বাড়ীতে প্রবেশ করতে দেখেছে। সুতরাং আপনি মোহনের যোগাযোগ এর মধ্যে আনতে পারেন কি উপায়ে ভেবে পাই না। পুলিসের ভিতরে এমন একটা বিষয়ে ঝোক দেখা যায় যে, তাহারা প্রথমে যে ধারণা পোষণ করে, তাহা প্রমাণের জন সাক্ষ্য পর্যন্ত তৈয়ার করিতেও দ্বিধা করেন;কিন্তু সেই ধারণা ভুল হইলেও সংশোধন করিতে রাজী হয় না। হরিচরণের অতীত ইতিহাস অত্যন্ত মন্দ, সে জেল খাটিয়াছে, সে চোর অপবাদে শাস্তি পাইয়াছে, সে নষ্টচরিত্র, মদ্যপ, সুতরাং বর্তমান হত্যাকাণ্ডে তাহাকে জড়িত করতে প্রমাণের অভাব ঘটিলেও তাহারা অনুসন্ধান কার্য শেষ করিয়া কেস আদালতে পাঠাইয়া দিল। আদালতে মকদ্দমা ধীরে ধীরে শস্কুক গতিতে বহুদিন ধরিয়া চলিতে লাগিল। বিচারক নিস্পৃহভাবে কার্যকরিতে লাগিলেন। ফরিয়াদী পক্ষ, পুলিসের এ্যাডভোকেট কেস ভালভাবে প্রমাণ করিতে পারিলেন না। অপর পক্ষ বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া এমন জোরাল দাবিতে র্তাহার মক্কেল আসামী হরিচরণের নির্দোষিতা প্রমাণ করিলেন যে হরিচরণের মুক্তি পাওয়া আসন্ন হইয়া উঠিতে লাগিল। ফ্ল্যাটের দ্বার চাবি-বন্ধ অবস্থায় কি প্রকারে রহিল? তবেই দ্বিতীয় চাবি ছিল। কিন্তু সে চাবি কোথায়? ফরিয়াদী পক্ষ তাহা প্রমাণ করিতে পারেন নাই। তাহা ছাড়া হত্যাকার যে-ছুরি