পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀO O Τι মোহন অমনিবাস - কিম্বা ছোরা দিয়া হত্যাকাণ্ড সাধন করিয়াছে, সেই ছুরি বা ছোরা কোথায়? তাহাও প্রমাণিত হয় নাই।” কেস প্রমাণিত হয়নি। আমি বলতে চাই, যে রহস্যময় ব্যক্তি রাত্রি তিনটার সময় সেই বাড়ীতে প্রবেশ করেছিল সেই ব্যক্তিই আসুল হত্যাকার! আর ঘড়িতে রাত্রি এগারোটা বাজাতে দেখানো কি এতই শক্ত ব্যাপার? ঘড়ির কাটা ঘুরিয়ে রাখা চলে না?” হরিচরণ প্রমাণাভাবে মুক্তি পাইল। হরিচরণ কারাগার হইতে মুক্তি পাইল। ছয় মাস ধরিয়া নির্জন সেলে বাস করিয়া উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় দীর্ঘ ছয় মাস কাটাইয়া যখন সে পথে বাহির হইল, তখন স্বাস্থ্য ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। সে সম্পূর্ণরূপে অকৰ্মণ্য হইয়া পড়িল। হরিচরণ বেলেঘাটার এক বস্তিতে একটি খোলার ঘর ভাড়া করিয়া বাস করিতে লাগিল। বিচারের দিনগুলির উত্তেজনা, বিভীষিকায় তাহার দিনরাত্রির মুহুর্তগুলি আতঙ্কময় হইয়া উঠিল। সে পথে বাহির হইলেন বুঝিতে পারিত, তাহাকে কেহ না কেহ অনুসরণ করিতেছে। তাহারা যে পুলিসের চর, সে বিষয়ে তাহার সন্দেহ ছিল না। হরিচরণ দু'এক স্থানে ছদ্ম নামে বাড়ীর চাকরের কাজ যোগাড় করিয়াছিল, কিন্তু সকল জায়গাতেই তাহার আসল পরিচয় প্রকাশিত হইয়া পড়ায় চাকরি নষ্ট হইয়াছে। সুতরাং তাহার জীবন দুৰ্বহ হইয়া উঠিল। আহারের সংস্থান ক্রমশঃ শেষ হইয়া আসিতেছিল, সম্মুখে নিরবচ্ছিন্ন উপবাস ও মৃত্যু। হরিচরণ দুর্ভাবনায় ভাঙ্গিয়া পড়িল। একদিন সন্ধ্যার সময় হরিচরণ একটি চায়ের দোকানে চা-পান করিতেছিল, এমন সময় এক ব্যক্তি চায়ের দোকানে প্রবেশ করিয়া তাহার বিপরীত দিকে বসিলেন ও চায়ের অর্ডার দিলেন। ভদ্রলোকের বয়স চল্লিশ হইবে। পোশাক-পরিচ্ছদ পরিপাটি। তিনি একদৃষ্টে হরিচরণের মুখের দিকে চাহিতেছিলেন। হরিচরণ নিঃসন্দেহ বুঝিল যে, সেই ব্যক্তি অন্য কেহ নহেন, পুলিসের লোক। কিন্তু তাহার সহিত যে কিসের প্রয়োজন, সে বুঝিতে চেষ্টা করিয়া ভয়ে কঁপিয়া উঠিল। সে উঠিয়া যাইবার চেষ্টা করিলকিন্তু আঁতকে তাহর পা দুটি এমন &– কাপিতেছিল যে, তাহা সম্ভব হইল না। ృo আগন্তুক এক কাপ চা হরিচরণের নিকট আনাইয়া দিয়া কহিলেন, “আর এক কাপ পান করুন, বন্ধু।” হরিচরণ জড়িত স্বরে কহিল, “ধন্যবাদ।” আগন্তুক কহিলেন, “ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই, হরিচরণ।” হরিচরণ ভীত কষ্ঠে কহিল, “আমি বিভুতি, হরিচরণ নই।” * ভদ্রলোক হাসিতে হাসিতে কহিলেন, “পাগলামি করো না। তুমি কি বলতে চাও, তুমি যা, তা তুমি নও? পার্ক স্ত্রীটের জমিদার-পত্নীর ভৃত্য নও?” হরিচরণ সকল শক্তি একত্র করিয়া কহিল, “কে হরিচরণ? আমার বাড়ীওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করুন, আমার নাম বিভুতি কিনা!”