পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা ২০৩ হরিচরণের মুখ রক্তশূন্য ও বিবর্ণ হইয়া উঠিল। সে অর্থহীন দৃষ্টিতে চাহিয়া কিছুসময় বসিয়া রহিল। তাহার মস্তক বক্ষের উপর ঝুলিয়া পড়িল। অবশেষে সে কহিল, “হীরককণ্ঠি যদি ফেরত দিই, আপনি আমাকে কি দেবেন?” “একটা আধলাও নয়।” আগস্তুক কহিলেন। “আপনি ঠাট্টা করছেন।” হরিচরণ কহিল, “আমি আপনাকে লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের হীরক-কষ্ঠি দেবো, আর তার বিনিময়ে আমাকে কিছুই দেবেন না?” “হাঁ দেবো। তোমার জীবন-ভিক্ষা দেবো।” আগন্তুক ধীরে কহিলেন। হরিচরণ ভয়ে শিহরিয়া উঠিল। আগন্তুক পুনরায় কহিতে লাগিলেন, “আমার কথা শোন, হরিচরণ। হীরক কঠির কোন মূল্যই তোমার কাছে নেই। কারণ তুমি কোন দিন তা বিক্রয় করতে সাহসী হবে না, পারকেও না। তবে আমন দ্রব্য রেখে লাভ কী?” হরিচরণ কহিল, “কেনবার লোক আছে। তবে আরও কিছুদিন না গেলে....” “আরও কিছুদিন ? তবেই হয়েছে!” আগন্তুক মৃদু হাস্যে কহিলেন। হরিচরণ কহিল, “কেন?” “কেন?” আগন্তুক কহিলেন, “কেন তা বুঝতে পারছ না? তার আগেই আমি পুলিসের কাছে সমস্ত প্রমাণ পাঠিয়ে দেবো। এবার তারা তোমাকে ফঁাসিকাঠে ঝুলিয়ে তবে মুক্তি দেবে।” হরিচরণ হতাশায় ভাঙ্গিয়া পড়িল। সে দুই হাতে মাথা চাপিয়া কহিল, “কখন আপনি চান।” “আজ রাত্রি দশটার মধ্যে।’ আগন্তুক কহিলেন। “যদি না দিই?” হরিচরণ জিজ্ঞাসা করিল। “তাহলে পুলিস কাল সকালেই যাতে তোমাকে গ্রেফতার করে, তার বন্দোবস্ত কোরে দেবো।” আগন্তুক সহজ কষ্ঠে কহিলেন। - হরিচরণ কিছু খাবার চাহিয়া আহার কহিল। পরে উঠিয়া আগন্তুকের দিকে চাহিয়া কহিল, “খাবারের দাম মিটিয়ে দিয়ে আসুন আপনি আমার সঙ্গে।” §o. পথ ঘুরিয়া পার্ক স্ত্রীটে উপস্থিত হইল এবং যে সিগারেটের দোকানে সে হত্যাকাণ্ডের পরদিন প্রভাতে গমন করিয়াছিল, তাহার পিছনে একটি ছোট পার্কে প্রবেশ করিয়া ক্লান্ত দেহে একটি বেঞ্চের উপর বসিয়া পড়িল। (9 “কি ব্যাপার?” ডিটেকটিভ সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করিলেন। “ঐখানে আছে। হরিচরণ আঙ্গুল বাড়াইয়া দেখাইল। . “ওখানে আছে? কি পাগলের মত বকছ তুমি?” মিঃ বসু কহিলেন। “হ্যা, আমাদের সামনেই আছে।” হরিচরণ পুনরায় কহিল। ডিটেকটিভ কঠিন স্বরে কহিলেন, “আমার সঙ্গে চালাকি করো না, হরিচরণ।” হরিচরণ কহিল, “সত্যি বলছি, ঐখানেই আছে।” “কোথায়?” “ঐ দুটো নর্দমার পাথরের মধ্যে।” হরিচরণ বলিল।