পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা &ο 4 অনুরাগের প্রতিদান দিতে হবে। এতদিন পরে তুমি সফল হয়েছ। এইবার চলো মোহন, আর একবার তোমার অদৃষ্ট, তোমার সুখ, শান্তি, তোমার ইহকাল, পরকাল যাচাই কোরে আসবে চলো। যদি দেবী ভক্তের প্রার্থনা পূর্ণ করেন, যদি তিনি এই কঠি গ্রহণ করেন, তবেই তোমার সাধনা সফল হবে। তুমি বর পাবে, তুমি ধন্য হবে।” ট্যাক্সি চালক গঙ্গাতীরে উপস্থিত হইয়া কহিল, “কোন দিকে যাবো, হুজুর?” মোহন ক্ষণকাল চিন্তা করিল, পরে কহিল, “বালীগঞ্জ, মহানির্বান রোড।” ট্যাক্সি চালক বিস্মিত হইল, কিন্তু ট্যাক্সি ঘুরাইয়া পুনরায় যাত্রা করিতেও দ্বিধা করিল না। ট্যাক্সি উল্কাবেগে ধাবিত হইল। 蚌 বন্ধু-সকাশে উপস্থিত হইয়া দসু মোহন হীরক-কঠি অপহরণের সমস্ত বিবরণ বন্ধুর নিকট বিবৃত করিয়া পরিশেষে কহিল, “এমনি কোরেই পাপী সাজা পায়, আর ধাৰ্মিক পুরস্কৃত হয়, অমর!” অমর কহিল, “তা’ বটে ! কিন্তু ডিটেকটিভ সেজে হরিচরণ বেচারাকে তার পাপ অজিত ফল থেকে বঞ্চিত কোরে কি সত্যিই ধামিকের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, দাদা ?” মোহন মৃদু হাস্যে কহিল, “ঠিক বলেছ। আমি স্বীকার করছি, অপরাপর মহৎ কাজের মধ্যে আমার হীরক-কষ্ঠি অপহরণ ব্যাপারেও বিশেষ গর্ব অনুভব করি। সেই হত্যার রাত্রে আমি যে প্রায় এক ঘণ্টা সেই ফ্ল্যাটে কাটিয়েছিলুম, আমার স্মরণে চিরদিন তা থাকবে। ঐ সময়টুকুর মধ্যে আমি নিশ্চিন্তভাবে প্রমাণ সংগ্রহ করেছিলাম যে ধনী মহিলা তার কোন এক ভূত্যের দ্বারা হত হয়েছেন। আমি ভেবে দেখেছিলাম, আমাকে যদি হীরককঠি লাভ করতে হয়, তবে আমাকে...ঐ চাকরটা যাতে গ্রেফতার হয়, অথচ সাজা না পায়, তা’ করতে হবে। সেই কারণের জন্য আমি মেঝের ওপর পতিত ছুরিটাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলুম। মুক্ত দ্বারে চাবি কলের মধ্যে লাগানো ছিল। আমিই আসবার সময় দ্বার চবিবন্ধ কোর চাবিকাঠিটা নিয়ে এসেছিলুম। আর আততায়ীর হাতের রক্তের দাগ দেওয়াল । ও অন্যান্য জায়গা থেকে ঘষে মেজে পরিষ্কার কোরে রেখে এসেছিলাম। আমার মতে অমর হাসিয়া বলিল, “অসাধারণ প্রতিভা।” -8 “হা, প্রতিভা। আর এই প্রতিভা যে অন্য কোন ব্যক্তি মস্তিষ্কে স্ফুরিত হতো না, তা আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি। আমি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছিলাম। হরিচরণের গ্রেফতার এবং মুক্তি সম্ভব করেছিলাম। তারপর আমার উদ্দেশ্য সফল করতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি। যেমন সে পুলিসের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে বার হয়ে এল, সোজা আমার হাতের মধ্যে পড়ল।” অমর বলিল, “শতগুণে কঠিন হাতের মধ্যে, দাদা।” “হাঁ তাই। তাছাড়া এক অপরাধের জন্য দুবার কারও বিচার হয় না। সেদিক দিয়েও আমার বিবেক মুক্ত ছিল।” মোহন মৃদু হাসিয়া বলিল। অমর কহিল, “আহা বেচারী!” মোহন সবিস্ময়ে কহিল, “বেচারী কে? হরিচরণ ? কিন্তু তুমি ভুলে যাচ্ছ, হতভাগা নারী-হত্যা করেছিল। সে একজন খুনী। আমি যদি হীরক-কষ্ঠি সেই খুনী দস্যুর হাতে