পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা Հ ծՎ) করুন। আমি যে সব শেয়ার সার্টিফিকেট চুরি করেছিলাম অমর, সে সব জাল করা কাগজ। সব জাল, জুয়াচুরি। একখানা সত্যিকার দলিল পর্যন্ত তাদের ছিল না।” অমর স্তম্ভিত বিস্ময়ে চাহিয়া রহিল। মোহন ক্রুদ্ধস্বরে বলিতে লাগিল, “সব জাল! প্রত্যেকটি ডিবেঞ্চার, মিউনিসিপ্যাল লোন, গভর্নমেন্ট পেপার, শেয়ার...একটা পয়সাও সেগুলোর দাম নয়। আর তুমি সেই জুয়াচোরদের জন্য আমাকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলো? ওরা আমাকে প্রথম থেকেই খেলার তাস হিসাবে গ্রহণ করেছিল। সিন্দুকের মধ্যে সমস্ত জাল কাগজপত্র রেখে বাজার সরগরম কোরে ফেলেছিল। আমাকে ওরা দূরে দূরে রাখতো;আমার পরিচয় দিয়েছিল যে, আমি স্যার ভৌমিকের স্ত্রীর ধনী আত্মীয়...আমার মিলিয়ন সমস্ত র্তার নামে উইল ক’রে দিয়েছি। আর সেই উইলের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার করেছিল, মহাজনেরা ধার দিতে এতটুকু কাপণ্য করেনি। আমাকে দেখিয়ে একদিন তাই স্যার ভৌমিক তার দুজন মহাজনকে বলেছিল, উনি অত্যন্ত লাজুক, কারও সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করেন না।” অমরের বিস্ময়ের আর অবধি ছিল না। দসু মোহনকেও প্রতারিত করতে পারে, তবে এমন লোকও আছে! -- মোহন বলিতে লাগিল, দুঃখ করবো আমি? তুমি কি জানো অমর, লেডী ভৌমিক আমার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা ঠকিয়ে নিয়েছিল?” অমর হা হা করিয়া হাসিয়া উঠিল। কহিল, “বলেন কী? মোহনকে ঠকিয়েছেন লেউী ভৌমিক ?” মোহন ক্রুদ্ধস্বরে কহিল, “হা, ভাই। তিন মাসের মাইনে তো এক পয়সাও পাইনি, তাছাড়া গরীবদের দুঃখে লেডী ভৌমিকের প্রাণে কেঁদে উঠলেই আমার কাছে টাকা ধার করতেন। দু’শো একশো কোরে দেড় হাজার টাকা আমার কাছ থেকে বার কোরে নিয়েছিল। অনাথা, দরিদ্রকে দান করবেন লেভী ভৌমিক। পরে জানতে পারলুম, তিনি স্বামীর কাছে কিছুই পেতেন না। ঐ টাকা সিনেমা দেখা, এসেন্স, পাউডার, ক্রীম, ভাল নতুন ফ্যাশনের শাড়ী কেনায় ব্যয় করেছেন। দুঃখ করতে বলো ঐ জুয়াচোরদের জন্য! আশচর্য।” * কহিল, “আচ্ছা, রমা কি আমাকে গ্রহণ করবেন?” a৯> এই খাপছাড়া প্রশ্নে অমর হাস্য করিয়া কহিল, “আমি তো তাকে দেখিনি, দাদা।” “দেখোনি সত্য। কিন্তু তার সব কথা শুনেছ! তাতে তোমার কি ধারণা হয়? আমার মত একটা দসু্যকে কি তার মত দেবী গ্রহণ করতে পারেন?” মোহনের স্বর নরম ও কাতরভাবে অমরের কর্ণে প্রবেশ করিল। । অমর কহিল, “যদি না করেন, তবে তাকে দুর্ভাগিনী নারী বলেই ভাববো।” মোহন আর দ্বিতীয় প্রশ্ন করিল না। কিছুসময় নীরবে পায়চারি করিয়া ফিরিয়া কহিল, “আমার ঘুম পেয়েছে, অমর। গত তিন রাত্রি চোখের পাতা এক হয়নি আমার। গুড় নাইট!”