পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S S o মোহন অমনিবাস I রমার কাকীমার নাম মিসেস সবিতা গুহ। সবিতা দেবী কহিলেন, “না দেখিনি। তবে তার এত ছবি সংবাপত্রে দেখেছি, তাতে তাকে খুব পরিচিত বোলেই মনে হয়। কিন্তু তার কোন ছবিই অপর ছবির সঙ্গে মেলে না। তা হলেও আপনার মুখ অবিকল মোহনের মত।” উৎপল বিষগ্ন মুখে কহিল, “আপনি সত্যি কথাই বলছেন। কারণ আমার অন্যান্য বন্ধুবান্ধবও এই কথা বলেন।” সবিতা দেবী কহিলেন, “সত্য বলছি উৎপলবাবু, যদি আপনি সরোজের বন্ধু না হতেন এবং প্রসিদ্ধ গায়ক ও আর্টিস্ট না হতেন, তা’ হ’লে আমি নিশ্চয়ই সরোজকে পুলিসে খবর দিতে বলতাম।” সকলে উচ্চশব্দে হাস্য করিয়া উঠিলেন। কিন্তু রমা মুখ গম্ভীর করিয়া নীরবে বসিয়া রহিল। রায়বাহাদুর হাসিতে হাসিতে কহিলেন, “শেষে দেখছি, মোহন আমাদের আর সব আলাপ আলোচনা ছড়িয়ে তারই নাম জপ করিয়ে ছাড়বে। কোথায় সরোজ ভায়ার বন্ধুর একখানা হিন্দি গজল শোনবার জন্য অপেক্ষা করছি না, আপনারা নিয়ে এলেন দস্য মোহনকে। ভাল কথা....” বলিয়া তিনি উৎপলের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “ভায়া তো শুনলুম, সোজা কলকাতা থেকে আসছেন। স্যার ভৌমিকের সম্বন্ধে কিছু জানেন কি? কাগজওয়ালারা লিখেছে যে তার হাজার নয়, একেবারে এক কোটি টাকার শেয়ার ডিবেঞ্চার নাকি মোহন চুরি করেছে।” উৎপল কহিল, “আমিও তাই দেখেছি। কিন্তু যারা স্যার ভৌমিকের সঙ্গে পরিচিত হবার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, তারা অবশ্য ভিন্ন কথা বলেন।” রায়বাহাদুর প্রাতের সংবাদপত্র-পাঠকারী ভদ্রলোকের দিকে একবার চাহিয়া কহিলেন, “পথে আসুন এইবার!” - “দামী কথা বলেছেন ভায়া—যারা স্যার ভৌমিককে চেনেন, তারা ভিন্ন কথা বলেন। আরে, ভৌমিক—যে পাঁচ হাজার টাকা ধার করে বলে যায়, কলকাতায় পৌছেই পাঠিয়ে দেবো, আর ফাকি দেয়—সে লোকের যাবে এক কোটি টাকা! গাজা, গাজা, সংবাদপত্রের গাজা! আপনিও ত তাই বলেন, উৎপলবাবু?” അ উৎপল মৃদুহাস্য করিয়া কহিল, “দুষ্ট লোকে বলে, তার এক আধলার সম্পদও মোহন রায়বাহাদুর কহিলেন, “আলবত পারেনি। যাই, আমার গৃহিণীকে এই সুখবরটা দিই গে।" রায়বাহাদুর ব্যস্ত হইয়া বাহির হইয়া গেলেন। XX উৎপল একবার রমার দিকে সহসা চাহিতেই দেখিল, সে তাহার মুখের উপর একাগ্র দৃষ্টিতে চাহিয়াছিল, তাহার দৃষ্টি পড়িতেই মুখ নত করিয়া বসিল। সবিতা দেবীর পাশ্বে রমার এক সহচরী বসিয়াছিল—নাম কুমারী ধীরা। প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে পড়ে। কহিল, “সরোজদা, আপনার বন্ধুর গান শুনতে পাবো না? আপনার কথার সত্যতা যাচাই করা আমাদের প্রয়োজন যে !” - সরোজ কহিল, “আজ আর আপনার নিস্কৃতি নেই, উৎপলবাবু।” উৎপল কহিল, “আমি তো নিস্কৃতি চাই না।” উৎপল উঠিয়া পিয়ানোর নিকট গেল এবং দুমিনিট ধরিয়া পিয়ানোটি পরীক্ষা করিয়া