পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ՀՖ একজন দারোয়ান নিয়ে আশুবাবুর বাড়ীতে যাও, গিয়ে তাকে বলো, আমি এই দারোয়ান তার বাড়ী পাহারা দেবার জন্য পাঠিয়েছি। সব খরচ আমার। আর দারোয়ানকে কড়া হুকুম দিয়ে দাও, সে যেন এক আশুবাবু ছাড়া আর কোন পুরুষ মানুষকে বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করতে না দেয়। আচ্ছা শোন, একজন নয়, দুজন দারোয়ান নিয়ে যাও।” বিজন রায় কহিল, “উত্তম যুক্তি।” “আরও শোন। আশুকে বলবে, সে যদি ঐ সুদৰ্শন ছোড়াটাকে বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়, তবে আমি অত্যন্ত অসুখী হবো। অবশ্য তুমি আপনি আজ্ঞে বোলে কথা বলবে। বুঝেছ? হা আর এক কথা, কি বলছিলাম ছাই—মাথা দেখছি খারাপ হয়ে যাবে এবার। ঐ একরত্তি মেয়েটার জন্যে কেন যে—না, না শোন, যাও তুমি, কিছুতেই যেন ঐ ছোড়াটা আশুবাবুর বাড়ীতে না প্রবেশ করে। যাও।” বিজন রায় বাহির হইয়া গেল। বিকারগ্রস্ত বৃদ্ধ চক্ষু মুদিত করিয়া শোফার উপর শয়ন করিলেন। ঘড়িতে ঢং ঢং করিয়া রাত্রি ৯টা বাজিল। সহসা বৃদ্ধ চমকিত হইয়া উঠিল। (م ) দসু মোহন প্রেরিত প্রথম ভীতি-প্রদর্শক পত্ৰখানি দুইদিন বাদে দৈনিক পত্রিকা বাঙলার ডাকে বৃহৎ অক্ষরে হেডিং দিয়া বিশিষ্ট পাতায় প্রকাশিত হইয়া সারাদেশে আলোড়ন তুলিল। আমরা নীচে সংবাদটি উদ্ধৃত করিলাম। দসু্য মোহনের সতর্ক-বাণী বৃদ্ধ জমিদারের বিবাহের সাধে বাদ আদেশ না মানিলে মৃত্যুদণ্ড দসু মোহনের সমাজ-সেবক-মূর্তিতে আবির্ভাব আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে অবগত হইলাম যে, দসু মোহন বীণানগরের প্রতাপশালী ধনী বৃদ্ধ জমিদার নীলরতন সরকারকে একখানি অপূর্ব শব্দবিন্যাসযুক্ত পত্র লিখিয়া (পত্ৰখনি অন্যত্র প্রকাশিত হইল)—আমরা গত সপ্তাহে যে অসমবিবাহের বিবরণ প্রকাশিত করিলে বিবাহের রাত্রে অর্থাৎ ২০শে বৈশাখ রাত্রি ৯ ঘটিকার সময় উক্ত জমিদারকে মৃত্যু আলিঙ্গন করিতে হইবে। আমরা পত্ৰখানির বিষয় অবগত হইয়া একাধারে স্তম্ভিত ও বিস্মিত হইলাম। শুনিলাম । যে, জমিদার নীলরতন সরকার পত্ৰখানি পুলিসের হাতে তুলিয়া দিয়া তাহার কর্তব্য সম্পাদন করিয়াছেন। পুলিস দসু মোহনকে গ্রেপ্তার করিবার জন্য ইতিপূর্বে দশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়াছিল। তাহারা এইরূপ আকস্মিক ভাবে মোহনের সংবাদ পাইয়া অত্যন্ত উল্লসিত হইয়া উঠিয়াছে এবং তাহাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, এইবার তাহারা দসু্য মোহনকে গ্রেপ্তার করিতে সক্ষম হইবে। -