পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૨ মোহন অমনিবাস * বোলে সন্দেহ হচ্ছে, তেমনি রমার সন্দেহ হওয়াও স্বাভাবিক। তাছাড়া, সে তিনদিন তিনরাত্রি সেই দস্যুটাকে বন্ধু ভেবেই পরিচিত হয়েছিল কি-না, তাই বোধ হয় উৎপলবাবুর সান্নিধ্য তার পক্ষে দুৰ্বহ হয়ে উঠেছে।” সবিতা দেবী হাসিয়া উঠিলেন। সরোজ কহিল, “তা’ হ’লে উৎপলবাবু, আপনি আমার বাড়ীতে ‘মোহন’ হয়ে দাঁড়ালেন দেখছি। কিন্তু বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন বোলে মনে হয় না। কারণ...” উৎপল বিস্মিত স্বরে কহিল, “কারণ কী বলুন ?” সরোজ কহিল, “কারণ মোহনের পরম শত্র ও একমাত্র যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী মিঃ বেকার আগামী পরশ্ব অপরাহু ৪টার সময় এসে পৌছাবেন—এই মর্মে পুলিস অফিসে তার এসেছে।” উৎপল সবিস্ময়ে কহিল, “বেকার সাহেব আসছেন? কেন? দসু্য মোহনের গতিবিধি এস্থানে হয়েছে বোলে কিছু সংবাদ পাওয়া গেছে কী?” - সরোজ কহিল, “হা, কলকাতা থেকে সংবাদ এসেছে যে মোহন তাজমহল দেখ{ে চলেছে।” o সহসা উৎপল কহিল, “চলুন সরোজবাবু, মোহনের জন্য অপেক্ষা না কোরে আন্ধ রাত্রে আমরা তাজমহল দেখা কাজটা সেরে রাখি।” o সবিতা দেবী কহিলেন, “মোহনের অবশ্য তাড়া থাকবার কথা, কিন্তু আপনার এর তাড়া কেন, উৎপলবাবু?” কুমারী ধীরার পাশে উপবিষ্ট যে যুবকটি এতক্ষণ নীরবে বসিয়া শুনিতেছিল, ব “কিছুই বলা যায় না। সুতরাং উৎপলবাবু যদি কাজ সেরে রাখেন, মন্দ কী?” # সকলে হাসিয়া উঠিলেন। উৎপলের এরূপ ধরণের বিদ্রুপও যেন সহিতেছিল না। ীে “তাজমহল যে এমন মহান, এমন বিরাট, এরূপ সুন্দর, চোখে না দেখলে কিছুতেই ধারণা হয় না।” উৎপল অদূরে দণ্ডায়মান রমার মুখের দিকে একবার চাহিয়া সরোজকে উৎপলের মুগ্ধদৃষ্টি, বিস্ময়-প্লাবিত মুখমণ্ডল দেখিয়া সরোজ কহিল, “আপনার মত | রূপকে হারিয়ে ফেলেছি। তবুও এইটুকু বলতে দ্বিধা আসে না যে, এমন বিরাট সৃষ্টি যে কোন দেশের গর্বের বস্তু।” সবিতা দেবী মৃদু হাস্যমুখে কহিলেন, “পূর্ণিমার রাত্রে তাজকে না দেখলে সত্যই তাজকে পূর্ণরূপে দেখা হয় না। পূর্ণিমার রাত্রে মনে হয়, যেন গলিত রজত বন্যার মহাপ্লাবন আরম্ভ হয়েছে। নব নব রূপে তাজের স্বপ্ন মায়া-মূর্তি ধরতে থাকে। মানুষকে মুগ্ধ-বিস্ময়ে ভাবতে হয়, ক্ষুদ্র মানুষ, তুচ্ছ মানুষ তার মনেও এতখানি সৌন্দর্যের ধারণা ধরা ছিল!” উৎপলের দুটি চক্ষু ভরিয়া স্বপ্ন ফুটিয়া উঠিল। কহিল, “মনে আশা ছিল, তাজের রূপ আমি তুলিতে ধোরে নিয়ে যাবো। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে সে আশা আর সফল হবে না। যদি কখনও আবার সুযোগ হয়, তখনকার জন্য অপেক্ষা করা ভিন্ন আর গত্যন্তর নেই।” এ