পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা ՀՀ Փ মোহন কাজে মনোনিবেশ করিয়াছিল, সরোজ একখানি ইংরাজী নভেল লইয়া বসিয়াছিল। রমা টেবিলের অন্যপাশ্বে বসিয়া একখানি সচিত্র মাসিক পত্রিকার পাতা উলটাইয়া যাইতেছিল। রমা একবার ভাবিল, সে উঠিয়া যাইবে;কিন্তু ইচ্ছা থাকিলেও কার্যতঃ করিল না। সে নীরবে বসিয়া অর্থহীন দৃষ্টিতে মাসিক পত্রিকা লইয়া খেলা করিতে লাগিল। সংবাদপত্রে একটি সংবাদ মোহনের দৃষ্টি বিশেষভাবে আকর্ষণ করিল। সংবাদটি এইরূপ ৪— “সুপ্রসিদ্ধ দসু মোহন তাজমহল-দর্শনে আগ্রা অভিমুখে যাত্রা করিয়াছে। কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করিতেছেন যে, তাজমহল দেখিবার দৃষ্টি ও অবসর মোহনের একান্ত অভাব। নিশ্চয়ই কোন বৃহৎ লাভের আশায় এই অসমসাহসিক বিখ্যাত দস্যু আগ্রা গমন করিয়াছে! অতএব আমরা আগ্রা-নিবাসী ধনকুবেরগণকে সাবধান হইতে নির্দেশ দিতে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়াছি। যদিও এইরূপ সাবধানতার মূল্য মোহনের বিপক্ষে মূল্যহীন, তবুও আমাদের কর্তব্য আমরা সাধন করিলাম। আগ্রাবাসীর পক্ষে সুসংবাদ এই যে, মোহনের চিরশত্রু, একমাত্র যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী চীফ ৬িটেকটিভ ইনস্পেক্টর মিঃ বেকার অদ্য রাত্রে পাঞ্জাব মেলে আগ্রা গমন করিতেছেন। আমাদের বিশ্বাস আছে, মোহন তাহার এই শত্রর উপস্থিতির জন্য, ইচ্ছা থাকিলেও তাহার আশা পূর্ণ করিতে সক্ষম হইবে না। আমাদের আশা সফল হউক।” মোহন দুইবার এই অংশটি পাঠ করিল এবং পরে তাহা সরোজের দিকে বাড়াইয়া দিয়া কহিল, “পড়ুন।” সরোজ ঐ অংশটুকু পাঠ করিয়া কহিল, “অদ্ভুত যুক্তিসম্পন্ন লোক সত্য বলতে কী উৎপলবাবু, মোহনকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভক্তি করি।” উৎপল সবিস্ময়ে কহিল, “একটা হীন দস্যকে এতখানি সম্মান দেওয়া আপনার উচিত ০চ্ছে কী?” সরোজ প্রতিবাদ করিয়া কহিল, “দসু্যতা যে অতি হীন কাজ, তা আমি স্বীকার করছি। কিন্তু মোহনের উদ্দেশ্যের প্রশংসা না করলে ধর্ম বাঁচে না। যে লোক ধনীর অনাৱশ্যক অর্থ নিয়ে দরিদ্রের আবশ্যকতা পূর্ণ করে, দেশের আইনে তা অপরাধ হতে পারে, কিন্তু মনের আইনে কোন অপরাধ হয় না। হয় কী?” ക് উৎপল মৃদুহাস্য করল। চকিতে রমারদিকে চাহিতে দেখিল,তাহারমুখ আনন্দালোকিত ০ইয়াছে। কহিল, “আপনার নীতিতে বিশ্বাসী একটা বিচারককেও আপনি পাবেন না।” সরোজ কহিল, “তা জানি। শুধু বিচারকই কেন, আমার বোনটি এখনি মোহনকে তীব্র ৬যায় নিন্দা করবে। কি রে রমা, তুই তো সেদিন নিন্দা করছিলি—না-রে?” রমা নত মুখে কহিল, “বা রে! আমি আবার নিন্দা করলুম কখন ? উৎপল স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “হতভাগ্য মোহন যদি আমাদের এই আলাপ riনতে পেতো, তা’ হ’লে সে এই ভেবে সাস্তুনা পেতো, সে নিজেকে যতটা হতভাগ্য ৬াবে, বাস্তবিকই সে ততটা পরিমাণে হতভাগ্য নয়। কিন্তু কথা হচ্ছে কি জানেন সরোজবাবু, মানুষ তার মনের অবস্থানুসারে মানব-সমাজের কাছে যদি অত্যাচারিত হয়, বিনাদোষে যদি মোহন (১ম)-১৫