পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে 는 8) রায়বাহাদুর সহসা নীরব হইলেন। সরোজ মৃদু হাসিয়া কহিল, “উপসংহার করুন দাদু?” যখন মুখ ভার করে থাকে, আহারে রুচি নেই বলে, সকল সময়ে মিলিটারী মেজাজ দেখায়, তখনই বুঝতে পারি এই সব লক্ষণে কোন রোগ প্রকাশ পাচ্ছে।” রমার রক্ত-অধরে ক্ষীণ হাস্য ফুটিয়া উঠিল। সে কহিল, “সব মানুষই কি একই রোগে ভোগে, দাদু?” রায়বাহাদুর সহসা সশব্দ হাস্যে মুখরিত হইয়া উঠিলেন;হাসি থামিলে কহিলেন, “যে রোগের কথা বলছি, ভাই, সব মানুষই অল্প বিস্তর সেই একই রোগে ভোগে। কিন্তু তর্কের খাতিরে যদি রোগের বিভিন্নতাও ধরে নেওয়া যায়, তা হলেও রোগ নিরাময়ের ওষুধ প্রায় সর্বক্ষেত্রেই এক।” সরোজ কহিল, “কি ওষুধ, দাদু?” “মোক্ষম ঔষধ ভায়া, বিবাহ দেওয়া। এত মত বিশল্যকরণী আর ভূ-ভারতে দ্বিতীয় খুঁজে পাবে না। অপ্রকৃতিস্থ, তপ্ত, কুপিত মন ও মেজাজ তুহিন-শীতল তুষারের চেয়েও কোমল হয়ে পড়ে। সুতরাং আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ রমা দিদির কাছে যে, মন স্থির করে...” - রায়বাহাদুরের কথা শেষ হইবার পূর্বেই রমা দ্রুতপদে ড্রইংরুম হইতে বাহির হইয়া গেল। রায়বাহাদুর উচ্চ শব্দে হাসিয়া উঠিলেন। মিঃ সোম প্রবেশ করিয়া রায়বাহাদুরকে নমস্কার করিলেন এবং একখানি চেয়ারে বসিয়া কহিলেন, “আপনার দেহ ভাল আছে?” “হাঁ বাবা, দেহ ভাল আছে,কিন্তু তোমরা আগ্রা ছেড়ে যাবে ভেবে মন উদ্বেগে ভরে উঠেছে।” রায়বাহাদুর গম্ভীর মুখে কহিল। মিঃ সোম কহিলেন, “মেয়েটার স্বাস্থ্য এখানে যে ভাল থাকছে না, নইলে আপনাদের ছেড়ে কি কলকাতায় যেতে ইচ্ছা করে।” :^*. কোন মতে কর্তব্য নয়।” പ് “তা কি বুঝি না, কাকাবাবু? কিন্তু ওর দেহ না সারলে বিবাহ দেওয়ার চিন্তা করতে পারি কি? কলকাতায় ডাঃ মিস সরকারকে দিয়ে রমার চিকিৎসা করার মনস্থ করেছি।” রায়বাহাদুর ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিলেন, “দসু মোহনের কোন খবর আর পাওনি?” মিঃ সোমের মুখে হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি কহিলেন, “কেন বলুন তো? আপনি কি মোহন-বিভীষিকা থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেন নি?” রায়বাহাদুর কহিলেন, “সত্যি বলতে কি, আমি কিছুতেই এই মহাপুরুষটিকে ভুলতে পারছি না। তাছাড়া তার একমাত্র যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী মিঃ বেকার এখন বিলাতে, তার একচ্ছত্র আধিপত্যের সুযোগ কেন যে সে এখনও নেয়নি; ভেবে আমার আশ্চর্য লাগে। যখন সে যা খুশি তাই করতে পারে, তখন কেন যে সে এমন চুপচাপ বসে রয়েছে, ভাববার কথা নয় কী?” মোহন (১ম)-১৬