পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ8 Ն মোহন অমনিবাস পুলিস-সাহেব কহিলেন, “ভগবানকে ধন্যবাদ যে, আপনি অক্ষত-দেহে পরিত্রাণ পেয়েছেন। আপনার রিপোর্ট আমরা এখনি শুনব, কিন্তু তার আগে মৃতদেহ একবার দেখতে চাই। আসুন, ডাক্তার!” মিঃ সোম তাহার শয়ন-কক্ষের দ্বার মুক্ত করিয়া দিলে, সকলে ভিতরে প্রবেশ করিলেন। কক্ষের মধ্যে কয়েকখানা চেয়ার ও একখানা টেবিল উল্টাইয়া পড়িয়া রহিয়াছে। মৃতদেহ একখানি শুভ্র চাদরে ডাক্তার ঢাকা দিয়া রাখিয়াছেন। মিঃ স্যানিয়েল রক্তাক্ত ছোরাটি একবার পরীক্ষা করিয়া সন্তপণে পুনরায় যথাস্থানে রাখিয়া দিলেন। ডাক্তার কহিলেন, “আমার মতে, মিঃ ঘোষালের মৃত্যু সঙ্গে সঙ্গে হয়েছে। ছোরার এক ঘাই যথেষ্ট হয়েছিল।” মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “ছোরাখানা নিশ্চয়ই মিঃ সোমের। কারণ এই রকম আর একখানা ছোরা ড্রইংরুমের দেওয়ালে রয়েছে দেখেছি। তাছাড়া এই ছোরাটার স্থান শূন্য পড়ে রয়েছে। কেমন, তাই না, মিঃ সোম?” মিঃ সোম কহিলেন, “আজ্ঞে হা। আপনার ধারণাই ঠিক।” পুলিস-সাহেব আরও কয়েকটি প্রশ্ন ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করিয়া মিঃ সোমকে কহিলেন— “এইবার আপনি বলুন, কি হয়েছিল?” মিঃ সোম কহিলেন, “আমি নিদ্রা যাচ্ছিলাম, এমন সময়ে মিঃ ঘোষাল আমার গায়ে হাত দিয়ে আমাকে জাগরিত করেন। সে সময়ে আমি একটা কু-স্বপ্ন দেখছিলাম, হঠাৎ জাগরিত হয়ে দেখি, মিঃ ঘোষাল খাটের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাকে দেখে মনে হ’ল, তিনি অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন। তিনি নিম্নস্বরে বললেন, “ড্রইংরুমে চোর ঢুকেছে, আমি শব্দ শুনতে পেয়েছি।” আমি নিঃশব্দে খাট থেকে নেমে ড্রইংরুমের দ্বার মুক্ত করি। এমন সময়ে একটা লোক এক লাফে আমার সামনে এসে আমার নাকের ওপর এক ঘুষি মারে, সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। এই মোটামুটি ঘটনা আমার এখন মনে পড়ছে। কারণ এমন অতর্কিতে সব কিছু ঘটে যায় যে, কিছুমাত্র ঘটনা ধারণা করা যায় না।” পুলিস-সাহেব কহিলেন, “তারপর?” of “তারপর কিছুই আমার স্মরণ নেই। আমি মূৰ্ছিত হই। যখন আমার কন্যার চিৎকারে “না, কারুকেই না।” “আপনার কোন শক্র নেই?” “আমি জানি না।” মিঃ সোম চিন্তিত স্বরে কহিলেন। “মিঃ ঘোষালের কোন শত্রু ছিল কি? - “মিঃ ঘোষালের ? শক্র? তার মত দ্বিতীয় সদাশয় ব্যক্তি পৃথিবীতে আছে কি-না জানিনে। যদিও কয়েক মাস যাবৎ মিঃ ঘোষাল আমার সেক্রেটারীরূপে কাজ করছিলেন, ,তবুও তার গত বিশ বছরের যে ইতিহাস পেয়েছি, তাতে তাঁর অসংখ্য শুভাকাঙ্খী বন্ধু ছাড়া আর কিছু আছে বলে ধারণা করতেই পারা যায় না।”