পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ર૭ মোহন অমনিবাস মিঃ স্যানিয়েল বিন্দুমাত্র লজ্জিত না হইয়া কহিলেন, “বিপদ এই যে, আমরা কেউই দসু্যকে চোখে দেখিনি। সে কোন জাত কোন দেশের লোক তাও আমরা জানিনে। সে বাঙলা লেখে বোলে, বাঙালীই যে হবে তার প্রমাণ কী? সে ইংরাজীও জানে, হিন্দুস্থানীতেও পত্র দেয়। উর্দু, নাগরী, গুরুমুখী, ফ্রেঞ্চ, জারমানী সব ভাষাতেই পণ্ডিত সে। সবার ওপর পুরুষ কি নারী বা কি যে সে, আমরা কিছুই জানি না। যে সব লোক লুষ্ঠিত হয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ দেখেছে তাকে মুখোশ পরে উপস্থিত হতে, কেউ দেখেছে বৃদ্ধের ছদ্মবেশে, কেউ দেখেছে ইউরোপীয়ান বেশে, কেউ দেখেছে তরুণ যুবকের সাজে। তবেই এমন লোককে খুঁজে বার করা অসম্ভব বললেও বেশি বলা হয় না। এই মুহুর্তে সে যে এই অফিসেই ঘুরে বেড়াচ্ছে না বা রাস্তায় ঐ যে ভিখারীটা আজ ভিক্ষা মাগছে, ও যে মোহন নয়, তাই বা কে বলতে পারে, স্যার ?” কমিশনার অত্যন্ত গম্ভীর মুখে কহিলেন “আমি ভেবেছিলাম, জমিদার নীলরতনকে লেখা পত্রের বিষয় গোপন রেখে দসু্যকে গ্রেপ্তার করবার চেষ্টা করবো, কিন্তু বাঙলার ডাক পত্ৰখানা বার করে দিয়ে যে ক্ষতি করলো, তার পূরণ হবে না। দেশের তরুণ সম্প্রদায় এই দদুটিকে ঘৃণা করা দূরে থাকুক, তাদের নেতার সম্মানে সম্মানিত করতে এতটুকু দ্বিধা করে না। এই যে পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে, এর মূলে কুঠারাঘাত করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে, মিঃ স্যানিয়েল। এদিকে হোম-মেম্বার প্রায় প্রত্যহই আমাদের টেলিফোন কোরে জানতে চান, দসু মোহনের গ্রেপ্তারের আর দেরি কত? যাই হোক, আপনি সব কাজ ছেড়ে এখন দেখুন, যদি এই শান্তিভঙ্গকারী দসু্যটাকে গ্রেপ্তার করতে পারেন।” মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “আমি কোন প্রতিজ্ঞা করতে পারিনে, স্যার, তবে আমার প্রচেষ্টা আজ থেকে দ্বিগুণ করব। আমার মনে হয়, পুরস্কারের মাত্রা ডবল কোরে এই কথা ঘোষণা করা যাক যে, দসু মোহনের সম্বন্ধে এমন কোন খবর কেউ যদি দিতে পারে, যার ফলে দসুকে গ্রেপ্তার করা যায়, এমনকি সে যদি দসুর কোনও সহচরও হয়, তবে গভর্নমেন্ট তাকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমা করবেন এবং শিহাজার টাক পুরস্কার দেবেন। তাহলে হয়তবা মোহনের কোন অনুচর তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করলেও করতে পারে।” কমিশনার মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “বেশ, আমি হোম-মেম্বারের সঙ্গে পরামর্শ কোরে তেমন ঘোষণারই বন্দোবস্ত করছি। কিন্তু আমার মনে হয়, মোহনের কোন অনুচরই তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। তবু দেখা যাক চেষ্টা কোরে।” মিঃ স্যানিয়েল উঠিয়া অভিবাদন করিয়া বাহির হইয়া গেলেন। কমিশনার নীরবে চিন্তা করিতে লাগিলেন। এই সময়ে দ্বারে প্রহরী-সাজেন্ট প্রবেশ করিয়া একখানি ভিজিটিং কার্ড কমিশনারের হাতে দিল । কমিশনার কার্ডখানি পড়িয়া দেখিলেন যে, সুবিখ্যাত আর্টিস্ট মিঃ উৎপল বসু দেখা করিতে আসিয়াছেন। সহসা তাহার স্ত্রীর অনুরোধ মনে পড়িল—তিনি উৎপলের ছবি কিনিবার জন্য জেদ প্রকাশ করিয়াছেন; প্রকাশ্যে কহিলেন, “ভিতরে আসতে দাও।” সাজেন্ট বাহির হইয়া গেল ও অবিলম্বে সুবিখ্যাত আর্টিস্ট মিঃ উৎপল বসু প্রবেশ