পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ(Ճ 8 মোহন অমনিবাস রমা সহসা উঠিয়া দাঁড়াইল দেখিয়া রায়বাহাদুর চিৎকার করিয়া কহিলেন, “না, দিদি তোমার যাওয়া চলবে না। যেমন শিবহীন যজ্ঞ হয় না, তেমনি রমাহীন এই ড্রইংরুমেরও কোন আকর্ষণ থাকে না। বস ভাই, অনেক আশা করে আসছি, সন্ধ্যাটা তোদের সঙ্গে আরামে কাটাব। আমার সে আশায় বাদ সাধিস নে, দিদি।” রমার মুখে ক্ষীণ হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে পুনরায় ধীরে ধীরে উপবেশন করিয়া কহিল, “একটু চা খাবেন না, দাদু?” “নিশ্চয়ই খাব। কিন্তু চা খেতে হ’লে তোমাকে যদি এই ঘর ছেড়ে যেতে হয়; তাহলে নিশ্চয়ই খাব না।” সহসা সশব্দ হাস্যে রায়বাহাদুর উচ্ছসিত হইয়া উঠিলেন। রমা অগ্রজের দিকে অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে চাহিলে, সরোজ একজন ভৃত্যকে আহ্বান করিয়া তাহাদের জন্য চা ও খাবার আনিবার আদেশ দিল। রায় বাহাদুর কহিলেন, “এইবার আসল কথায় আসা যাক, ভায়া। আচ্ছা তার পূর্বে পুলিসে কি বলে শুনি। তারা কি বলে, ভায়া?” সরোজ কহিল, “কিছুই বলে না, দাদু।” “হু। তা তো বলবে না! পুলিসের হাতে চোর ধরে তুলে দাও, তারা ঢাক পিটে কানে তালা ধরিয়ে দেবে! কিন্তু এ যে বড় শক্ত ঘানি। দিল্লীর ডেলী নিউজ পড়েছ?” “পড়েছ—বেশ। এখন কথা হচ্ছে, এমন একজন লোককে আমাদের রমা দিদি বুলেট বসিয়েছেন, যার জন্য ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ট সার্জনকে প্রয়োজন হয়, দশ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নেয়, প্রাইভেট কারে দিল্লী থেকে ডাক্তারকে কিডন্যাপ করে আনতে সক্ষম হয়। তবেই মোহন ছাড়া এমন কে মহাপুরুষ ভারতবর্ষে আছেন, যার জন্য আমন আয়োজনও এমনভাবে করা যেতে পারে, ভায়া ? তোমরাও এদিকটা দেখছ না, আর পুলিসও না।" সরোজ চিন্তাম্বিত স্বরে কহিল, “কিন্তু মোহনের উদ্দেশ্য কি থাকতে পারে, দাদু?" “ওই হ’ল একমাত্র পয়েন্ট, ভায়া! মোহনের এক্ষেত্রে কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে, যার জন্য একজন সম্মানিত কর্মচারীকে হত্যা করবারও প্রয়োজন হয়। যে মস্তিষ্ক এই ব্যাপারটর সমাধান করতে পারবে, সেই সমস্ত কেসটির কিনারা করতে সক্ষম হবে।” সরোজ কহিল, “মোহন ছাড়া কি আর ভারতবর্ষে দসু নেই, ঠাকুরদা?” । “আছে, প্রচুর পরিমাণেই আছে। কিন্তু ভায়া, মোহন একটাই আছে, দ্বিতীয় রায়বাহাদুর কহিলেন। সরোজ মৃদু হাসিয়া কহিল, “দাদুর কথা যদি সত্য হয় যে, মোহনই এক্ষেত্রে হত্যাকারী, তা হলে আপনার আনন্দ ও গর্ব প্রকাশ করা কি ক’রে সম্ভব হচ্ছে, দাদু?” রায়বাহাদুর হাসিয়া উঠিলেন ও কহিলেন, “এইবার বুদ্ধিমানের মত একটা কথা বলেছে, ভায়া। কারণ যে মোহনের ভয়ে আমি আত্মহারা হয়ে মুক্ত-কচ্ছ হয়ে পড়ি, সেই মোহনের আবির্ভাবে কেন এতটা উচ্চকণ্ঠ হয়ে পড়েছি! কিন্তু ভায়া, তুমি ভুলে যাচ্ছ যে, মহাপুরুষ-মোহন রমাদির বুলেটের ঘায়ে কিছুদিনের জন্য কর্মহারা হয়ে পড়েছে। সুতরাং বর্তমানে অস্থির হবার কোন সঙ্গত হেতুই আমি দেখতে পাচ্ছি না।” ك