পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে ኟ¢¢ বেয়ারা চা ও খাবার পরিবেশন করিয়া গেল। রায়বাহাদুর চায়ের কাপে চুমুক দিয়া কহিলেন, “আর একটা নতুন খবর শুনেছ, ভায়া?” রমা এতক্ষণ ক্লান্ত ভাবে দুটি চক্ষু মুদিত করিয়া আলোচনা শুনিতেছিল, রায়বাহাদুরের উক্তি শুনিয়া চক্ষু মেলিয়া চাহিল। তাহার দুটি চক্ষুতে উদ্বেগ ফুটিয়া উঠিল। রায়বাহাদুর কহিলেন, দিল্লীর পুলিস আগ্রা-পুলিসের সহযোগিতায় দিল্লী ও আগ্রার পথে যতগুলি সরাই আছে, সব সরাইগুলি সার্চ করতে আরম্ভ করেছে।” সরোজ কহিল, “হেতু ?” - “ঐ যে ডাক্তার রায় বলেছেন, তিনি সরাইয়ের ভিজে স্যাতসেতে ঘরে তার রোগীকে অপারেশন করেছেন অমনি পুলিস ছুটাছুটি আরম্ভ করে দিয়েছে।” রায়বাহাদুর হাসিতে, হাসিতে কহিলেন। সরোজ কহিল, “ঠিক পথেই চলেছে তারা।” রায়বাহাদুর হাতের কেকখানা প্লেটের উপর রাখিয়া, টেবিলের উপর একটি মুষ্ট্যাঘাত করিয়া কহিলেন, “ঠিক পথে চলেছে—না আর কিছু যে ডাক্তার দসু্যদের ভয়ে একটা সত্য কথা বলতেও সাহস পায়নি, সে এমনি নিবোধ যে, এত বড়ো একটা ভুল করে বসবে। সাধে আমার দুঃখ হচ্ছে যে, এই সময়ে যদি মিঃ বেকার থাকতেন, তা’ হ’লে কবে সম্যসার সমাধান হয়ে যেত।” - “মিঃ বেকার নেই, কিন্তু মিঃ স্যানিয়েল আছেন।” সরোজ সশ্রদ্ধ স্বরে কহিল। রায়বাহাদুর কি একটা মন্তব্য করিতে গিয়া সহসা নীরব হইলেন। রমার দিকে চাহিয়া সহসা তাহার স্মরণ হইল যে, তিনি এত সময় অবধি কথা কহিতেছেন, কিন্তু রমা একটি শব্দও উচ্চারণ করে নাই। রায়বাহাদুর বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “রমা, তোর কি মন ভাল নেই, ভাই?” - “দেহ ভাল নেই, দাদু!” রমা ধীর স্বরে কহিল। “আচ্ছা, তুইও কি মোহনকে চিনতে পারিস নি?” রায়বাহাদুর আগ্রহভরে প্রশ্ন করিলেন। “না।” রমা ধীর স্বরে কহিল। இ' “এখনও কি তোর বিশ্বাস হয় না যে, সে অন্য কেউ নয়, জামাদের মোহন?” সরোজ সবিস্ময়ে কহিল, “আমাদের মোহন, দাদু?” সে “আলবত আমাদের মোহন।” তোমাদের কপালের মাঝে দুটো পটলচেরা চোখ থাকলে কি হবে, তোমরা অন্ধ ভিন্ন আর কিছু নও। আর থাক ও-কথা! রমার দিকে চাহিয়া কহিলেন, “প্রশ্নের উত্তর দিলি না তো?” রমা কহিল, “আমার কিছু ধারণা হয় না, দাদু।” রায়বাহাদুর ক্ষণকাল একদৃষ্টে রমার মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া মনে মনে কহিলেন, "আহা—বেচারা মোহন ! শেষে কি না তোর হাতেই সে আপন প্রাণ দিতে বসলো রে।” রমা প্রাণপণ-শক্তিতে শক্তি সংগ্ৰহ করিয়া কহিল, “ছিঃ! আপনি ওসব কি বলছেন, পাদু?”