পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন অমনিবাস סטיא ওই জানালার নীচে উপস্থিত হই এবং সেখানে টুকরো কাগজ ছড়ান রয়েছে দেখতে পাই। তারপর আমি সেগুলি সযত্নে খুঁটে নিয়ে পকেটে রাখি, পরে অনেক কষ্টে একখানা কাগজের ওপর সাজিয়ে আঠা দিয়ে এটেছি।” পুলিস-সাহেব কহিলেন, “যদি দসু্যু আসল দলিলখানাই পেয়েছিল, তবে নকল করবার কষ্ট স্বীকার করল কেন বলুন তো?” মিঃ স্যানিয়েল চিন্তাম্বিত স্বরে কহিলেন, “খুব সম্ভবতঃ সে জানতে দিতে অনিচ্ছুক ছিল যে, দলিলখানা চুরি গেছে।” পুলিস-সাহেব কহিলেন, “তবে নকলই বা ছিড়ে রেখে গেল কেন?” । “খুব সম্ভবতঃ এই নকলে কিছু ভুল হয়েছিল, তাই অন্য নকল করে এটাকে ছিড়ে ফেলে গেছে।” মিঃ স্যানিয়েল চিন্তিত স্বরে কহিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট কহিলেন, “তা হলে ব্যাপার এই দাঁড়াচ্ছে যে, ঘোষাল খুন হবার বহু পূর্ব হতেই দস্য সকলের অজ্ঞাতসারে আগমন করেছিল এবং অরিজিনাল দলিলখানা হস্তগত করেছিল ?” অন্যান্যের অজ্ঞাতসারে হলেও মিঃ ঘোষালের অজ্ঞাতসারে যে নয়, তা’ আমি হলফ ক'রে বলতে পারি।” মিঃ স্যানিয়েল গম্ভীরমুখে কহিলেন। পুলিস-সুপার উত্তেজিত কষ্ঠে কহিলেন, “এসব আপনি কি বলছেন, মিঃ স্যানিয়েল ? মিঃ ঘোষালের জ্ঞাতসারে দসু চুরি করতে এসেছিল—এই কথাই আপনি বলতে চান?” মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “হা, স্যার। কারণ তাই ঘটেছিল। মিঃ ঘোষাল....” বাধা দিয়া পুলিস-সাহেব কহিলেন, “আপনি কি সাঙ্কেতিক দলিলের পাঠোদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন, মিঃ স্যানিয়েল ?” - মিঃ স্যানিয়েল একবার মিঃ সোমের তীব্র আগ্রহ ভরা মুখের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “না স্যার, এখন পর্যন্ত আমি সক্ষম হইনি। কখনও হব কি না তাতেও আমার সন্দেহ আছে।” AŃ “হা, স্যার। সে ছদ্মনামে, ছদ্মবেশে জয়পুরের প্রাক্তন সেক্রেটী বলে পরিচয় দিয়ে ও জাল সার্টিফেকেট দেখিয়ে এখানে চাকরি সংগ্রহ করেছিল।” মিঃ সোম পরম বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া কহিলেন, “অসম্ভব। আমি জয়পুরের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মিঃ ঘোষালের ফটো ও উচ্ছসিত প্রশংসাপত্র পেয়েছিলাম। আপনি প্রধান মন্ত্রীকেও যদি দসু্যর সহকারী বলে উপহাস করেন, তাতেও আমি আশ্চর্য হব না।” মিঃ স্যানিয়েল গম্ভীর কণ্ঠে কহিলেন, “আমি বললাম না যে, ছদ্মনামে ও ছদ্মবেশে দসু্যটা চাকরি করছিল? তা’ ছাড়া মিঃ এন ঘোষাল আজ আট মাস হ’ল কলকাতায় নিজ বাস-ভবনে নিউমোনিয়া রোগে মারা গেছেন। এই দেখুন কলকাতা পুলিসের গোপনীয় পত্র।” মিঃ স্যানিয়েল পত্ৰখানি পুলিস-সাহবের হাতে তুলিয়া দিলেন। পুলিস-সাহেব একবার মাত্র চক্ষু বুলাইয়া কহিলেন, “উত্তম! এখন বলুন আততীয় দসু্যটার নাম কী, আর এই ছদ্মবেশীটারই বা আসল পরিচয় কি ?”