পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে ՀՆ: মোহন কহিল, “আশা করি, টেলি কোথা থেকে আসছে, তা’ পড়তে পেরেছেন ? দাৰ্জিলিং থেকে আমার সহকর্মীরা তার পাঠিয়েছে! আচ্ছা, এইবার বাকিটুকু পাঠ করুন। হা, তারা লিখছে, মাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। হা হা হা—বুঝতে পারছেন তো, মাল অর্থে কাকে বোঝাচ্ছে? আপনি নিশ্চয়ই আশা করতে পারেন না যে—তারা লিখবে, ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টর স্যানিয়েলের পুত্রকে সরিয়ে ফেলেছে। তারপর আপনার পুলিস দুর্গ থেকে কি ক'রে তারা কাজ হাসিল করলে ভাবছেন? আরে ছো! ওর চেয়ে সহজ কাজ আর আছে না-কি? এখন আপনি কি বলেন, মিঃ স্যানিয়েল, অশেষ বুদ্ধিমন্ত, শক্তিশালী, ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টর?” ~, মিঃ স্যানিয়েলের সকল শক্তি যেন নিঃশেষে লয় পাইয়া গেল। তিনি দুই করতলের উপর মুখ রাখিয়া নত হইয়া বসিয়া রহিলেন। একমাত্র সস্তান, মাতৃহারা সন্তান, আত্মীয়হীন জগতে একমাত্র পরমাত্মীয় পুত্র দসুর কবলে। মিঃ স্যানিয়েলের দুই চক্ষু উপছাইয়া অশ্রু ঝরিতে লাগিল। কঠোরমনা, কর্তব্যনিষ্ঠ, প্রবীণ রাজভক্ত কর্মচারীর যে-চক্ষুতে কেহ কখনও অশ্র দেখে নাই, আজ সকল ভাসাইয়া সে চক্ষুতে অশু বহিতে লাগিল। মিঃ স্যানিয়েল অস্ফুট কণ্ঠে কহিলেন, “কেশব, কেশব—পুত্র আমার!” “ছি! নারীর মত কাদবেন না। মোহনের সঙ্গে লড়তে হ’লে এমন আঘাত সহ্য করতেই হবে। কিন্তু সত্যকার আঘাত এখনও আসেনি, মিঃ স্যানিয়েল! আপনার ওপর এখনও সব নির্ভর করছে।” - মিঃ স্যানিয়েল একইভাবে বসিয়া রহিলেন তিনি তখনও প্রকৃতিস্থ হইতে বা মন স্থির করিতে পারেন নাই ভাবিয়া মোহন কক্ষ হইতে বাহির হইয়া গেল। সঙ্গে সঙ্গে বাহিরে অপেক্ষামাণ রিভলভারধারী ভৃত্য উদ্যত রিভলভার হস্তে দ্বার মধ্যস্থলে আসিয়া দাড়াইল। (s) মোহন পুনরায় যখন মিঃ স্যানিয়েলের নিকট উপস্থিত হইল, দেখিল, তিনি গভীর মুখে বসিয়া রহিয়াছেন। তিনি যে ইতিপূর্বে ক্ৰন্দন করিয়াছিলেন, তাহার মুখের কোন স্থানেই তাহার কোন চিহ্ন নাই। মোহন হাস্যমুখে কহিল, “তারপর, মিঃ স্যানিয়েল?” “রাত্রি প্রভাতের পূর্বেই আপনার পুত্রের মৃতদেহ কলকাতার কোন এক রাস্তার ওপর পুলিস আবিষ্কার করবেন।” মোহন শান্তস্বরে কহিল। মিঃ স্যানিয়েল অন্তরে অন্তরে কম্পিত হইয়া উঠিলেন। তিনি বিশেষ রূপেই জানিতেন, মোহন কখনও মিথ্যা দৰ্প করে না। তিনি ক্ষণকাল নীরবে থাকিয়া কহিলেন, “কিন্তু তুমি যে আমার প্রবন্ধ প্রকাশিত না হ'লেই আমার পুত্রকে মুক্তি দেবে, একথায় বিশ্বাস কি করে করি?” মোহনের মুখ অপূর্ব দীপ্তিতে ভরিয়া গেল। সে কহিল, “মোহনের কথায় অবিশ্বাস করবার সাহস কারও থাকা উচিত নয়।” - “কবে আমার পুত্র মুক্তি পাবে?” মিঃ স্যানিয়েল প্রশ্ন করিলেন।